কুশল দাশগুপ্ত, শিলিগুড়িঃ
দিনকয়েক বাদেই ভারতের ৭৯তম স্বাধীনতা দিবস। দিনটি উদযাপন করতে কোথাও চলছে এনসিসির মহড়া, কোথাও বা নাচে-গানে অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি। তবে যাই অনুষ্ঠান হোক না কেন, দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস এবং ঐতিহ্য বর্ণনা করতে প্রয়োজন জাতীয় পতাকা। আর সেই জাতীয় পতাকা তৈরি করে লাভের মুখ দেখছেন জলপাইগুড়ি শহরের দর্জিরা। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে বিভিন্ন দোকান থেকে অর্ডার আসছে নানা সাইজের পতাকার। আর সেই পতাকা তৈরিতে মশগুল দিনবাজারের জারুল মহম্মদ, রবি পালরা।
আরও পড়ুনঃ অপারেশন সিঁদুরের পালটা! খবরের কাগজের পর, গ্যাস, জল বন্ধ; চাপ বাড়াল পাকিস্তান
এই দর্জিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, তাঁরা দিনবাজারের কাপড়ের দোকান থেকেই গেরুয়া, সাদা এবং সবুজ কাপড় কিনে অর্ডারের চাহিদা অনুযায়ী কেটে তেরঙা বানাচ্ছেন। আর সাদার ওপর অশোকচক্র প্রিন্ট করে আনছেন মার্চেন্ট রোডের এক প্রিন্টিংয়ের দোকান থেকে। জারুল মহম্মদ বলেন, ‘ছোট পতাকার জন্য সব মিলে আমরা নিচ্ছি ২০ টাকা করে। বড় পতাকার মাপ অনুযায়ী আমরা ৩০, ৪০, ৫০ টাকায় সেগুলো সাপ্লাই করছি। অনেক প্রতিষ্ঠান ছাড়াও দোকানদাররাও আমাদের কাছ থেকে তৈরি পতাকা নিয়ে বিক্রি করছেন। কিন্তু এই সময়ে অন্য কোনও কাজ না থাকায় এই পতাকা বিক্রি করে বেশ ভালোই লাভ হচ্ছে।’
এদিকে, শুধু জাতীয় পতাকা নয়। উত্তরীয় এবং নাচের ওড়নার অর্ডারও আসছে এই সকল দর্জিদের কাছে। পাপ্পু মহম্মদের কথায়, ‘আমার কাছে প্রায় ৮০টি বড় পতাকা এবং ২০টি মাঝারি পতাকার অর্ডার এসেছিল। মোটামুটি সবগুলি তৈরির মুখে। এখন কিছু তেরঙা উত্তরীয় এবং ওড়নার অর্ডার রয়েছে। সেগুলো তৈরি করছি।’
বাজার ঘুরে দেখা গেল কাপড়ের জাতীয় পতাকা ৩০ টাকা থেকে শুরু করে ৫০০ টাকা পর্যন্ত রয়েছে। জরি লাগানো উত্তরীয় ৭০ টাকার কাছাকাছি। ওড়নাও বিকোচ্ছে ১০০ টাকা থেকে। কিন্তু বাজারে যেই দামেই এই সকল সামগ্রী বিক্রি হোক না কেন, শহরের দর্জিরা খুশি তাঁদের হাতে কাজ আশায়। দর্জি রবি পালের কথায়, ‘আমরা যেগুলো বিক্রি করছি ২০ টাকায়, অনেক দোকানি সেগুলো ৫০ টাকায় বিক্রি করছেন। তবে সেটা দেখে আমাদের লাভ নেই। আমাদের খাটনির দাম পাচ্ছি, এটাই আমাদের কাছে অনেক।’
আরও পড়ুনঃ ঘটনা এবার বাঁকুড়ায়! মাথায় তিন-চার রাউন্ড গুলি, খুন তৃণমূল নেতা
ক্লাবের অনুষ্ঠানের জন্য তেরঙা উত্তরীয় অর্ডার দিতে আসা সঞ্জয় দাসের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল তাঁরা প্রতি বছর স্বাধীনতা দিবসে অনুষ্ঠান করেন। সেখানে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফল মানুষদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়। সেই সংবর্ধনা দেওয়ার জন্য এদিন তিনি উত্তরীয় অর্ডার দিতে এসেছেন। তাঁর কথায়, ‘সংখ্যা বেশি থাকায় ২৫ টাকা করে নিচ্ছি প্রতি উত্তরীয়। বাইরে থেকে কিনতে গেলে আরও ৫ থেকে ১০ টাকা বেশি পড়ত। তাই অর্ডার দিয়ে বানাচ্ছি।’