কলকাতা শহরে ফের কলেরার আতঙ্ক! বাইপাসের ধারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে কলেরার উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হলেন পিকনিক গার্ডেনের এক যুবক। বছর ছাব্বিশের ওই যুবক বৃহস্পতিবার রাতে প্রবল বমি, পেটের যন্ত্রণা ও জলশূন্যতার লক্ষণ নিয়ে হাসপাতালে আসেন।
চিকিৎসকদের প্রাথমিক অনুমান, তিনি কলেরায় আক্রান্ত হয়েছেন। সঙ্গে দেখা দিয়েছে কিডনির সমস্যাও। বর্তমানে ওই যুবকের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল, স্যালাইনের মাধ্যমে চিকিৎসা চলছে।
আরও পড়ুন: জলের দরে ব্রডব্যান্ড! ভারতের ইন্টারনেটে নিঃশব্দ বিপ্লব
জানা গিয়েছে, আক্রান্ত যুবক কলকাতা পুরসভার ৬৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। তাঁর পরিবার সূত্রে দাবি, পুরসভার নলবাহিত জলই তাঁরা ব্যবহার করতেন। ফলে ওই জলের উৎস থেকেই সংক্রমণ কিনা, সেই প্রশ্নও উঠছে? যদিও বিষয়টি এখনও নিশ্চিত নয়। পুরসভার ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ জানান, “ঘটনাটি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। কী কারণে সংক্রমণ, তা খতিয়ে দেখছেন স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা।”
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে প্রকাশ্যে মুখ না খুললেও হাসপাতাল সূত্রে খবর, ‘নোটিফায়েড ডিজিজ’ হওয়ায় নিয়মমাফিক ওই রোগীর রিপোর্ট স্বাস্থ্য ভবনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
কলেরা মূলত একটি জলবাহিত সংক্রামক রোগ। বর্ষার মরশুমে সাধারণত এর প্রকোপ বেড়ে যায়। অতীতে কলকাতা পুর এলাকায় একাধিকবার কলেরায় আক্রান্ত হওয়ার নজির রয়েছে।
আরও পড়ুন: ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার! অস্বাভাবিক মৃত্যু গোসাইপুর বল্লা কালীবাড়ির পুরোহিতের
গত বছর বর্ষার সময়ও বাগুইআটি এলাকায় একই পরিবারের দুই সদস্য— এক যুবক ও তাঁর মা কলেরায় আক্রান্ত হন। যদিও সে সময় চিকিৎসকেরা স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, বিচ্ছিন্ন ঘটনার ভিত্তিতে আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পর্যবেক্ষণেও উঠে এসেছে, উন্নত পরিকাঠামো ও বিশুদ্ধ পানীয় জল সরবরাহের কারণে বহু দেশেই কলেরাকে প্রায় নির্মূল করা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু ভারতের ক্ষেত্রে এখনও তা সম্ভব হয়নি। ‘বিএমসি ইনফেকশাস ডিজিজ় জার্নাল’-এ প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ১৯৯৯ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত দুই দশকে শুধু কলকাতা শহরে কলেরায় আক্রান্ত হয়েছেন ২৪৭৯ জন। ফলে প্রশ্ন উঠছে— পুরসভার পরিশ্রুত জলের মান নিয়ে, পরিকাঠামোগত সতর্কতা নিয়েও।