ফের শুল্কের কোপ! মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ব্র্যান্ডেড ও পেটেন্ট করা ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য আমদানির উপরে ১০০ শতাংশ শুল্ক ঘোষণা করলেন। আগামী ১ অক্টোবর থেকেই এই শুল্ক কার্যকর হবে। ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তে ভারতে বিরাট প্রভাব পড়তে পারে, কারণ ভারত থেকে বিপুল পরিমাণে ওষুধ রফতানি হয় আমেরিকায়।
নিজের সোশ্যাল মিডিয়া, ট্রুথ সোশ্যালে পোস্ট করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প লেখেন, “১ অক্টোবর থেকে আমরা যেকোনও ব্রান্ডেড বা পেটেন্ট নেওয়া ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্যের উপরে ১০০ শতাংশ শুল্ক বসাব, যদি না তারা আমেরিকায় ওষুধ তৈরির প্ল্যান্ট তৈরি করে। নির্মাণ শুরু হবে, সেটাই চুক্তি। কোনও ছাড় পাওয়া যাবে না।”
শুধুমাত্র ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্যের উপরেই নয়, কিচেন ক্যাবিনেট, বাথরুমের বিভিন্ন সামগ্রীর উপরেও ৫০ শতাংশ শুল্ক বসানোর কথা বলেছেন ট্রাম্প। ৩০ শতাংশ শুল্ক বসানো হবে ফার্নিচারে, ২৫ শতাংশ শুল্ক বসানো হবে ভারী ট্রাকে।
আরও পড়ুনঃ আগের চেয়েও শক্তিশালী নিম্নচাপ! পুজোর আনন্দে কি কাঁটা!
আবার নতুন করে এই শুল্ক চাপানোর জন্য যুক্তিও দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তাঁর কথায়, বিদেশ থেকে আমদানি করা এই পণ্যগুলির জন্য আমেরিকান কোম্পানিগুলি সমস্যায় পড়ছে। তাদের উৎপাদন ও পণ্য বিক্রি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে। দেশের জাতীয় নিরাপত্তা ও অন্যান্য কারণেই শুল্ক বসাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প।
প্রসঙ্গত, কয়েক সপ্তাহ আগেই হোয়াইট হাউস বাণিজ্যের কাঠামো ও আমদানি শুল্ক ঘোষণা করেছে। এরপরই ট্রাম্পের এই শুল্কের ঘোষণা। অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ফেডেরাল ডেফিসিট বা আমেরিকার তহবিলে যে ঘাটতি রয়েছে, তা পূরণ করার জন্যই ট্রাম্প একের পর এক শুল্ক চাপাচ্ছেন বিশ্বের বাকি দেশের উপরে। এভাবে তিনি আমেরিকার নিজস্ব উৎপাদনকারী সংস্থা ও ব্রান্ডগুলিকেও বেশি বিক্রি করার সুযোগ করে দিতে চাইছেন। তবে ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তে মুদ্রাস্ফীতি আরও ভয়ঙ্করভাবে বাড়তে পারে এবং বহু শিল্প-বাণিজ্যও আমেরিকা ছেড়ে চলে যেতে পারে।
আরও পড়ুনঃ বিমানবন্দরে ব্যাপক হইচই! প্যান্টে ঢুকে গেল ইঁদুর, পা বেয়ে উঠে সেই জায়গায় দিল মোক্ষম কামড়!
ট্রাম্পের এই ১০০ শতাংশ শুল্কের ঘোষণায় ভারতের উপরে ব্যাপক প্রভাব পড়তে পারে কারণ ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্যের সবথেকে বড় বাজার আমেরিকা। ভারত সবথেকে বেশি আমেরিকাতেই ওষুধ রফতানি করে। আমেরিকায় ব্যবহৃত ৪৫ শতাংশ জেনেরিক এবং ১৫ শতাংশ বায়োসিমিলার ড্রাগ ভারত থেকেই যায়। ২০২৪ অর্থবর্ষে ভারত ৮.৭ বিলিয়ন ডলার অর্থাৎ ৭ লক্ষ ৭২ হাজার ৩১ কোটি টাকার ওষুধ রফতানি করেছিল আমেরিকায়, যা মোট ওষুধ রফতানির ৩১ শতাংশ। চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ভাগেই ৩২ হাজার ৫০৫ কোটি টাকার ওষুধ সরবরাহ করেছে। ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে ডঃ রেড্ডিস, অরবিন্দ ফার্মা, জ়াইডাস, সান ফার্মার মতো সংস্থা প্রভাবিত হতে পারে, কারণ এদের ৩০ শতাংশ থেকে ৫০ শতাংশ আয় আমেরিকার বাজার থেকেই হয়।