আজ ২৬ জুলাই। দেশজুড়ে পালিত হচ্ছে কার্গিল বিজয় দিবস। ১৯৯৯ সালে রীতিমতো পরিকল্পনা করে লাদাখের কার্গিল জেলা দখল করেছিল পাকিস্তানি সেনা। এরপরই শুরু হয় লড়াই। যা রূপ নেয় ঐতিহাসিক কার্গিল যুদ্ধের। অবশেষে ২৬ জুলাই আসে সেই ঐতিহাসিক দিন। পাক সেনাকে পরাস্ত করে ভারত। তারপর থেকে প্রতি বছর এই দিনটিকে বিজয় দিবস হিসাবে পালন করা হয়। বিশেষ এই দিনে যুদ্ধে শহিদ জওয়ানদের শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু।
আরও পড়ুনঃ মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন আগেই! ফালাকাটার অঞ্জলি শীলের বাড়িতে এনআরসির নোটিশ
দিনটা ছিল ১৯৯৯ সালের মে মাস। তখনও কার্গিলের পাহাড়ি অঞ্চল পুরু বরফের আস্তরণে ঢাকা৷ এমন কনকনে ঠান্ডার মধেও কাজে বেরিয়েছিলেন এক মেষপালক৷ ভারত-পাকিস্থান সীমান্তে হঠাৎ তাঁর নজরে আসে পাক সেনার সন্দেহজনক গতিবিধি৷ সঙ্গে সঙ্গে ভারতীয় সেনাকে খবর দেন তিনি।
১৯৯৯ সালের ৫ মে সেনার একটি দলকে পাহাড়ে পাঠানো হয়। কিন্তু নির্মমভাবে হত্যা করা হয় তাঁদের। এরপর নড়েচড়ে বসে নর্থ ব্লক। একের পর এক হামলার জবাব দিতে শুরু করে ভারত। এই যুদ্ধই কার্গিল যুদ্ধ নামে পরিচিত। তারপর থেকে ২৬ জুলাই দেশজুড়ে পালিত হয় কার্গিল বিজয় দিবস।
আরও পড়ুনঃ বাগদায় সাংঘাতিক কাণ্ড! বউ জানত না স্বামী বাংলাদেশের বিএনপি নেতা
বিশ্বের সবথেকে উঁচু স্থানে হওয়া যুদ্ধগুলির মধ্যে অন্যতম কার্গিল যুদ্ধ । এই যুদ্ধে ভারতের প্রায় ৫৩৭ জন শহিদ ও আহত হন প্রায় ১ হাজার ৩৬৩ জন জওয়ান।
প্রায় দুইলক্ষের বেশি সেনা ওই যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। এছাড়াও কার্গিলে প্রায় ৩০,০০০ ভারতীয় জওয়ানকে মোতায়েন করা হয়েছিল। হানাদের মারার পর ভারতীয় সেনা যখন তাদের তল্লাশি চালায় প্রত্যেকের থেকে পাকিস্তানের পরিচয়পত্র পাওয়া যায়।
পাকিস্থানের দাবি অনুযায়ী যুদ্ধে তাদের ৩৫৭ জন সেনার মৃত্যু হয়েছিল। কিন্তু ভারতীয় সেনার বিবৃতি অনুযায়ী ওই যুদ্ধে প্রতিবেশী দেশের তিন হাজারের বেশি সেনা প্রাণ হারিয়েছিলেন।
কার্গিল যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে ১৯৯৯ সালের ২৮ মার্চ তৎকালীন পাক সেনা প্রধান পারভেজ মুশারফ নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন। আর ভারতে এসে নাকি এক রাত কাটিয়েও গিয়েছিলেন।
এক পাক সংবাদমাধ্যম দাবি করেছিল, সে সময়ের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ কার্গিল যুদ্ধের ব্যর্থতা স্বীকার করার পাশাপাশি তাঁদের দেশের প্রায় তিন হাজার জওয়ানের মৃত্যুর খবরের সত্যতা স্বীকার করেছিলেন।
কিছু সুত্র মারফত জানা যায়, ১৯৯৮ সাল থেকেই কার্গিলে অনুপ্রবেশের প্রস্তুতি নিচ্ছিল পাক সেনা। প্রায় ৫০০০ জওয়ানকে কার্গিলে প্রবেশের জন্য পাঠিয়েছিলেন মুশারফ। এরপর যুদ্ধে পিছিয়ে পড়ে ভারতের বিরুদ্ধে নাকি পারমাণবিক শক্তি প্রয়োগের পরামর্শ দিয়েছিলেন পাকিস্থানের সেনা প্রধান।
কার্গিল যুদ্ধে প্রথমবার ভারত ৩২ হাজার ফুট উচ্চতা থেকে যুদ্ধবিমান ব্যবহার করেছিল। এত উচ্চতায় পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয় যে, পাইলটেরও বিমানের ভিতর দম বন্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এরপর ১৯৯৯ সালের ২৬ জুলাই তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী কার্গিল যুদ্ধের ইতি ঘোষণা করেন।