
কুশল দাসগুপ্ত, (শিলিগুড়ি)
স্বাদে-গন্ধে ডুয়ার্সের বাজারে কদর বেড়েছে কালিম্পংয়ের পাহাড়ি গ্রাম পেমলিংয়ের কমলালেবুর । ওদলাবাড়ি, বাগ্রাকোট, গরুবাথান, মালবাজারে তো বটেই শিলিগুড়ির বাজারেও কদর পাচ্ছে এই কমলা। যেমন মিষ্টি, তেমন রসালো। ১০ থেকে ১২ টাকা দরের পেমলিংয়ের একেকটি কমলালেবু। তবে কমলাচাষিরা প্রত্যন্ত গ্রামের হওয়ায় কমলা চাষের সব সুযোগসুবিধা তেমনভাবে পাচ্ছেন না। তাই তাঁরা সরকারি সাহায্যের আর্জি জানিয়েছেন।
সিকিমগামী নতুন নির্মীয়মাণ জাতীয় সড়ক ৭১৭এ ধরে চুইখিম পেরিয়ে পাহাড়ি গ্রাম পেমলিং । পাবরিংটার গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত এই গ্রাম। কমলালেবু নিয়ে ওদলাবাড়ির রবিবারের সাপ্তাহিক হাটে এসেছিলেন পেমলিংয়ের কমলাচাষি সামসের ছেত্রী, ধীরাজ ছেত্রী। সামসের বলেন, ‘পেমলিংয়ের মতো ছোট গ্রামে ১৫টি কমলা বাগান রয়েছে। সরকারি সহযোগিতা এবং পরামর্শ পেলে আমাদের গ্রামেও কমলালেবু চাষ সাফল্যের মুখ দেখবে।’ সামসেরের আক্ষেপ, ‘সুস্বাদু হলেও এ বছর ফলন অনেকটাই কম হয়েছে। পুরোপুরি অর্গ্যানিক পদ্ধতি মেনে কমলা চাষ করলেও এবছর রোগপোকার আক্রমণে প্রচুর কমলালেবু ঝরে পড়েছে।’
পেমলিংয়ের কমলাচাষিদের অভাব-অভিযোগ নিয়ে কালিম্পং জেলার হর্টিকালচারাল আধিকারিক সঞ্জয় দত্ত বলেন, ‘জেলাজুড়েই উন্নতমানের কমলা চাষের তাগিদে কমলাচাষিদের সঙ্গে নিয়মিত তথ্য আদানপ্রদান করা হয়। সম্ভবত গাছের সঠিক পরিচর্যায় কোথাও কোনও খামতি থেকে গিয়েছে পেমলিংয়ে।’
সঞ্জয় জানান, কালিম্পং পাহাড়ে কমলা চাষের জন্য জরুরি মাইক্রো নিউট্রিয়েন্ট ‘বোরন’-এর ঘাটতি রয়েছে। যে কারণে ফল পরিপূর্ণ হলেও ‘ফ্রুট ড্রপ’ হয়ে চলেছে। এসবের হাত থেকে রেহাই পেতে হলে গাছের সঠিক পরিচর্যা অত্যন্ত জরুরি। পোকা যাতে কোনওভাবেই কমলালেবুর খোসায় ডিম না পাড়ে সেদিকে সতর্ক থাকা উচিত। নিয়মিত কীটনাশক স্প্রে করার কথাও কমলাচাষিদের জানিয়েছেন সঞ্জয়। নিয়ম মেনে কমলা চাষ করলে অচিরেই জেলার সেরা ‘তোদে-তাংতা’ কমলালেবুর সঙ্গে পাল্লা দিতে পারবে পেমলিংয়ের কমলালেবু বলে আশাবাদী সঞ্জয়।