সাম্যের বার্তা দেয় ভারতের সংবিধান। সংবিধানে উঁচুনিচু ভেদাভেদ না থাকলেও বাস্তবে তার প্রতিফলন কতটা? নাগরিক মহল থেকে রাজনৈতিক মহল, বারবার ঘুরে ফিরে এসেছে প্রশ্ন। এবার যেন চেনা সেই ছকই ভেঙে দিল জলপাইগুড়ি বিল পাড়া রটন্তী ক্লাব ও পাঠাগার। পুজোর উদ্বোধনে যখন দিকে দিকে বসছে চাঁদের হাট, নামজাদা সব তারকাদের দেখতে যেখানে নামছে মানুষের ঢল সেখানে এক রিক্সা চালকের হাতে উদ্বোধন হল তাঁদের পুজোর। ব্যতিক্রমী এই উদ্যোগকে কুর্নিশ জানাল রাজনৈতিক দলের নেতা থেকে শুরু করে শহরের বিশিষ্টজনেরা।
আরও পড়ুনঃ কোচবিহার প্রিয়গঞ্জ কলোনির যৌনকর্মীদের দুর্গাপুজো আড়ম্বর নয়, পুজোর নিষ্ঠাই যৌনকর্মীদের সম্পদ
এই ক্লাবের পুজো এবার পা দিয়েছে ২৬তম বর্ষে। সেই পুজোরই উদ্বোধন করলেন বুলন কামতি নামে ৮০ বছরের এক ভ্যান রিক্সা চালক। জ্বাললেন প্রদীপ। পাশাপাশি মঞ্চের মধ্যমণি করে তাঁকে সংবর্ধনাও দেওয়া হয়। এই বিরল সম্মান পেয়ে কার্যত বাকরুদ্ধ ওই রিক্সা চালক।
ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নব্যেন্দু মৌলিক বলেন, “আমাদের সংবিধানে উঁচুনিচু ভেদাভেদ নেই। কিন্তু তবুও খেটে খাওয়া মেহনতী মানুষ আজও অবহেলিত। তাই সংবিধানকে সম্মান জানাতে আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রয়াস। পাড়ার সকলকে নিয়ে এই কাজ করতে পেরে আমরা গর্বিত।”
আরও পড়ুনঃ শ্যামনগরে ভয়াবহ কাণ্ড! সজোরে ধাক্কা মারল ট্রেন, ছিটকে গিয়ে পড়ল দেহ
বিশিষ্ট আইনজীবী তথা বিজেপির জেলা কমিটির সদস্য সৌজিত সিংহ বলেন, “যাঁদের বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতির অভিযোগ থাকে তাঁদের অনেককে দিয়েই ক্লাবগুলি পুজোর উদ্বোধন করায়। এটাই এখন দস্তুর হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু সেই ছক ভেঙে খেটে খাওয়া মেহনতী মানুষ একজন রিক্সা চালককে দিয়ে বিল পাড়া রটন্তী ক্লাব যেভাবে তাদের পুজো উদ্বোধন করলো তা দেখে আমি অভিভূত।”
তৃণমূল নেতা তথা জলপাইগুড়ি অরবিন্দ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রাজেশ মণ্ডল বলেন, “সত্যি এক ব্যতিক্রমী পুজো উদ্বোধন দেখার সৌভাগ্য হল। আমি নিজেও সেখানে ছিলাম। ক্লাবের এই উদ্যোগ কে সাধুবাদ জানাই।”