পশ্চিমবঙ্গে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সমীক্ষা (স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন বা এসআইআর) হয়েছিল প্রায় দু’যুগ আগে। ২০০২ সালে। সেই ভোটার তালিকাকে ভিত্তি করেই এ বার এগোতে চাইছে নির্বাচন কমিশন। সোমবার রাজ্যের ২০০২ সালে ভোটার তালিকা প্রকাশের কাজ শুরু করা হয়েছে কমিশনের তরফে।
আরও পড়ুনঃ সপ্তাহের শুরুতেই মেট্রো বিভ্রাট; ভোগান্তিতে অফিসফেরত যাত্রীরা
রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের ওয়েবসাইটে এই তালিকা ইতিমধ্যে প্রকাশ করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ১১টি জেলার শতাধিক বিধানসভা ক্ষেত্রের ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছে কমিশন। সিইও দফতর জানাচ্ছে, ২০০২ বিশেষ নিবিড় সমীক্ষার ভোটার তালিকা নামে ওই ভোটার তালিকা দেখা যাবে। বিহারের ক্ষেত্রেও কমিশন প্রথম ২০০৩ সালের ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছিল (সে বছরেই এসআইআর হয়েছিল বাংলার পড়শি রাজ্যে)। এ বার সেই তালিকা মেনেই এ বারও বিহারে এসআইআর প্রক্রিয়া চলছে। এ বার কমিশন বাংলাতেও কার্যত সেই প্রক্রিয়া শুরু করল বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও আনুষ্ঠানিক ভাবে সিইও দফতর কিছু জানায়নি।
সেই ‘সূত্র’ মেনে এ বার পশ্চিমবঙ্গেও ২৩ বছর আগের ভোটার তালিকা প্রকাশের কাজ শুরু করল কমিশন। প্রসঙ্গত, নির্দিষ্ট সময়ান্তরে কমিশন এই বিশেষ নিবিড় (এসআইআর) সমীক্ষা করে। রাজ্যগুলিতে শেষ বার এই এসআইআর হয়েছিল ২০০২ সাল থেকে ২০০৪ সালের মধ্যে। বিহারে হয়েছিল ২০০৩ সালে। ভোটার তালিকায় থাকা নামের মধ্যে কারা মৃত, কারা অন্যত্র চলে গিয়েছেন, কারা ভুয়ো— গভীরে গিয়ে তা সমীক্ষা করে কমিশন। তার পরে তৈরি করে সংশোধিত তালিকা। জুন মাস থেকে বিহারে এই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কমিশন বিহারের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করবে আগামী ১ অগস্ট। তবে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, নীতীশ কুমারের রাজ্যে ৬০ লক্ষের বেশি নাম বাদ পড়েছে ইতিমধ্যেই।
আরও পড়ুনঃ টোটোর দৌরাত্ম্য! যাত্রী পাচ্ছেন না অটোচালকরা; আন্দোলনে শিলিগুড়ির অটোচালকরা
কমিশনের একটি সূত্র জানাচ্ছে, সিইও-র নেতৃত্বে জেলা নির্বাচনী আধিকারিক বা জেলাশাসকে (ডিইও), ভোটের অতিরিক্ত জেলাশাসক, ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার, অতিরিক্ত ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার এবং বুথ লেভেল অফিসারেরা (বিএলও) একত্রে ভোটার তালিকায় নাম থাকা প্রত্যেকের বাড়িতে সমীক্ষার কাজটি করবেন। তাতে একটি ফর্ম ভরে প্রয়োজনীয় তথ্য দাখিল করতে হবে এক-এক জনকে। তা যাচাই হবে। তবে ২০০২ সালের ১ জানুয়ারি প্রকাশিত এসআইআর তালিকায় নাম থাকা ব্যক্তিদের অতিরিক্ত নথি দেওয়ার প্রয়োজন হবে না। আবার যাঁদের অভিভাবকের নাম সেই তালিকায় রয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রেও সমস্যা নেই। তবে সেই তালিকায় যাঁদের নাম নেই, নতুন ভোটার বা অন্য রাজ্য থেকে চলে আসা কোনও ব্যক্তির ক্ষেত্রে পৃথক ফর্ম এবং নথি দাখিল করতে হবে। ওই সূত্র জানাচ্ছে ২০০২-এর তালিকায় যাঁদের নাম থাকবে না, তাঁদেরই পারিবারিক এবং এ দেশের নাগরিকত্বের সূত্র বুঝতে নথি যাচাই হবে। অনলাইনেও এই প্রক্রিয়া চালানো যাবে। গোটা প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক দলগুলির বুথ স্তরের প্রতিনিধিরাও যুক্ত থাকবেন।