আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রে (আইএসএস) শুরু হয়েছে প্রস্তুতি। সোমবার সেখান থেকে পৃথিবীর উদ্দেশে রওনা দেবেন শুভাংশু শুক্ল এবং তাঁর তিন সঙ্গী। ড্রাগন মহাকাশযানের আনডক প্রক্রিয়া শুরু হবে। সব ঠিকঠাক চললে মঙ্গলবার ক্যালিফোর্নিয়া উপকূলে নামবে সেই মহাকাশযান। তার পরে সাত দিন নিবিড় পর্যবেক্ষণে থাকবেন মহাকাশচারীরা। লখনউয়ের শুভাংশুর পৃথিবীতে ফেরার সময় গুনছেন মা আশা শুক্ল। জানিয়েছেন, ফিরে এসে মায়ের হাতে রান্না করা খাবার খেতে চেয়েছেন পুত্র।
আরও পড়ুনঃ ‘হাঁড়িভাঙা’ কৌশল! আম ইউনূস মোদীকে পাঠাচ্ছেন হাজার কেজি আম!
অ্যাক্সিয়ম-৪ অভিযানে গত ২৬ জুন আইএসএস-এ পা রাখেন শুভাংশু এবং তাঁর তিন সঙ্গী। নাসা একটি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, সোমবার বিকেল ৪টে ৩৫ মিনিটে (ভারতীয় সময়) আইএসএস থেকে রওনা হবেন চার মহাকাশচারী। ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো জানিয়েছে, আনডক প্রক্রিয়ার পরে মঙ্গলবার বিকেল ৩টের (ভারতীয় সময়) ক্যালিফোর্নিয়া উপকূলে পৌঁছোবে ইলন মাস্কের সংস্থা স্পেস এক্সের তৈরি ড্রাগন মহাকাশযান।
ইসরোর তরফে বলা হয়েছে, ‘‘অবতরণ (স্প্ল্যাশডাউন)-এর পরে শুভাংশুকে থাকতে হবে নিবিড় পর্যবেক্ষণে। ফ্লাইট সার্জেনের তত্ত্বাবধানে সাত দিন চলবে সেই প্রক্রিয়া, যাতে পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারেন তাঁরা।’’ ইসরোর তরফে জানানো হয়েছে, যে ক’দিন শুভাংশু আইএসএস-এ রয়েছেন, সেই দিনগুলিতে তাঁর শরীর এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উপর নজর রেখেছেন ইসরোর ফ্লাইট সার্জেন। ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে তাঁকে পরামর্শ দিয়েছেন। এ বার পৃথিবীতে ফেরার পরে সেই সার্জেনের অধীনেই কিছু দিন থাকবেন শুভাংশু। পৃথিবীর পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করবেন।
আরও পড়ুনঃ নিম্নচাপের জন্ম! ছ’টি জেলায় ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস
শুভাংশুর আইএসএস-যাত্রার জন্য ইসরো প্রায় ৫৫০ কোটি টাকা খরচ করেছে। ২০২৭ সালে মহাকাশে মানুষ পাঠাবে ভারত। সেই গগনযান প্রকল্পের পরিকল্পনা গ্রহণ করতেই শুভাংশুকে আইএসএস-এ পাঠানো হয়েছে। প্রসঙ্গত, রাকেশ শর্মার প্রায় চার দশক পরে কোনও ভারতীয় মহাকাশে গেলেন। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থার এই অভিযানে শুভাংশু ছাড়াও আরও তিন নভশ্চর রয়েছেন— ক্রু-কমান্ডার পেগি হুইটসন, মিশন বিশেষজ্ঞ স্লাওস উজানস্কি-উইজ়নিউস্কি এবং টিবর কাপু। নাসার অ্যাক্সিয়ম-৪ অভিযানের গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভাংশু। আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা জানিয়েছে, মঙ্গলবার এই চার মহাকাশচারীর সঙ্গে ড্রাগন মহাকাশযানে পৃথিবীতে ফিরবে প্রায় ৫৮০ পাউন্ড (প্রায় ২৬৩ কেজি) মালপত্র। তার মধ্যে রয়েছে যন্ত্রপাতি এবং আইএসএস-এ বসে গবেষণার নমুনা। সেখানে বসে প্রায় ৬০টি গবেষণা করেছেন শুভাংশুরা। সেই সব জিনিসপত্র রবিবারই গোছগাছ করতে শুরু করেছেন মহাকাশচারীরা।
লখনউয়ে বসে পুত্র শুভাংশুর মহাকাশ অভিযান দেখেছেন মা আশা। তিনি এখন পুত্রের ফেরার দিন গুনছেন। একটি সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘‘প্রার্থনা করছি, ছেলে যাতে সফল অভিযান করে ফিরে আসতে পারে। ও ফিরলে দারুণ ভাবে অভ্যর্থনা জানাব ওকে।’’ গত কয়েক বছর বিদেশে থাকার কারণে মায়ের হাতের রান্না খাওয়া হয়নি শুভাংশুর। তাই মায়ের কাছে আবদার করেছেন, এ বার দেশে ফিরে তাঁর হাতের রান্না খাবেন।