
“বিসর্জন “
সৌমেন মুখোপাধ্যায়

“শুনুন, শুনুন দেশমুখবাবু। একটু শান্ত হন। যা হবার তাতো হয়েছে। যিনি গেছেন তাকে তো আর ফেরানো যাবে না। তাই বলছি একটু শান্ত হন।”
অনিলের কথায় একটু শান্ত হয়ে দেশমুখবাবু বলে, “হাঁ ঠিক বলেছেন। যিনি গেছে তাকে আর ফেরানো যাবে না।” তারপর চোখের জল মুছতে থাকে।
“তারপর কি হলো ?” অনিল জিজ্ঞেস করে।
“তারপর “, দেশমুখবাবু বলতে থাকে, “আমি ধীরে ধীরে ধনী হতে থাকি। আজ আমার কাছে অনেক টাকা – পয়সা, জায়গা আছে কিন্তু আমার মনের প্রাণের মানুষটি নেই । তাইতো আমার সর্বদা চিন্তা।”
“আপনার কোন সন্তান নেই?” অনিল আবার জিজ্ঞেস করে।
“না”।
“আপনি তারপর বিয়ে করেননি?”
অনিলের প্রশ্নে দেশমুখবাবু মাথা নেড়ে উত্তর দেয় ‘না’। সত্যিই আজকাল এমন ভদ্রলোক দেখা বিরল। ভালোবাসার মূল্য আর স্মৃতিকে আঁকড়ে যে এতোগুলো বছর কাটিয়ে দেয়।
“জানেন অনিলবাবু, আমি যে ঘরে থাকি সেই ঘরটা শুধু হাঁ হাঁ করে, তার স্মৃতি সারা বাড়ীময় হয়ে ঘুরে বেড়ায়। তাই বলছিলাম, আপনারা যদি আমার বাড়ীতে গিয়ে একটু পদধূলি দিয়ে থাকতেন তবে খুবই ভালো হতো।”
দেশমুখবাবুর হৃদয়ের গভীর ব্যথার কথা অনুভব করে অনিল তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য বলে, “ঠিক আছে, আপনার কথা মতো আমি আপনার বাড়ীতে গিয়ে উঠবো।”
অনিল শিউলীকে বলে,”ঠিক করলাম তো?”
শিউলী বলে, “হাঁ, উনি অত করে বললেন উনার সম্মান রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদেরও। “