Monday, 3 November, 2025
3 November
HomeদেশSIR: মঙ্গলে অমঙ্গল! বাংলায় শুরু হল "SIR"; কেন ব্যতিক্রমী অসম?

SIR: মঙ্গলে অমঙ্গল! বাংলায় শুরু হল “SIR”; কেন ব্যতিক্রমী অসম?

কেবলমাত্র অসম রাজ্যের জন্যই নাগরিকত্ব আইনের ৬-এ ধারাটি তৈরি করা হয়েছিল।

অনেক কম খরচে ভিডিও এডিটিং, ফটো এডিটিং, ব্যানার ডিজাইনিং, ওয়েবসাইট ডিজাইনিং এবং মার্কেটিং এর সমস্ত রকম সার্ভিস পান আমাদের থেকে। আমাদের (বঙ্গবার্তার) উদ্যোগ - BB Tech Support. যোগাযোগ - +91 9836137343.

শুভজিৎ মিত্র, কলকাতাঃ

অবশেষে সব প্রতিক্ষার অবসান ঘটিয়ে,বাংলায় শুরু হচ্ছে  “স্পেশাল ইনটেনসিটিভ রিভিশন” বা “এস আই আর”।এতদিনে এই বিষয়ে মোটামুটিভাবে সকলের একটা চেনা শব্দ হয়ে গেছে।যাকে ঘিরে গোটা দেশ এমনকি আমাদের এ রাজ্যে শাসক-বিরোধী কম তরজা চলেনি।

উল্লেখযোগ্য বিষয়‌ হল,পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গেই আগামী বছর অসমেও বিধানসভা নির্বাচন। কিন্তু সেই রাজ্যে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনের (এসআইআর) ঘোষণা করল না নির্বাচন কমিশন। তারা আগেই জানিয়েছিল, বিশেষ করে আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে এমন রাজ্যগুলিতে ওই সংশোধনের কাজ প্রথমে শুরু হবে। তার পরেও কেন অসমের জন্য এসআইআর করার কথা ঘোষণা করল না কমিশন?

আরও পড়ুনঃ চন্দননগর ইতিহাসে বড় বিপর্যয়! হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল ৭৫ ফুটের বড় জগদ্ধাত্রী; জখম ২

“SIR”-এর মূল উদ্দেশ্য কী?

ভারতের জাতীয় নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে “স্পেশাল ইনটেনসিটিভ রিভিশন”-এর উদ্দেশ্য নিয়ে স্পষ্ট করে বলেছেন,”এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভোটার তালিকার মধ্যে থাকা যত মৃত ব্যক্তি কিংবা এক জায়গায় থেকে স্থানান্তরিত হয়েছেন অথচ ভোটার তালিকায় নাম আছে অথবা একাধিক জায়গায় নাম আছে,তাদের নাম বাদ দিয়ে একটি স্বচ্ছ ভোটার তালিকার প্রস্তুত করা।

শাসক-বিরোধী তরজা

ইতিমধ্যেই প্রথম পর্যায়ের শ্পেশাল ইনটেনসিটিভ রিভিশনের কাজ হয়ে গিয়েছে বিহারে।এবার পশ্চিমবঙ্গ সহ ১১টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে এই প্রক্রিয়ার কাজ আজ থেকে শুরু হল।

এরাজ্যের শাসক দলের পক্ষ থেকে বারবার দাবী করা হচ্ছে যে,”এস আই আর-এর কেন্দ্রীয় সরকার আসলে এন আর সি করার চক্রান্ত চালাচ্ছে।”

পাল্টা যুক্তি দিয়ে রাজ্যে সরকারকে কোণঠাসা করতে চাইছে কেন্দ্রের শাসক তথা রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি।বিরোধী দল দাবী করছে যে,”এস আই আর একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে যা ভারতের জাতীয় অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও নাগরিক স্বার্থে জড়িত।তারা আরো দাবী করছেন,সকল বৈধ ভোটারদের চিন্তা করার কোনো কারণ নেই।”

আর সেই প্রসঙ্গ টেনেই শাসক তৃণমূলের একাধিক নেতা ও মুখপাত্রদের বক্তব্য “যদি একজন বৈধ ভোটারদের নাম বাদ যায়,তাহলে আইনি পথে লড়াই হবে।একজন ভারতীয়র নাম বাদ যেতে দেবেন না,তারা।”

আরও পড়ুনঃ স্বভাব ও চরিত্র বদল হবেনা! ফের সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন পাকিস্তানের, লিপা ভ্যালিতে চলল গুলি; পালটা জবাব ভারতীয় সেনাবাহিনীর

কেন বাদ অসম? জানাল কমিশন

এ বিষয়ে মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের ব্যাখ্যা, তিনি জানান, ভারতীয় নাগরিকত্ব আইনে অসম রাজ্যের জন্য জাতীয় নাগরিকত্ব আইনের একটি আলাদা ধারা (৬-এ) রয়েছে। এ ছাড়াও আরও একটি কারণের কথা জানান মুখ্য নির্বাচন কমিশনার। তিনি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্বাবধানে অসমে নাগরিকত্বের যাচাইকরণ প্রায় শেষ পর্যায়ে। আর গোটা দেশের জন্য এসআইআর সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি যেহেতু ২৪ জুন প্রকাশ করা হয়েছে, সেই কারণে অসমে তা প্রযোজ্য নয়।’’ জ্ঞানেশ জানান, অসমের জন্য আলাদা বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে। তবে কবে সেই বিজ্ঞপ্তি জারি, কবে অসমে এসআইআর হবে— তা স্পষ্ট করেনি কমিশন।

প্রসঙ্গত, কেবলমাত্র অসম রাজ্যের জন্যই নাগরিকত্ব আইনের ৬-এ ধারাটি তৈরি করা হয়েছিল। অসমে অনুপ্রবেশের বিরুদ্ধে রক্তক্ষয়ী আন্দোলনের পরে ১৯৮৫-তে ভারত সরকার এবং আন্দোলনকারীদের মধ্যে হওয়া ‘অসম চুক্তি’-র অঙ্গ হিসাবে নাগরিকত্ব আইনের ৬-এ ধারা তৈরি করা হয়েছিল। ওই ধারা অনুযায়ী ১৯৬৬-র ১ জানুয়ারি থেকে ১৯৭১-এর ২৫ মার্চ পর্যন্ত অসমে অনুপ্রবেশ করা বাংলাদেশিদের নাগরিকত্বের সুবিধা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তার পরে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে চলে আসা ব্যক্তিদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে না। গত অক্টোবরে সুপ্রিম কোর্ট একটি মামলায় ৬-এ ধারার বৈধতা স্বীকার করে নিয়েছে। তা ছাড়া, সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্বাবধানেই হচ্ছে অসমে জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি)-র কাজ।

কমিশনের ঘোষণার পরেই সক্রিয়তা বঙ্গে

সিইসি জ্ঞানেশের এসআইআর-নির্ঘণ্ট ঘোষণার পরেই সোমবার বিকেল থেকে তৎপরতা শুরু হল পশ্চিমঙ্গের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (সিইসি) মনোজকুমার আগরওয়ালের দফতরে। মঙ্গলবার থেকেই শুরু হচ্ছে এসআইআর-এর কাজ। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টায় সাংবাদিক বৈঠক ডেকেছেন রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক। তার আগে বিকেল ৪টেয় সর্বদল বৈঠক ডেকেছেন তিনি।

সোমবার রাত ১২টা থেকে ভোটার তালিকা সংক্রান্ত সব কাজ বন্ধ করা হয়েছে। নতুন নাম তোলা, সংশোধন, পরিবর্তন করা যাবে না। পরের ধাপে স্বীকৃত রাজনৈতিক দলগুলির কাছে পুরো বিষয়টি ব্যাখ্যা করবেন সিইসি। এ রাজ্যে রাজনৈতিক দলগুলির বুথ লেভেল এজেন্ট ( বিএলএ) ২০ হাজার রয়েছে। ৫ হাজারের বেশি রয়েছে তৃণমূলের। বিজেপির রয়েছে ৭ হাজারের বেশি। কমিশন সূত্রের খবর, এনুমারেশন ফর্ম বিলি ও যাচাই প্রক্রিয়ার সময় বিএলও-দের সঙ্গে যেতে পারবেন বিএলএ-রা। বিএলএ-র কাছেও ফর্ম জমা দেওয়া যাবে। এক জন ৫০টি ফর্ম জমা দিতে পারবেন।

এই মুহূর্তে

আরও পড়ুন