প্রয়াত কেরলের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বর্ষীয়ান সিপিএম নেতা ভিএস অচ্যুতানন্দন। তিরুবনন্তপুরমের একটি বেসরকারি হাসপাতালে সোমবার শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। বয়স হয়েছিল ১০১ বছর। গতমাসে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার পর এই বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল অচ্যুতানন্দনকে। তারপর থেকে এই হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন ছিলেন। কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন-সহ অন্য বাম নেতারা এদিনই তাঁর শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নিতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন।
সিপিএমের প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের একজন অচ্যুতানন্দন। বর্ষীয়ান এই সিপিএম নেতা ২০০৬ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত কেরলের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। ২০১৯ সালে মৃদু স্ট্রোক হওয়ার পর থেকে রাজনীতির ময়দানে আর তাঁকে দেখা যায়নি। তিরুবনন্তপুরমে তাঁর পুত্র ভি অরুণ কুমারের বাড়িতে থাকতেন তিনি।
১৯২৩ সালের ২০ অক্টোবর কেরলের আলাপ্পুঝাতে জন্ম অচ্যুতানন্দনের। মাত্র ৪ বছর বয়সে মাকে হারান তিনি। ১১ বছর বয়সে তিনি পিতৃহারা হন। পরিবারে আর্থিক অনটনের জেরে ক্লাস সেভেনের পরই পড়াশোনা ছাড়তে হয় তাঁকে। সংসারের হাল ধরতে কিশোর বয়সেই দাদার সঙ্গে একটি দরজির দোকানে কাজে যোগ দেন। পরে একটি কারখানায়ও কাজ করেন। সেখানেই শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে রাজনীতিতে হাতেখড়ি হয় তাঁর। ১৬ বছর বয়সেই স্বাধীনতা আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। বাম নেতা পি কৃষ্ণ পিল্লাইকে গুরু মানতেন অচ্যুতানন্দন। ১৯৬৪ সালে সিপিআই ভেঙে যখন সিপিএম তৈরি হয়, তখন সিপিএম-র অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হলেন কেরলের এই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। দেশে জরুরি অবস্থার সময় তাঁকে গ্রেফতারও করা হয়েছিল।
আরও পড়ুনঃ স্তব্ধ এক অধ্যায়! বামপন্থী চিন্তক আজিজুল হকের প্রয়াণ
কেরলের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের বিরুদ্ধে একসময় সরব হয়েছিলেন অচ্যুতানন্দন। তারপর তাঁকে সিপিএমের পলিটব্যুরো থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। পরে তিনি বলেছিলেন, দুর্নীতি নিয়ে সত্য কথা বলাতেই তাঁকে পলিটব্যুরো থেকে সরানো হয়েছিল।