Friday, 1 August, 2025
1 August, 25
Homeগল্প"বিসর্জন" - সৌমেন মুখোপাধ্যায়

“বিসর্জন” – সৌমেন মুখোপাধ্যায়

অনেক কম খরচে ভিডিও এডিটিং, ফটো এডিটিং, ব্যানার ডিজাইনিং, ওয়েবসাইট ডিজাইনিং এবং মার্কেটিং এর সমস্ত রকম সার্ভিস পান আমাদের থেকে। আমাদের (বঙ্গবার্তার) উদ্যোগ - BB Tech Support. যোগাযোগ - +91 9836137343.

দিনগুলো অনিল আর শিউলীর বেশ আনন্দে কাটতে থাকে। এতবড় বাংলো, গাড়ী, বাগান সব যেন আজ তাদের। ব্যবসার কাজে মাঝে মাঝে দেশমুখবাবু অনিলকে সাথে করে নেন তার ফলে তিনি অনেক সাহায্য পান।
একদিন অফিস থেকে ফিরে অনিল শিউলীকে বলে, “না, এমনি করে আর বাঁচা যায় না।”
শিউলী বলে, “কেন ? কি এমন হলো যে বাঁচা যায় না ?”
অনিল শিউলীকে কথাটা অন্যভাবে বলতে চায় তার জীবনে শিউলী কিরকম জায়গা জুড়ে আছে কিন্তু বলার ধরনটা একটু অন্যভাবে বলতে গিয়ে পারে না। তাই কোনরকমভাবে বলে, “অফিস থেকে আসার পর তোমাকে আমি মন ভরে দেখবো তুমি কাছে আসবে আমার সেবা করবে তা কোথায়। ”
“আমি তোমার সেবা করি না? কি বলতে চাও?”
“না মেমসাহেব, আমি বলতে চাইছিলাম আমাদের বিয়েটা যদি……….”
শিউলী অনিলের ইঙ্গিতটা বুঝতে পেরে বলে, “দাঁড়াও দেখাচ্ছি।” বলে কোমরে কাপড় বেঁধে অনিলের দিকে যেতেই অনিল আদরের সুরে বলে, “ক্ষমা করো মেমসাহেব, অপরাধ নিও না।”
অনিলের কথা শুনে শিউলীর ঠোঁটের কোণে হাসির ফোয়ারা বহে যেতে থাকে। এতদিন পর তারা যেন প্রাণ খুলে হাসছে। শিউলীকে হাসতে দেখে অনিল তাকে জড়িয়ে ধরে বলে, “তোমার হাসি তোমার কাছ থেকে কেউ যেন চুরি করে নিয়েছিল আজ আমি তা ফিরিয়ে নিয়ে এলাম। তোমাকে হাসলে কত সুন্দর লাগে। ”
দুজনে দুজনার চোখের দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে থাকে।
কিছুক্ষণপর সে রান্নাঘরের দিকে চলে যায়।
খানিকক্ষণ পর শিউলী অনিলের সামনে এসে বলে, “চলো, খাবার তৈরী আছে, খাবে চলো।”
“খাবার তৈরী ! তাহলে দেশমুখজীর জন্য একটু অপেক্ষা করা যাক।”
“ঠিক আছে।”
কথাটা শেষ করার পর অনেকগুলো ভারী বুটের শব্দ হলঘর ভরিয়ে দেয়।
তারা দেখে দেশমুখজীর পিছন পিছন আইনের পোশাকপরা বন্দুকধারী কয়েকজন লোক বাড়ীতে প্রবেশ করে। তাদের মধ্যে একজন ভারী গলায় দেশমুখজীকে বলে, “যা করবার বলবার তাড়াতাড়ী করুন, আমাদের হাতে সময় নেই। ”
“আমার বেশী সময় লাগবে না ইন্সপেক্টরবাবু।” বলে অনিলকে উদ্দেশ্যে করে তারপর বলে, “অনিলবাবু, আমার অবর্তমানে আমার সমস্ত বিষয় আশয় ব্যবসা সবকিছুরই মালিক আপনি। আমার স্বপ্নের বাংলো আর পরিশ্রমের ব্যবসা জলে যেন ভেসে না যায় সেইদিকে একটু দেখবেন। আসি।”
দেশমুখজীর কথা শেষ হবার পর আইনের পোশাকপরা লোকেরা তাকে নিয়ে গিয়ে তাদের সরকারি গাড়ীতে তুলে দেয়। দেশমুখজীর চলে যাওয়ার রাস্তার দিকে তাকিয়ে অনিল আজ নিজেকে ঠিক রাখতে পারে না। ছোট শিশুদের মতো আজ তার চোখগুলো বেয়ে জল গাল বেয়ে পড়তে থাকে। আর শিউলী অনিলের বুকে মাথা রেখে কাঁদতে থাকে।

এই মুহূর্তে

আরও পড়ুন