কুশল দাশগুপ্ত, শিলিগুড়িঃ
ঝড়ে উপড়ে যাওয়া বিশাল শিশু গাছ উধাও। ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কলেজপাড়ার প্রায় ৬০ ফুটের ওই শিশু গাছের লগ কোথায় জানা নেই শিলিগুড়ি পুরনিগমের পরিবেশ বিভাগের। শহরের কোথাও গাছ পড়ে গেলে সে বিষয়ে পুরনিগমের পরিবেশ বিভাগ থেকেই পদক্ষেপ করা হয়। যে গাছ তুলে নিয়ে প্রতিস্থাপন করা যায় সেটি করে দেওয়া হয়। আর যেটা প্রতিস্থাপন সম্ভব নয় সেটি কেটে লগ হিসেবে পুরনিগমের হেপাজতে রাখা হয়। কিন্তু ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কলেজপাড়ায় বাঘা যতীন অ্যাথলেটিক ক্লাবের পিছনের দিকে পড়ে যাওয়া ওই শিশু গাছের কোনও হদিস নেই।
আরও পড়ুনঃ দিন দিন বদলে যাচ্ছে শিলিগুড়ি! স্বল্পবসনা তরুণীর স্টেজে উদ্দাম নাচ, উড়ছে টাকা
পুরনিগম সূত্রে খবর, ওই গাছটি পরিবেশ দপ্তর থেকে কাটা হয়নি। স্থানীয় ৩ নম্বর বরো কমিটি থেকে গাছটি কেটেছিল। এরপর ওই লগ কোথায় গেল তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। দপ্তরের মেয়র পারিষদ সিক্তা দে বসু রায়ের বক্তব্য, ‘ওই ওয়ার্ড যে বরোর মধ্যে পড়ে সেই বরো থেকেই কাটা হয়েছে।’ ওই এলাকা ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত এবং ওয়ার্ডটি ৩ নম্বর বরোর অন্তর্গত। ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার তথা ৩ নম্বর বরোর চেয়ারপার্সন মিলি শীল সিনহার ফোন বন্ধ থাকায় তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
আরও পড়ুনঃ মাথায় আঘাত করে খুন! হরিদেবপুরের কবরডাঙায় মাছের বাজারে রক্তারক্তি কাণ্ড
১৪ অগাস্ট রাতে ঝড়ে শিলিগুড়ি পুরনিগমের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কলেজপাড়ার বাঘা যতীন অ্যাথলেটিক ক্লাবের পিছনে থাকা একটি বড় শিশু গাছ গোড়া থেকে উপড়ে যায়। পাশের একটি বহুতলের ওপর পড়ে গাছটি। ঘটনার খবর যায় শিলিগুড়ি পুরনিগমের পরিবেশ বিভাগে। খবর পেয়ে পুরনিগমের আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে আসেন। কিন্তু ওই গাছটি আগে থেকেই কাটা শুরু হয়ে গিয়েছিল। সূত্রের খবর, তিন নম্বর বরো কমিটি লোক নিয়ে এসে ওই শিশু গাছটি কেটে ফেলে। ওই গাছের লগগুলি পুরনিগমের হেপাজতে যাওয়ার কথা। লগগুলির দাম অন্তত এক লক্ষ টাকা বলে জানা গিয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, গাছটি প্রতিস্থাপন না করে কেন কেটে ফেলা হল? এর আগে ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে একটি ৬০ ফুটের মেহগনি গাছ উপড়ে যায়। সেটির ডালপালা ছেঁটে প্রায় ৩০ ফুট আকারে এনে গোড়া সমেত শিলিগুড়ি কলেজের মহিলা হস্টেলের সামনে প্রতিস্থাপন করা হয়। ওই গাছটি বেঁচে গিয়েছে। নতুন পাতাও এসেছে। ২২ নম্বর ওয়ার্ডের একটি ২৫ ফুটের জংলি পলাশ ফুলের গাছ উপড়ে গিয়েছিল। সেটিও শিলিগুড়ি কলেজে প্রতিস্থাপন করা হয়। ওই গাছটিও বেঁচে গিয়েছে। অন্যদিকে, এর আগে স্টেশন ফিডার রোড, বর্ধমান রোড সহ একাধিক এলাকায় সংস্কারের সময় গাছ তুলে সেগুলি শীতলাপাড়ায় প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল। অনেক গাছই বেঁচে গিয়েছে। কিন্তু কলেজপাড়ার এই গাছটি কেন প্রতিস্থাপন করা হল না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেবের বক্তব্য, ‘গাছের বিষয়ে আমি খুব সতর্ক। কলেজপাড়ার সব গাছ আমার নিজের হাতে করে লাগানো। আমি কলকাতা থেকে ফিরেই বিষয়টি নিয়ে খোঁজ করছি।’



