ভাদ্র মাসের পূর্ণিমা রাতে আকাশপ্রেমীদের জন্য অপেক্ষার এক বিশেষ মুহূর্ত অপেক্ষা করছে। কলকাতা ও বাংলার বিভিন্ন স্থান থেকে এই রাতে দেখা যাবে এক বিরল চন্দ্রগ্রহণ। পৃথিবী সূর্যের এবং চাঁদের মাঝখানে অবস্থান করে, তখন চন্দ্রগ্রহণ হয়। এতে করে সূর্যের আলো সরাসরি চাঁদের উপর পৌঁছাতে পারে না এবং পৃথিবীর ছায়া চাঁদের পৃষ্ঠে পড়ে। ফলে চাঁদ স্বাভাবিক সাদা রঙের পরিবর্তে লালচে আভা ধারণ করে। খগোলবিদরা এই অবস্থাকে ‘রক্তচন্দ্র’ হিসেবে পরিচিত করেন। আর এই পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণের সাক্ষী থাকতে পারবেন আপনিও। উদ্যোগ নিয়েছে রায়পুর গার্লস হাইস্কুল এবং পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চ।
আগামী ৭ই সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৭টা থেকে রায়পুর গার্লস হাইস্কুলের ছাদে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ ও টেলিস্কোপে আকাশ দেখার বিশেষ আয়োজন। এই অনুষ্ঠানটির আয়োজন করেছে রায়পুর গার্লস হাইস্কুল এবং পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চ। এতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ড. কাদম্বিনী গাঙ্গুলি বিজ্ঞান সভা (যাদবপুর, কলকাতা)। অনুষ্ঠানে উপস্থিত দর্শকরা টেলিস্কোপের মাধ্যমে চন্দ্রগ্রহণ পর্যবেক্ষণের সুযোগ পাবেন। পাশাপাশি আকাশপ্রেমীদের জন্য এটি হবে এক দুর্লভ অভিজ্ঞতা।
আরও পড়ুনঃ ‘ব্লাড মুন’! ৩ ঘন্টা ২৯ মিনিট; রাত ফুরোলে চন্দ্রগ্রহণ
ভাদ্র মাসের পূর্ণিমা হল ২১ ভাদ্র তথা ৭ সেপ্টেম্বর রবিবার। পূর্ণিমা তিথি লাগবে রাত ১১ টা ৫৭ মিনিটে। তার আগে থেকেই গ্রহণ শুরু হয়ে যাবে।
চন্দ্রগ্রহণ শুরু হবে ৭ সেপ্টেম্বর রাত ৮টা ৫৮ মিনিটে এবং চলবে ৮ সেপ্টেম্বর ভোর ২টা ২৫ মিনিট পর্যন্ত।
পেনামব্রাল (অস্পষ্ট) গ্রহণ শুরু: রাত ৮টা ৫৮ মিনিট
আংশিক গ্রহণ শুরু: রাত ৯টা ৫৭ মিনিট
পূর্ণ গ্রহণ শুরু: রাত ১১টা ০০ মিনিট
সর্বোচ্চ গ্রহণ: রাত ১১টা ৪১ মিনিট
পূর্ণ গ্রহণ শেষ: রাত ১২টা ২২ মিনিট
আংশিক গ্রহণ শেষ: রাত ১টা ২৫ মিনিট
পেনামব্রাল গ্রহণ সমাপ্তি: ভোর ২টা ২৫ মিনিট
আরও পড়ুনঃ ৯ বছর পর আজ এসএসসি নিয়োগ পরীক্ষা; স্বাভাবিক থাকবে মেট্রো পরিষেবা, রাস্তায় অতিরিক্ত বাস
‘Blood Moon’ শব্দটি এসেছে মূলত পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণের সময় চাঁদের বিশেষ আভা থেকে। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল সূর্যের আলোকে ভেঙে দেয় বা ‘বাঁকিয়ে দেয়’। সূর্যের আলো নানা রঙের হলেও নীল আলো বায়ুমণ্ডলে বেশি ছড়িয়ে যায়, আর লাল ও কমলা বর্ণের আলো তুলনামূলক সহজে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল অতিক্রম করে চাঁদে পৌঁছায়। তাই পূর্ণ গ্রহণের সময় চাঁদের গায়ে লালচে, কমলা বা তামাটে রঙের আভা পড়ে। এই বিশেষ দৃশ্যকে বলা হয় রক্তচন্দ্র। জ্যোতির্বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে এটি একটি অপটিক্যাল ইফেক্ট, তবে সাধারণ মানুষের কাছে এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে রহস্যময়তা, কাব্যিকতা এবং কখনও কখনও কুসংস্কারও। বিশ্বের বিভিন্ন সংস্কৃতিতে রক্তচন্দ্রকে ধরা হয়েছে অশুভের প্রতীক হিসেবে, আবার কোথাও কোথাও এটি শুভ ও নতুন সূচনার প্রতীকও বটে।