বর্ষাকালে ছাতা নিতে ভুলে গেলে বিপত্তি অবশ্যম্ভাবী। মাথা, শরীর ভিজে একশা। তাতে ঠান্ডা লেগে যখনতখন সর্দি-জ্বরের আশঙ্কা তো থাকেই। কিন্তু ভেবে দেখেছেন কি বৃষ্টির জলে চুলের কতটা ক্ষতি হয়? একফোঁটা বৃষ্টি মাথায় পড়া মানেই চুলের দফারফা। মাথা মুছে নিলেও চুল ওঠা থেকে বাঁচতে পারবেন না মোটেই। আর তা রুখতে হয়ত আপনি হাজারটা রাসায়নিক ব্যবহার করে ফেলছেন। সাবধান! ভুলেও ইচ্ছেমতো প্রোডাক্ট লাগিয়ে ফেলবেন না যেন। তাতে চুলের ষোল আনা ক্ষতি। বরং হাতের কাছে থাকা, সস্তার এক রাসায়নিক দ্রব্য – ফিটকিরি বা পটাশ অ্যালাম কাজে লাগান। উপকার পাবেন। রইল ফিটকিরি ব্যবহারের বেশ কিছু টিপস।
আরও পড়ুন: ডাল আর পোস্ত, ভুলে জান; ভাতে মাখুন সরাসরি ‘ডালপোস্ত’
শরীরের কোনও অংশে রক্তপাত হলে তা তৎক্ষণাৎ বন্ধ করতে সাদা, কঠিন রাসায়নিক পদার্থটির গুণ তো সকলেরই জানা। ক্ষতর জায়গায় ফিটকিরি ঘষলেই আরাম হয়। রক্তও বন্ধ হয়ে যায়। আসলে, রাসায়নিক গঠন অনুযায়ী পটাশ অ্যালাম বা ফিটকিরির অ্যান্টিসেপ্টিক ও অ্যাস্ট্রিনজেন্ট ধর্ম রয়েছে। সেই কারণে ঠিক সেভাবেই ফিটকিরি আপনার মাথার ত্বকও ভালো রাখতে সাহায্য করে। রূপচর্চা বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, মাথার ত্বকে নিয়মিত ফিটকিরি লাগালে খুসকির সমস্যা থাকে না। চুলকানি এবং চুল পড়ার সমস্যাও দূর হয়ে যায় সহজে। আর যে কোনও সংক্রমণ থেকে মাথার ত্বককে সুস্থ রাখে ফিটকিরি।
কীভাবে ব্যবহার করবেন? বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, সপ্তাহে অন্তত একদিন শ্যাম্পু করার পর ফিটকিরি জলে চুল ধুয়ে ফেলুন। একটি ছোট টুকরো কিংবা এক চামচ ফিটকিরি গুঁড়ো নিয়ে এক কাপ জলে দিন। যতক্ষণ না তা জলে সম্পূর্ণ দ্রবীভূত হচ্ছে, ততক্ষণ নাড়তে থাকুন। জলে গুলে গেলে সেই জল চুলে লাগান। ৫ থেকে ১০ মিনিট অপেক্ষা করুন। তারপর ফের ভালো জলে চুল ধুয়ে শুকিয়ে নিন। চুল একদম ঝরঝরে, পরিষ্কার হয়ে যাবে।
আরও পড়ুন: জলের দরে ব্রডব্যান্ড! ভারতের ইন্টারনেটে নিঃশব্দ বিপ্লব
আরও দুটি সহজ উপায়ে ফিটকিরি দিয়ে চুলের যত্ন নিতে পারেন। শ্যাম্পু করার আগেও ফিটকিরির ব্যবহার উপযোগী। উষ্ণ নারকেল তেলে সাদা, কঠিন একটি টুকরো ভালো করে মিশিয়ে নিন। তা গোটা মাথায় আর চুলে ভালো করে মাসাজ করুন। ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট রেখে শ্যাম্পু করে ফেলুন। বদলটা বুঝতে পারবেন সহজেই।
আবার সারা সপ্তাহ ধরে ফিটকিরি দিয়ে কেশচর্চারও টিপস রয়েছে। গোলাপজলে ফিটকিরি গুঁড়ো মিশিয়ে নিন। তা একটি স্প্রে বোতলে ঢেলে ফ্রিজে রাখুন। মাঝেমাঝে তা চুলে স্প্রে করে ভালো করে মাসাজ করুন। তারপর কিছুক্ষণ চুল খুলে রাখুন। ধোয়ার আর প্রয়োজন নেই। এতেও চুলের স্বাস্থ্য ভালো থাকবে।