সূর্য্যকান্ত চৌধুরী, বাঁকুড়াঃ
প্রতিটি কাউন্টারের সামনে গ্রাহকদের লম্বা লাইন। কাউন্টারের ভিতর অসহায়ভাবে বসে রয়েছেন নিরুপায় কর্মচারী। তিনি পরিষেবা দেবেন কী করে! ইন্টারনেট লিঙ্কই তো নেয়। ডাকঘরের এমন ছবি একেবারে বিরল নয়। ব্যাঙ্কের মতো মাঝেমধ্যেই এমন ঘটনা ঘটে থাকে পোস্ট অফিসে। ফলে প্রায়শই চূড়ান্ত সমস্যায় পড়তে হয় গ্রাহকদের। সম্প্রতি ডাকবিভাগ শহরের নন ফাংশনাল ডাকঘরগুলি বন্ধ করে গ্রামীণ ডাকঘরগুলির পরিষেবা আরও উন্নত করার চিন্তা ভাবনা শুরু করেছে। তা নিয়েই শুরু হয়েছে চর্চা। এবার কী সত্যিই বদলাবে গ্রাহক হয়রানির ছবিটা?
আরও পড়ুনঃ ১২ বছরের ছেলেটাকে টেনে নিয়ে গেল বাড়ির সামনে থেকে, মৃতদেহ উদ্ধার কিছু দূর থেকে উদ্ধার
বাঁকুড়া শহরেই রয়েছে জেলার প্রধান ডাকঘর। সেই ডাকঘর খোলার আগে থেকেই লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে পড়েন গ্রাহকেরা। অফিস খুলতে না খুলেই সেই লাইন গিয়ে হামলে পড়ে ডাকঘরের সার দেওয়া কাউন্টারের সামনে। কিন্তু সেখানে গিয়ে মাঝেমধ্যেই গ্রাহকেরা জানতে পারেন ইন্টারনেট সংযোগ নেই। অগত্যা পরিষেবা পেতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা ছাড়া তাঁদের কাছে আর কোনও রাস্তাই খোলা থাকে না। আর এতেই যেন অভ্যস্ত হয়ে পড়ছেন গ্রাহকরাও। লিঙ্ক না থাকার সমস্যায় যে গ্রাহকরা প্রায়শই জেরবার হন তা বলছেন নিজেরাই। একজন বলছেন, “লিঙ্ক তো কাল ছিল না, পরশু ছিল না, শুক্রবারও ছিল না। গোটা বাঁকুড়াতেই একই অবস্থা। মাঝেমধ্যে এমনটা হয়।” আর একজন বলছেন, “লম্বা লাইনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকছি আমরা। শয়ে শয়ে মানুষ এমন দাঁড়িয়ে থাকে। আমরা চাই এই সমস্যা দ্রুত মিটে যাক।”
তবে এই ছবি কোনও একটি নির্দিষ্ট দিনের বা কোনও একটি নির্দিষ্ট ডাকঘরের নয়। বাঁকুড়া শহরের মূল ডাকঘর হোক বা কোনও শাখা ডাকঘর, সব জায়গাতেই ছবিটা মোটামুটি এক। গ্রামীণ ডাকঘরগুলিতে পরিষেবার হাল আরও বেহাল। এই পরিস্থিতিতে ডাক বিভাগ সম্প্রতি ঘোষণা করেছে শহরের নন-ফাংশনাল ডাকঘরগুলি বন্ধ করে সেখানের কর্মী ও যন্ত্রপাতি গ্রামীণ ডাকঘরগুলিতে নিয়ে গিয়ে পরিষেবা উন্নত করার চেষ্টা করা হবে। ইতিমধ্যেই বাঁকুড়া জেলার বিভিন্ন শহরে থাকা এমন কয়েকটি ডাকঘরকে চিহ্নিত করে সেগুলি বন্ধ অথবা অন্যত্র স্থানান্তর করার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। ডাক বিভাগের নতুন এই উদ্যোগে কী বদলাবে পরিষেবার হাল? আশায় ডাক বিভাগের কর্তারা।
আরও পড়ুনঃ স্কুলে এলোপাথাড়ি গুলি! ২ শিশুকে মেরে আত্মহত্যা আততায়ীর
বাঁকুড়া ডাক বিভাগের সুপারিনটেনডেন্ট অনিরুদ্ধ বিশ্বাস যেমন বলছেন, “গ্রামে অনেক পোস্ট অফিস রয়েছে যেগুলি একজন চালায় মানে সিঙ্গেল হ্যান্ডেড। সেগুলিকে আপগ্রেড করলে মানুষের অনেক সুবিধা হবে। পাশাপাশি যে সব এলাকায় জনবসতি বেড়েছে সেখানে নতুন পোস্ট অফিস করার কথা ভাবতে পারি। নন-ফাংশনার পোস্ট অপিসগুলিকে সেখানে সরানো যেতে পারে, স্টাফদের সরানো যেতে পারে।” ৪ অগস্ট থেকে নতুন কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে বলে জানান তিনি। বাসুদেব মুখোপাধ্যায় নামে এক গ্রাহক যদিও বলছেন, “লিঙ্ক না থাকার সমস্যা তো শহরেই আছে। হেড পোস্ট অফিসেই এই সমস্যা। কাজ হচ্ছে না। এখন দেখা যাক শেষ পর্যন্ত কী দাঁড়ায়।”



