আজ অর্থাৎ ১৪ ই সেপ্টেম্বর ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার ‘হিন্দি দিবস’ হিসেবে পালন করে। ১৯৪৯ সালে আজকের দিনেই হিন্দিকে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের দাপ্তরিক ভাষার মর্যাদা দেওয়া হয়েছিল। কেন্দ্রীয় সরকারের সব অফিস, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বাধ্যতামূলক ভাবে এইদিনটি পালন করতে হয়। হিন্দি প্রসারের উদ্দেশ্যে কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠান গুলোয় হিন্দি পক্ষ পালন করে হিন্দিতে কথাবার্তা ও অফিসের কাজ করতে উৎসাহিত করা হয়। ভারতের মত একটি বহুভাষিক যুক্তরাষ্ট্রে একটি ভাষার প্রসারে এইভাবে সরকারি উদ্যোগ আসলেই অহিন্দি ভাষাভাষি মানুষের উপর হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার কৌশল।
আরও পড়ুনঃ ‘প্রাগৈতিহাসিক যুগ’ কলকাতা মেট্রোয়! সময় দেখানো বন্ধ করা হল?
এই হিন্দি দিবসকে ‘কালো দিন’ ঘোষণা করে, হিন্দি চাপানোর বিরুদ্ধে তামিল, কণ্ণড়, মারাঠি, তেলেগুর মত বহু অহিন্দি জাতিই দীর্ঘদিন আন্দোলন করে আসছে। বাংলা পক্ষ সংগঠন বাংলার মাটিতে এই দিন বিভিন্ন জায়গায় প্রতিবাদী সভা, মিছিল, পোস্টারিং করছে বিগত বছরগুলোতে। আজ কলকাতার যাদবপুর থেকে গড়িয়াহাট পর্যন্ত প্রতিবাদী মিছিল আয়োজন করা হয় সংগঠনের পক্ষ থেকে।
দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ, শরৎ চন্দ্র বসু, প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের মত বাঙালি জাতির জাতীয়তাবাদী চেতনার পথপ্রদর্শকদের মত তামিল আন্নাদুরাই, কণ্ণড় কোভেম্পুর মত ভারতের অহিন্দি নায়কদের ছবি নিয়েই মিছিলে হাঁটেন পাঁচ শতাধিক মানুষ। মিছিল থেকে হিন্দি সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে সকল অহিন্দি জাতির ঐক্যের ডাক দেওয়া হয়। বাংলা পক্ষর সাধারণ সম্পাদক গর্গ চট্টোপাধ্যায় বলেন “তামিল, কন্নড় সহ বিভিন্ন জাতির জাতীয়তাবাদী সংগঠন বাংলা পক্ষর আজকের কর্মসূচীকে সংহতি জানিয়েছে। অহিন্দি জাতিসমূহের সর্বভারতীয় সংস্থা থেকেও সংহতি বার্তা এসেছে। হিন্দি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আগামীদিনে সারা ভারতের সকল অহিন্দি জাতিই এখন একে অন্যের পাশে দাঁড়াচ্ছে। হিন্দি সাম্রাজ্যবাদ ধ্বংস হবেই। বাঙালির রক্তে স্বাধীন ভারতে বাঙালির সমানাধিকার প্রতিষ্ঠাই বাংলা পক্ষর লক্ষ্য। হিন্দি সাম্রাজ্যবাদ মুক্ত ভারত গড়বো আমরা। হিন্দি সাম্রাজ্যবাদী বিজেপি যেভাবে ভারতে হিন্দিকে প্রতিষ্ঠা করতে চায়, তা আমরা ব্যর্থ করবোই।”
সাংগঠনিক সম্পাদক কৌশিক মাইতি বাংলার শাসক দলকে একদিকে বাংলা ভাষা আন্দোলন ও অন্যদিকে হিন্দি-উর্দু তোষণের দ্বিচারিতা ছেড়ে বাঙালি পক্ষে থাকার কথা বলেন। তিনি বলেন “WBCS এ হিন্দি-উর্দু পুনরায় ঢুকিয়ে, স্কুলে বাংলা বাধ্যতামূলক না করে, চাকরিতে ভূমিপুত্র সংরক্ষণ না করে, শুধু মুখেই বাঙালি জাতিসত্তার কথা বলে আর বাঙালির ভোট পাওয়া যাবে না। এরা বাংলার সরকার সত্যি করেই বাঙালির জন্য কিছু করে দেখাক। অন্যদিকে বিজেপি ভারতে হিন্দির আধিপত্য কায়েম করতে চায়। তা আমরা কোনো ভাবেই হতে দেব না।”
এই মিছিলে সংগঠনের শীর্ষ পরিষদ সদস্য অরিন্দম চ্যাটার্জী, মনোজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, সৌম্য কান্তি ঘোড়ই, মহ সাহীন সহ বিভিন্ন জেলার সম্পাদক সহ অন্যান্য নেতৃত্ব অংশ নেন।