আগে মানুষ সরকার বেছে নিত। কিন্তু এখন কেন্দ্র সরকার ভোটার বাছছে! এসআইআর ইস্যুতে বিজেপিকে এই ভাষাতেই নিশানা করলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় । দলের ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের মঞ্চ থেকে তাঁর বক্তব্যে উঠে এল বাংলা ভাষার অপমান প্রসঙ্গও। স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে কেন্দ্রীয় সরকারকে তুলোধনা করেন অভিষেক।
এসআইআর-এর নাম করে দেশের ভোটারদের অধিকার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এই পরিপ্রেক্ষিতেই তাঁর সাফ কথা, এর বিরুদ্ধে লড়াই চলবে। যদি আগামী দিনে বাংলার একজন ভোটারের নামও বিজেপি কেটে বাদ দেয়, তবে লক্ষ লক্ষ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে দিল্লি অভিমুখে যাত্রা করবে তৃণমূল। অভিষেকের হুঁশিয়ারি, ১০ লক্ষ লোক নিয়ে দিল্লিতে অভিযান করবেন তাঁরা।
আরও পড়ুনঃ চিহ্নিত ৯২ কাঠা জমি, শহরে নতুন শ্মশান; যৌথ উদ্যোগে কলকাতা পুরসভা এবং বেসরকারি সংস্থা
বিজেপি দাবি করেছে, ২০২৬ সালের ভোটে তৃণমূলের বিদায় ঘটবে। তবে বৃহস্পতিবারের সভা মঞ্চ থেকে অভিষেকের সরাসরি হুঁশিয়ারি, ‘‘যারা বাংলার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে, তাদের ২০২৬-এ আমরা এক ইঞ্চি জমিও ছাড়ব না। আগামী বছর ২৮ অগস্ট আরও বড় সমাবেশ হবে।’’ এই প্রেক্ষিতে তাঁর সরাসরি চ্যালেঞ্জ – বিজেপির যদি সত্যিই শক্তি থাকে, তবে আগামী নির্বাচনে ৫০ আসন পার করে দেখাক। তৃণমূল নেতার অবশ্য এও দাবি, গতবারের চেয়েও বেশি আসন নিয়ে ২০২৬ সালের ভোটে তারা ক্ষমতায় ফিরবে।
এদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তৃতায় উঠে এসেছে বিচারব্যবস্থা, কেন্দ্রীয় বাহিনী, সিবিআই ও নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ক্ষোভও। অভিযোগ, এরা সকলে একজোট হয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়ছে। কিন্তু পাল্টা দাবি, বাংলার প্রায় দশ কোটি মানুষ তৃণমূলের পাশে রয়েছেন।
আরজি কর কাণ্ডের এক বছর পার হয়েছে। এদিনের সভা থেকে সেই প্রসঙ্গও টেনে আনেন অভিষেক। বিজেপি সরকার তথা কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআইকে নিশানা করে তিনি বলেন, “গত বছর এই সময় আরজি কর কাণ্ড নিয়ে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছিল। তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কলকাতা পুলিশ মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ব্যবস্থা নিয়েছিল। কিন্তু আজ এক বছর কেটে গিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সিবিআই কিছুই করল না।”
শুধু তদন্ত নয়, রাজ্য সরকারের পাস করা বিলও আটকে রাখার অভিযোগ তুললেন অভিষেক। তাঁর কথায়, “আমরা অপরাজিতা বিল পাস করে রাজ্যপালের কাছে পাঠিয়েছিলাম। অথচ এক বছর কেটে গেলেও এখনও পর্যন্ত তাতে সম্মতি দেওয়া হয়নি।” তাঁর অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সংস্থা ও রাজ্যপালের ভূমিকা বাংলার গণতন্ত্রকে ব্যাহত করছে।



