কুশল দাশগুপ্ত, শিলিগুড়ি:
কাঁটাতারের ওপারে তাঁর নাম শান্ত ভৌমিক। পাসপোর্ট, ভিসাতেও তাই। কিন্তু সীমান্ত পেরিয়ে এপারে এসে নাম ভাঁড়িয়ে শান্ত হয়ে গিয়েছে শান ভৌমিক। কীভাবে শান্ত থেকে শান হলেন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশি ছাত্র তা নিয়ে দিন-দিন রহস্য আরও বাড়ছে। তাই ওই ছাত্র সম্পর্কে তদন্ত চেয়ে এবার পুলিশ কমিশনারকে চিঠি দিল উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। শুক্রবারই বিশ্ববিদ্যালয়ের জয়েন্ট রেজিস্ট্রার স্বপনকুমার রক্ষিত কমিশনারকে চিঠি দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: গড়াচ্ছে না চাকা, দাঁড়িয়ে ৫০০টি বাস! নাজেহাল জনজীবন
শিলিগুড়িতে এসে নিজের নামে বাইক কিনেছেন শান। সামাজিক মাধ্যমে সেই বাইক নিয়ে একাধিক পোস্টও করেছেন তিনি। শিলিগুড়ি আঞ্চলিক পরিবহণ দপ্তরের অধীনে বাইকটির রেজিস্ট্রেশন হয়েছে। মোটরযান আইন অনুসারে কোনও বাংলাদেশি নাগরিক ভারতে এসে বাইক কিনতে পারেন না। তাহলে কীভাবে কিনলেন? পরিবহণ দপ্তরের কর্তাদের বক্তব্য, ভোটার, আধার/প্যান কার্ড জমা দিয়েই বাইকের রেজিস্ট্রেশন হয়েছে। তাই, বাংলাদেশের শান্ত যে ভারতে শান হিসাবে অবৈধ উপায়ে ভোটার ও আধার কার্ড তৈরি নিতে পেরেছে তার প্রমাণও আছে। এখন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কি পদক্ষেপ নেন এদিকেই তাকিয়ে আছেন অনেকে।
আরও পড়ুন: বিক্ষোভের মুখে দমকলমন্ত্রী সুজিত! কাউন্সিলর বলছেন ৪০০, ব্যবসায়ীদের দাবি ১৩০০ দোকান পুড়েছে
যে বাংলাদেশীকে নিয়ে তোলপাড় গোটা উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় সেই শান ভৌমিক থাকতেন মেয়রের ওয়ার্ডে। মেয়রের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড আপাতত তালা চাবি দিয়ে বন্ধ রাখা হয়েছে ওই ফ্ল্যাট। কিভাবে এত তাড়াতাড়ি কাগজপত্র তৈরি হয়ে গেল এটা জানতে পেরে অবাক হয়ে গেছে সবাই। যেখানে স্থানীয়দের সমস্যা তৈরি হয় সেখানে একজন বহিরাগত কিভাবে এত তাড়াতাড়ি সবকিছু তৈরি করে নিয়ে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের মত জায়গায় কাজ শুরু করে দিতে পারে এটা ভেবেই আশ্চর্য হচ্ছেন সবাই। তার আধার কার্ড তৈরি, প্যান কার্ড তৈরি। দ্রুত সে সবকিছু পেয়ে যাওয়ায় নিশ্চিত সবাই কোন শক্তি দ্বারা সে এত কিছু করতে পেরেছে। কিন্তু কিভাবে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় মত জায়গায় সে এত তাড়াতাড়ি কাজ জোগাড় করে ফেলল সেটা ভেবেই আশ্চর্য হচ্ছেন সবাই। যদিও এ নিয়ে শিলিগুড়িতে তৃণমূলের তরফ থেকে এখনো কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি। জানা গেছে শান ভৌমিক আপাতত শিলিগুড়িতে নেই, কোন ব্যক্তিগত কাজে বাইরে গেছে। তার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে ফোন বন্ধ দেখাচ্ছে। তার ঘনিষ্ঠ মহল থেকে জানা গেছে , সে গত কয়েকদিন ধরে একেবারে চুপচাপ থাকত। সম্ভবত বিপদ সে বুঝতে পেরে গিয়েছিলো। তার কাগজপত্র এত দ্রুত কিভাবে তৈরি হয়েছিল সেটা ভেবেই অবাক হচ্ছে স্থানীয় মানুষ।
