কুশল দাশগুপ্ত, শিলিগুড়িঃ
লাল-নীল ট্যাঙ্কার, তাতে লেখা নেপাল ওয়েল কর্পোরেশন। কিন্তু তেল, সেটাই তো এখন নেই হিমালয়ের কোলে অবস্থিত এই ছোট্ট দেশে। কারণ, সেখানে এখন হাহাকার। সরকার বদলের ডাক। বুকে আগুন নিয়ে রাস্তায় তরুণ প্রজন্ম।
১৯৭০ সালে তৈরি হওয়া নেপাল ওয়েল কর্পোরেশন, তার শুরুর দিন থেকে নির্ভর করে রয়েছে ভারতের উপর। প্রতিদিন ইন্দো-নেপাল সীমান্ত পেরিয়ে তেলের ট্যাঙ্কার চলে আসে ভারতে। তারপর তেল নিয়ে তা আবার চলে যায় পাহাড়ের কোলে। হিমালয়ে এই ভাবেই বছর বছর ধরে ‘শক্তি’ পাঠিয়ে আসছে নয়াদিল্লি।
আরও পড়ুনঃ স্কুলে গার্ড নেই, মাসি নেই, নেই বাচ্চাদের নিরাপত্তা! কোচবিহার সদর গভর্নমেন্ট হাইস্কুলে এত সমস্যা!
সাধারণভাবে, এই তেল সরবরাহের ক্ষেত্রে নেপালের পাশে থেকেছে ভারতের তিনটি রাজ্য়। যথাক্রমে, বিহারের রাক্সাউল, উত্তরপ্রদেশের গোন্ডা এবং বাংলার শিলিগুড়ি। এই বাংলা থেকেই আন্দোলনের আগের দিন পর্যন্ত কমপক্ষে ৩০ থেকে ৪০ ট্যাঙ্কার তেল গিয়েছে কাঠমান্ডুতে। সমপরিমাণ তেল গিয়েছে বাকি দুই রাজ্য় থেকেও।
কিন্তু নেপালে আগুন ছড়াতেই সেই তেল সরবরাহ হল বন্ধ। আন্দোলনের জেরে নেপাল জুড়ে উত্তেজনা। প্রতিমুহূর্তে চলছে গুলি, জ্বলছে আগুন। এই পরিস্থিতিতে সড়ক পথ একেবারে বন্ধ হয়ে যায়। পড়ে যায় সরকার। প্রাণ বাঁচিয়ে পালাতে ব্যস্ত হয়ে ওঠেন মন্ত্রীরা। ফলত, এই সবের মাঝে বন্ধ হয় তেল সরবরাহও। তৈরি হয় জ্বালানির সংকট। নেপালের একের পর এক পেট্রোল পাম্পে মেলে না জ্বালানি।
আরও পড়ুনঃ পুজোর আগেই ফের ছুটি! বড় ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর
সীমান্তে তৎপর হয়েছে SSB। ইন্দো-নেপাল সীমানা এলাকায় বেড়েছে নজরদারি। নেপালেও এখন তৈরি হচ্ছে নতুন সমীকরণ। ধীরে ধীরে মূলস্রোতে ফিরছে হিমালয়ের কোলে অবস্থিত এই দেশ। ফলত, যানচলাচলও আবার শুরু হয়েছে। তিন দিনের ‘পথ-অবরোধের’ কারণে তেলে যে ঘাটতি তৈরি হয়েছিল তা আপাতত পূর্ণ হতে চলেছে বলেই ধারণা একাংশের। দুপুর পর্যন্ত ১৫টি গাড়ি পাঠানো হয়েছে নেপালে। SSB-র নজরদারিতেই চলছে সরবরাহের কাজ।
এদিন কাস্টমসের এক কর্তা বলেন, ‘জ্বালানির ক্ষেত্রে এই শিলিগুড়ি করিডরের উপর নির্ভর করে থাকে নেপালের ঝাপা-সহ একাধিক এলাকা। প্রতিদিন গড়ে সেখানে ৩০টি করে ট্য়াঙ্কার পাঠানো হয়। কিন্তু গত তিন দিন সব বন্ধ ছিল। তবে তেলে ট্য়াঙ্কার যাওয়ার ছাড়পত্র মিললেও, সাধারণ যাত্রীবোঝাই গাড়ি যাওয়ার জন্য এখনও কোনও অনুমতি মেলেনি।’