শুল্ক নিয়ে ওয়াশিংটনের কাছে মাথা নত করব না। আমেরিকার অর্থনৈতিক চাপ সত্ত্বেও আমাদের সরকার ঠিক রাস্তা খুঁজে বের করবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কবাণ নিয়ে আহমেদাবাদের জনসভা থেকে হুঙ্কার দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
আরও পড়ুনঃ “ঢাকিদের বাংলাদেশি বলে গ্রেফতার করা হলে আগুন জ্বলবে” হুঙ্কার TMC সাংসদের
সোমবার জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে মোদি বলেন, “যতই চাপ আসুক না কেন, আমরা তা মোকাবেলা করার জন্য আমাদের শক্তি বৃদ্ধি করে যাব। আমরা আত্মনির্ভর ভারতের সংকল্প নিয়ে ছিলাম। সেই সংকল্পের পথে আমরা অনেক দূর অগ্রসর হয়েছি। দেশ শক্তিশালী হয়েছে। এখন গোটা বিশ্বে অর্থনৈতিক স্বার্থপরতার উপর ভিত্তি করে নীতি গঠন হচ্ছে।” এরপরই তিনি বলেন, “শুল্ক নিয়ে ওয়াশিংটনের চাপ সহ্য করব না। মাথা নত করব না। আমাদের সরকার ঠিক রাস্তা খুঁজে বের করবে।” মোদির কথায়, “ভারত এধরনের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে দৃঢ়ভাবে দাঁড়াবে এবং নাগরিকদের স্বার্থকেই অগ্রাধিকার দেবে।” তাঁর সংযোজন, “আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, আমাদের সরকার কখনই ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা, পশুপালক এবং কৃষকদের কোনও ক্ষতি হতে দেবে না।”
আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি না হওয়ায় প্রথম দফায় ২৫ শতাংশ, পরে রাশিয়ার থেকে তেল কেনার জন্য ভারতের উপর আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। ট্রাম্পের দাবি, ভারতের তেল কেনার জন্যই রাশিয়া ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার অর্থ পাচ্ছে। যদিও ভারত আমেরিকার এই দাবি সম্পূর্ণ উড়িয়ে দিয়েছে। ভারতের যুক্তি ইউরোপীয় ইউনিয়ন, চিন রাশিয়া থেকে প্রাকৃতিক গ্যাস এবং অপরিশোধিত তেল কিনছে। আমেরিকাও রুশ পণ্য কেনায় পিছিয়ে নেই। এই অবস্থায় ভারতের উপর শুল্ক চাপানো অন্যায়। স্পষ্টভাবে নয়াদিল্লি জানিয়ে দিয়েছে, রাষ্ট্রের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে যেখানে কম দামে তেল পাওয়া যাবে সেখান থেকেই তেল কিনবে ভারত।
প্রসঙ্গত, ভারতের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের এই শুল্কনীতি আগামী বুধবার থেকেই কার্যকর হতে চলেছে। তার আগে ২৬ আগস্ট অর্থাৎ মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে হাই প্রোফাইল একটি বৈঠক ডাকা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। বিদ্যমান ২৫ শতাংশের শুল্কের প্রভাবে রপ্তানিতে সাহায্যকারী সংস্থাগুলির লভ্যংশের মার্জিন কমেছে। পাশাপাশি, রপ্তানির বাজারে সংস্থাগুলির মধ্যে প্রতিযোগিতাও হ্রাস পেয়েছে। এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করার জন্য সরকার এবং সংস্থাগুলি আগামীদিনে কীভাবে এগোবে? কোন কোন পদক্ষেপ করবে? মনে করা হচ্ছে আগামিকাল প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের বৈঠকে সেই বিষয়গুলি নিয়েই আলোচনা হবে।