সমিক সান্যাল, কলকাতাঃ
আজ মনসা পুজো, মূলত বঙ্গদেশ, ওড়িশা, আসাম ও দক্ষিণ ভারতের কিছু অংশে তিনি পুজিত হন। বলা হয় তিনি শিব কন্যা ও জরুতকারু মুনির পত্নী, শিব তাকে পরিত্যাগ করেন কলোহ এর কারণে। মনসা সর্প কুলের দেবী, বৈদিক দেবি রূপে তার পরিচয় তেমন দেখা যায় না, আদিবাসী সমাজে ও নিম্ন বর্গ সমাজে তিনি পুজিত হতেন। যদি ও মহাভারতে তার উল্লেখ আছে।
আরও পড়ুনঃ মায়ের পুজোয় আমিষ ভোগ! এই রাজবাড়ির মনসা পুজো ঘিরে মেলা, ছুটি স্কুল-কলেজও
দেব দেবীর মূল স্রোতে ফিরে আসার জন্যে তিনি সংগ্রাম করেছেন, নিজের অধিকার লড়াই করে তিনি জায়গা করে নিয়েছেন। মনসা মঙ্গল এর কাহিনী অনুসারে তিনি শিব ভক্ত চাঁদ সওদাগর এর পুজো চেয়েছিলেন। কিন্তু শিব ভক্ত চাঁদ তাকে গালি দিলেন ও পুজো দিতে চাইলেন না, মনসা রেগে গিয়ে চাঁদের পুত্রদের হত্যা করলেন, যদিও পরবর্তি তে বেহুলা দেবতাদের বরে ও মনসার শর্ত অনুসারে চাঁদ পুত্র লখিন্দর ও তার বাকি ভাই রা জীবন ফিরে পায় এবং চাঁদ সন্মত হন মনসা কে অঞ্জলী দিতে।
মূলত এই আখ্যান অনুসারে মনসা দেবতাদের মূল স্রোতে ফিরে আসেন। অর্থাৎ মনসা দেবি তার পুজো প্রচলন করার জন্য রীতিমত সংগ্রাম করেছেন, আধুনিক রাজনীতির রণ কৌশল ও তিনি নিয়েছেন, দেব দেবীর সমাজে নিজের কৌলিন্য বজায় রাখতে ছলে বলে কৌশলে তিনি জয়ী হয়েছেন।
আরও পড়ুনঃ জন্মাষ্টমীর পরের দিন ‘দহি হাণ্ডি’, আর্থিক ক্ষতির সমূহ সম্ভাবনা এই তিন রাশির
তাকে কি আমরা শুধুই দেবি রূপে দেখব না লড়াকু যোদ্ধা রূপে দেখব? মানব সমাজের ইতিহাসে ও আমরা দেখি প্রান্তিক সমাজের মানুষ লড়াই করে সমাজের মূল স্রোতে ফিরে আসার জন্য, তারা জয়ী ও হন, দেবতার দের জগতেও সেই লড়াই করেই নিজের জায়গা করে নিয়েছেন মনসা দেবি, তাই এখনও গ্রাম বাংলাতে যেখানে যেখানে প্রান্তিক সমাজের বসবাস সেখানে আমরা তার উপস্থিতি লক্ষ্য করি। মনসা মঙ্গল গীত ও শোনা যায়। বাংলার পট ও চিত্রে মনসা মঙ্গল কাব্যের উজ্জ্বল উপস্থিতি আছে। পুরাণে না থেকে ও তিনি দেবত্ব অর্জনের
লড়াই এর ময়দানে আছেন যেখানে দেবী ও মানুষ এক হয়ে গেছে।