দেশের মানুষকে একসূত্রে বাঁধে জাতীয় সঙ্গীত। কোনও অনুষ্ঠানে জাতীয় সঙ্গীত হলেই উঠে দাঁড়িয়ে সবাই গলা মেলান। জাতীয় সঙ্গীত নিয়ে মানুষের মনে আবেগের অন্ত নেই। দেশের ঐতিহ্য, সার্বভৌমত্ব, ঐক্যর প্রতীক হিসেবে গাওয়া হয় জাতীয় সঙ্গীত। ভারতের জাতীয় সঙ্গীত ‘জনগণমন অধিনায়ক’ লিখেছেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। কীভাবে ‘জনগণমন অধিনায়ক’-কে ভারতের জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে নির্বাচিত করা হয়?
আরও পড়ুনঃ ‘কেন এত নেতা খুন হচ্ছে? আইবি কেন আগে থেকে খবর পাচ্ছে না?’ ক্ষুব্ধ মমতা
১৯১১ সালের ১১ ডিসেম্বর কবিগুরু ‘ভারতভাগ্যবিধাতা’ নামে গান রচনা করেন। যার পাঁচটি স্তবক। তবে জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে গাওয়া হয় প্রথম স্তবক। ভারতের সংবিধান রচনার জন্য গঠিত কনস্টিটুয়েন্ট অ্যাসেম্বলি অব ইন্ডিয়া ১৯৫০ সালের ২৪ জানুয়ারি ‘জনগণমন অধিনায়ক’-কে জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে নির্বাচিত করে। নিয়ম বলছে, ৫২ সেকেন্ডের মধ্যে জাতীয় সঙ্গীত গাইতে হয়। সংক্ষেপে এই গান গাওয়ার প্রয়োজনীয়তা থাকলে তা শেষ করতে হয় ২০ সেকেন্ডের মধ্যে। সে ক্ষেত্রে প্রথম ও শেষ স্তবকের শেষের দুই দুই চার লাইন গাইতে হয়। নিয়ম এও বলছে এক মিনিটের বেশি সময় ধরে কখনই রাষ্ট্রগান বা জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া যায় না।
তবে গানটি প্রথম গাওয়া হয় ১৯১১ সালের ২৭ ডিসেম্বর। জাতীয় কংগ্রেসের ২৬তম বার্ষিক অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়েছিল কলকাতায়। সেখানেই এই গানটি প্রথম গাওয়া হয়। ওইদিন সভায় হাজির ছিলেন সেই সময়ের কংগ্রেস সভাপতি বিষাণ নারায়ণ ধর এবং ভূপেন্দ্রনাথ বসু ও অম্বিকা চরণ মজুমদারের মতো বড় বড় নেতারা।
আরও পড়ুনঃ RYF-এর ‘অধিকার যাত্রা’-র ডাক এবার ছড়িয়ে পড়ল কামাখ্যাগুরি জুড়ে
১৯৪১ সালে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু এই গানের একটি আলাদা সংস্করণ নিয়ে আসেন। বাংলা থেকে ‘হিন্দুস্তানি’ ভাষায় অনুবাদ হয় জনগণমন। অনুবাদটি করেন আর্মি ক্যাপ্টেন আবিদ আলি, সুর দেন ক্যাপ্টেন রাম সিং। তারপর থেকে এই গান গোটা ভারতেই আরও জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। ভারত স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৫০ সালের ২৪ জানুয়ারি জাতীয় সঙ্গীত হিসাবে স্বীকৃতি পায় জনগণমন-র প্রথম স্তবক। এখনও পর্যন্ত এই গানটি ইংরাজি-সহ ২২ ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে।