Saturday, 5 July, 2025
5 July, 2025
HomeকলকাতাKasba Case: কলেজের সামনে বাম-বিজেপি হাতাহাতি; সিবিআই তদন্ত চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা

Kasba Case: কলেজের সামনে বাম-বিজেপি হাতাহাতি; সিবিআই তদন্ত চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা

কলেজের সামনে হাতাহাতিতে জড়ায় বাম এবং বিজেপি! শুধু কলেজ এবং থানা নয়, ধর্মতলা, বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিটেও ছড়ায় বিক্ষোভ।

অনেক কম খরচে ভিডিও এডিটিং, ফটো এডিটিং, ব্যানার ডিজাইনিং, ওয়েবসাইট ডিজাইনিং এবং মার্কেটিং এর সমস্ত রকম সার্ভিস পান আমাদের থেকে। আমাদের (বঙ্গবার্তার) উদ্যোগ - BB Tech Support. যোগাযোগ - +91 9836137343.

কসবার আইন কলেজে ধর্ষণকাণ্ড গড়িয়েছে আদালত পর্যন্ত। শুধু কলকাতা হাই কোর্টে নয়, সুপ্রিম কোর্টেও মামলা দায়ের হয়েছে। সিবিআই তদন্তের আবেদন জানিয়ে শীর্ষ আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। সিবিআই তদন্তের দাবি উঠলেও কলকাতা পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল জোরকদমে তদন্ত চালাচ্ছে। অভিযুক্তদের ‘কল রেকর্ড’ থেকে শুরু করে ঘটনার সময় মূল অভিযুক্তের পরনের পোশাকও সংগ্রহ করছেন তদন্তকারীরা। অন্য দিকে, দিনভর কসবা থানা এবং কলেজের সামনে প্রতিবাদের ছবিও প্রকাশ্যে আসে। কলেজের সামনে হাতাহাতিতে জড়ায় বাম এবং বিজেপি! শুধু কলেজ এবং থানা নয়, ধর্মতলা, বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিটেও ছড়ায় বিক্ষোভ, যার জেরে উত্তর এবং মধ্য কলকাতাতেও একটা সময় যানজট তৈরি হয়।

সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজে গণধর্ষণ কাণ্ড নিয়ে আবেদন জমা পড়েছে সুপ্রিম কোর্টে। শীর্ষ আদালতের নজরদারিতে সিবিআই তদন্তের আর্জি জানিয়েছেন সত্যম সিংহ নামে এক আইনজীবী। শুধু তা-ই নয়, ‘নির্যাতিতা’ এবং তাঁর পরিবারের নিরাপত্তার বিষয়টিও আদালতের নজরে আনা হয়েছে। পাশাপাশি, ওই তরুণীর জন্য আর্থিক সাহায্যের আবেদনও জানানো হয়েছে শীর্ষ আদালতে। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, সোমবার এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। মামলা করার অনুমতি দিয়েছে শীর্ষ আদালত।

কসবার ঘটনা নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টেও বেশ কিছু জনস্বার্থ মামলা দায়ের করার আবেদন জমা পড়েছে। দ্রুত শুনানির আবেদন জানিয়েছেন মামলাকারীরা। হাই কোর্টের বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি স্মিতা দাসের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, দৃষ্টি আকর্ষণের প্রয়োজন নেই। ওই বিষয়ে সকল মামলা দায়ের করে অপর পক্ষকে নোটিস দেওয়া হোক। তার পরে শুনানি চেয়ে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করুন আইনজীবীরা। আগামী বৃহস্পতিবার এই মামলাগুলির একসঙ্গে শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে।

আরও পড়ুন: মমতার দাবিই কি মেনে নিল নির্বাচন কমিশন! ১৯৮৭ সালের ১ জুলাইয়ের পরে জন্মানো কাউকে বাড়তি নথি দিতে হবে না

সোমবার প্রথমে লালবাজার এবং পরে সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজে যায় বিজেপির ‘তথ্যানুসন্ধানী দল’। সেই দলে ছিলেন মুম্বইয়ের প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সত্যপাল সিংহ, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মীনাক্ষী লেখী, ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী, সাংসদ বিপ্লব দেব এবং মননকুমার মিশ্র। সেই দলকে নিয়ে প্রথমে লালবাজারে যান বিজেপির রাজ্য সভাপতি, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। সেখানে কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মার সঙ্গে দেখা করেন তাঁরা। প্রায় ৪৫ মিনিট লালবাজারে ছিল ওই দলটি। কলেজের নিরাপত্তা, তদন্ত থেকে শুরু করে বহিরাগতদের আনাগোনা নিয়ে একাধিক বিষয়ে আলোচনা হয়।

লালবাজার থেকে বিজেপির ‘তথ্যানুসন্ধানী দল’ পৌঁছোয় কসবার কলেজে। সেখানে প্রবেশের আগে প্রথমে তাদের পুলিশি বাধার মুখে পড়তে হয়। পরে ওই দলের কয়েক জনকে কলেজের ভেতরে যাওয়ার অনুমতি দেয় পুলিশ। সেই সময় কলেজের সামনে জড়ো হয়েছিলেন বিজেপির যুব সংগঠনের কর্মীরা। শুধু তাঁরা নন, কলেজের সামনে জমায়েত করেছিলেন বেশ কয়েকটি বামপন্থী সংগঠনের কর্মীরাও। বিজেপির ‘তথ্যানুসন্ধানী দল’-এর কয়েক জনকে কলেজের ভেতরে প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার পরেই পুলিশের সঙ্গে বচসা বাধে বাম কর্মীদের। কেন তাঁদের আটকাচ্ছে পুলিশ, সেই প্রশ্ন তুলে স্লোগান-বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। বিজেপি কর্মীরাও পাল্টা স্লোগান শুরু হওয়ায় পরিস্থিতি ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পুলিশের সঙ্গে বচসার মধ্যেই বাম এবং বিজেপি কর্মীরা নিজেদের মধ্যে হাতাহাতিতে জড়ায়। পুলিশের হস্তক্ষেপে শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

সোমবার সকালে আইনের ছাত্রছাত্রী এবং প্রাক্তনীদের বিক্ষোভ মিছিল হয় কসবায়। কলেজের বর্তমান ছাত্রছাত্রীরা বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করেছিলেন। দাবি একটাই— ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় অপরাধীদের অবিলম্বে কঠোর শাস্তি দিতে হবে। নিশ্চিত করতে হবে নিরাপত্তা। কসবা থানা থেকে সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজ পর্যন্ত হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে মিছিল করেন তাঁরা।

আইনজীবী এবং আইনের পড়ুয়ারা ছাড়াও সোমবার পথে নেমেছিল নাগরিক সমাজ। ধর্মতলা, বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিটে জমায়েত করেন প্রতিবাদীরা। তাঁদের দাবি, দুষ্কৃতীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। জমায়েতের কারণে সোমবার শহরের বিভিন্ন জায়গায় মূলত উত্তর এবং মধ্য কলকাতায় যানজট তৈরি হয়।

আরও পড়ুন: ফের নাবালিকা ধর্ষণ! অভিযুক্ত এলাকারই টোটো চালক

গত বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে রাত ১০টা ৫০ মিনিট— প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা, এই সময়ের মধ্যেই ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে কলেজ ক্যাম্পাসের ভিতর। পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগপত্রে তেমনটাই জানিয়েছেন কসবার সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজের ‘নির্যাতিতা’। পুলিশ ইতিমধ্যেই ওই দিনের সাড়ে সাত ঘণ্টার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেছে। আপাতত তদন্তকারীদের নজর তিন অভিযুক্তের ফোন কলের নথিতে। ঘটনার আগে এবং পরে তিন জনের ফোন থেকে কার কার কাছে ফোন গিয়েছে, কত ক্ষণ কথা হয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হবে বলেই পুলিশ সূত্রে খবর।

শুধু ‘কল রেকর্ড’ নয়, ধর্ষণকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত ‘এম’-এর পোশাকও সংগ্রহ করেছে তদন্তকারী দল। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, ঘটনার সময় ‘এম’-এর পরনে ছিল লাল কুর্তা এবং খয়েরি ট্রাউজার্স। রবিবার তাঁর বাড়ি থেকেই সেগুলি সংগ্রহ করেছে পুলিশ। ওই পোশাক ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হচ্ছে। তদন্তে এই পোশাক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে বলে মনে করছে সিট।

ঘটনার ছ’দিনের মাথায় কড়া পদক্ষেপ করল সরকার। সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজকে চিঠি দিল উচ্চশিক্ষা দফতর। চিঠিতে অস্থায়ী কর্মীকে বহিষ্কার, মূল অভিযুক্ত ‘এম’-কে বহিষ্কার এবং বাকি দুই পড়ুয়াকে বরখাস্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও বহিরাগতদের প্রবেশও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, কলেজের নিরাপত্তার দায়িত্বে যে সংস্থা ছিল, তাদেরও শোকজ় করা হয়েছে। কেন ওই সংস্থাকে ‘ব্ল্যাকলিস্টেড’ করা হবে না তাদের কাজের গাফিলতির জন্য তার জবাব দিতে হবে। এ ছাড়াও, কলেজে কলেজে যে বিশাখা কমিটি বা ‘ইন্টারনাল কমপ্লেন্ট’ কমিটি রয়েছে তাদের কলেজে বৈঠক ডাকতে হবে। কলেজের সময়ের পর ক্যাম্পাস ফাঁকা করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে উচ্চশিক্ষা দফতরের থেকে। পাশাপাশি, ওই কলেজের মধ্যে আরও সিসিটিভি প্রয়োজন কি না তা-ও খতিয়ে দেখতে হবে বলেও জানিয়েছে সরকার।

এই মুহূর্তে

আরও পড়ুন