একযোগে দশটি কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন বুধবার ভারত বনধের ডাক দিয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের শ্রমিক-কৃষক নীতির বিরোধিতা করেই এই ধর্মঘটের ডাক। আন্দোলনকারীদের দাবি, এই বনধে ব্যাঙ্ক কয়লা খাদান থেকে শুরু করে ব্যাঙ্ক, হাইওয়ে নির্মাণ সকলেই অংশ নিতে পারেন। প্রায় পঁচিশ কোটি কর্মী বনধ পালন করবেন বলে দাবি করা হয়েছে। এ দিকে, সপ্তাহের মাঝে ধর্মঘট ডাকায় জনজীবনে সাময়িক ব্যহত হওয়ার বিরাট আশঙ্কা করা হচ্ছে। কারণ, বুধবার অফিস-স্কুল খোলা থাকে। ফলে নিত্যযাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছতে সাময়িক অসুবিধা হলেও হতে পারে।
আরও পড়ুন: গাড়িচালকের মাথায় হেলমেট, শুনশান রাস্তা; বনধের আংশিক প্রভাব
দেশের ১০টি কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন এবং কৃষক ও গ্রামীণ শ্রমিক সংগঠনগুলির যৌথ মঞ্চ এই বন্ধের ডাক দিয়েছে। আর সমর্থন করছে
ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেস,অল ইন্ডিয়া ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেস, হিন্দ মজদুর সভা, সেন্টার অফ ইন্ডিয়ান ট্রেড ইউনিয়ন,অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ট্রেড ইউনিয়ন সেন্টার,ট্রেড ইউনিয়ন সমন্বয় কেন্দ্র,স্ব-কর্মসংস্থানকারী মহিলা সমিতি, অল ইন্ডিয়া সেন্ট্রাল কাউন্সিল অফ ট্রেড ইউনিয়নস,লেবার প্রগ্রেসিভ ফেডারেশন, ইউনাইটেড ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেস। এ প্রসঙ্গে অল ইন্ডিয়া ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেসের অমরজিৎ কৌর জানিয়েছেন যে, দেশব্যাপী কৃষক ও শ্রমিকরা এই কেন্দ্রীয় নীতির প্রতিবাদ করবে।
মঞ্চের দাবি, বিগত দশ বছর ধরে কেন্দ্র সরকার বার্ষিক শ্রম সম্মেলন আয়োজন করছে না। শ্রমকোড আরোপ করে ইউনিয়নকে পঙ্গু করে দেওয়ার চেষ্টা করছে। কেন্দ্রের এই সব সিদ্ধান্তের জন্য শ্রমিক মজুরি হ্রাস পাচ্ছে, জিনিসের দাম বাড়ছে, মানুষের মৌলিক অধিকার (শিক্ষা-স্বাস্থ্য) ক্ষুন্ন হচ্ছে। মধ্যবিত্তদের দুর্দশা বাড়ছে, নিম্নমধ্যবিত্তদের অবস্থা খারাপ হচ্ছে।
আরও পড়ুন: শুভেন্দুর মিছিলে ‘না’; ৮ অগস্ট রাস্তায় রাত জাগার ডাক দিলেন জুনিয়র ডাক্তারেরা
এছাড়াও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলিতে তরুণদের চাকরি দেওয়ার পরিবর্তে অবসরপ্রাপ্তদের নিয়োগ দেওয়ার প্রবণতা বাড়িয়েছে কেন্দ্র। রেল, ইস্পাত ক্ষেত্র-সহ একাধিক সেক্টরে এই নিয়োগ হচ্ছে। যা দেশের জন্য ক্ষতিকর বলে মনে করা হয়েছে।
বনধের প্রভাব পড়বে কোন-কোন ক্ষেত্রে?
ভারত বন্ধের প্রভাব পড়তে পারে পোস্ট অফিসগুলিতে।
রাষ্ট্রায়ত্ত ও সমবায় ব্যাঙ্কগুলিতে পরিষেবা ব্যাহত হতে পারে। তবে বেসরকারি ব্যাঙ্ক খোলা থাকছে।
ধর্মঘট এবং রাস্তা অবরোধের কারণে বিভিন্ন রাজ্যে যানজট হতে পারে।
ক্যাব বাইক-ক্যাব ট্যাক্সি কম চলতে পারে
সরকারি ইস্পাত ও খনিজ সংস্থার কর্মীরা এই ধর্মঘটে যোগ দিতে পারেন
বিদ্যুৎ কর্মীরাও ধর্মঘটে সামিল হতে পারেন
কী কী খোলা থাকছে?
স্কুল, কলেজ এবং বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
বেসরকারি অফিসগুলি খোলা থাকবে। কিন্তু যান চলাচলের কম হলে অফিস যেতে যাত্রীদের অসুবিধা হতে পারে।
ধর্মঘটের মধ্যে রেল পরিষেবাকে রাখা হয়নি। তবে প্রতিবাদীরা রেললাইনে প্রতিবাদ করলে ট্রেন বিলম্ব হতে পারে।
হাসপাতাল,অ্যাম্বুলেন্স এবং দমকলের মতো জরুরি পরিষেবাগুলি স্বাভাবিক থাকবে।
ধর্মঘটের কোনও প্রভাব পড়বে না শেয়ার বাজারে।
কলকাতায় রাজ্য সরকার কী ব্যবস্থা নিয়েছে?
শহরের বিভিন্ন জায়গায় প্রচুর পরিমাণে পুলিশ মোতায়েন থাকছে।
প্রতিটি ডিভিশনের জন্য ডেপুটি কমিশনারদের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে।
রাস্তায় থাকবে যুগ্ম কমিশনার পদমর্যাদা অফিসার-সহ ডেপুটি কমিশনার, অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার-সহ অফিসার ইনচার্জ পদমর্যাদার অফিসাররা।
বাজার, শপিং মল, অফিস পাড়া, স্কুল ও কলেজ এলাকায় বাড়তি পুলিশ থাকছে।