নেপালে সরকার-বিরোধী নবীন প্রজন্মের তরতাজা তরুণ-যুবসমাজের ‘গণহত্যাকারী’ শাসক সিপিএন-ইউএমএলের প্রধান তথা প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির পদত্যাগের দাবিতে সরব হয়েছে শাসক জোট ও বিরোধী দলগুলি। মঙ্গলবার সকালে বিদ্রোহীদল কার্ফুকে তুচ্ছ করে প্রধানমন্ত্রী ওলির বালকোটের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছে। বালকোট চকে বিশাল সংখ্যায় জমায়েত দেখা যাচ্ছে। বৃহস্পতিমার্গ ও বালকোট চকের সব রাস্তা বিক্ষোভকারীরা ঘিরে ফেলেছে। তারা সরকার ও ওলি-বিরোধী স্লোগান দিয়ে চলেছে।
আরও পড়ুনঃ জেন জ়ি প্রজন্মের কাছে শেষপর্যন্ত নতিস্বীকার নেপাল সরকারের; নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার
ইতিমধ্যেই সোমবার দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ লেখক গণহত্যার দায়িত্ব নিয়ে পদত্যাগ করার পর কৃষি ও পশুপালনমন্ত্রী রামনাথ অধিকারী এদিন সকালে এক্সবার্তায় ইস্তফা দেন। তিনিও সরকারের ভূমিকার তীব্র নিন্দা করেছেন এবং প্রধানমন্ত্রী ওলির দমন আইনের সমালোচনা করেন। নেপালি কংগ্রেসের এমপি অধিকারী বলেছেন, গণতন্ত্রে প্রশ্ন করার অধিকার সকলেরই আছে। শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ-বিক্ষোভ গণতন্ত্রে স্বীকৃত। কিন্তু, সরকার যেভাবে সাধারণ মানুষের উপর নির্যাতন চালিয়েছে, নির্বিচারে খুন করেছে তা দেখে মনে হচ্ছে দেশ থেকে গণতন্ত্র হারিয়ে গিয়েছে এবং একনায়কতন্ত্র ফিরে এসেছে।
এদিকে, সরকার সহযোগী নেপালি কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক গগন থাপাও প্রধানমন্ত্রী ওলিকে গণহত্যার নৈতিক দায়িত্ব নিয়ে পদত্যাগের পরামর্শ দিয়েছেন। পরিকল্পনা চলছে নেপাল কংগ্রেস সরকার থেকে গণইস্তফা দেবে এবং ওলিকে অপসারণ না করা হলে সরকারের উপর থেকে সমর্থনও তুলে নিতে পারে তারা।
মঙ্গলবার সকালে সিপিএন (মাওবাদী কেন্দ্র) চেয়ারপার্সন পুষ্পকমল দাহাল ‘প্রচণ্ড’র খুমালতারের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। দেশের যোগাযোগমন্ত্রী পৃথ্বী সুব্বা গুরুংয়ের সুনাকোঠী বাড়িও ভেঙে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। উপপ্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী বিষ্ণু পৌডেলের ভাইসেপতির বাড়িতে ইট-পাথর ছোড়ে বিক্ষোভকারী তরুণরা। পদত্যাগী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ লেখকের বাড়িতেও হামলা চালানো হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ বিপ্লবে জ্বলছে নেপাল, সৌজন্যে ‘জেন জেড’; পদত্যাগ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর
এছাড়াও নেপাল রাষ্ট্র ব্যাঙ্কের গভর্নর বিশ্ব পৌডেলের ভাইসেপতি এলাকার সরকারি বাসভবনেও ঢিল-পাথর ছোড়া হয়। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এবং নেপালি কংগ্রেসের সভাপতি শের বাহাদুর দেউবার বুধানিকণ্ঠ এলাকার বাড়ির সামনেও ঘেরাও বিক্ষোভ চলছে। যদিও বাড়িতে হামলার আগেই তাদের ঠেকানো গিয়েছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্র জানাচ্ছে, বিক্ষোভকারীরা এখন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী, উপপ্রধানমন্ত্রী সহ মন্ত্রী ও সরকারি কর্তাদের বাড়িকে নিশানা করে এগোচ্ছে।