চতুর্থীতেই দুর্গাবাহিনীর কাছে হার মানল মেঘাসুর। রোদ ঝলমলে দিনটায় যতই ভ্যাপসা গরম থাক না কেন, বেলা থেকেই রাস্তায় ঝাঁপিয়ে পড়ল দর্শনার্থীরা। শুক্রবার ছিল বেশিরভাগ অফিসেরই শেষ কাজের দিন। কারণ, আগামিকাল, চতুর্থ শনিবার। কারও পুরো ছুটি, কারও হাফ। তাছাড়া বাতাসে পুজোর গন্ধ ভাসছে। ফলে এদিনটাই কোনওমতে কাজ সেরে ঘরমুখো হতেই নাকালে পড়তে হয় অফিসযাত্রীদের। উত্তর থেকে দক্ষিণ বড় মণ্ডপগুলিতে দর্শনার্থীদের ভিড় এবং শেষবেলার পুজোর বাজারের যানজটে ঘেমেঘামান্ত হয়ে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে বাসে বাদুড়ঝোলা হয়ে।
আরও পড়ুনঃ নয়া চমক; উত্তর কলকাতার স্টেইনলেস স্টিলের দুর্গা
উত্তরের টালা প্রত্যয়, টালা সর্বজনীন, বাগবাজার, শোভাবাজার, আহিরীটোলা, শ্রীভূমি, কুমারটুলি, দর্পনারায়ণ রায় স্ট্রিট, লোহাপট্টি, কলেজ স্কোয়ার, বিবেকানন্দ রোড, শিয়ালদহ প্রায় প্রতিটি পুজো প্যান্ডেলে ছিল সপ্তমীর ভিড়। কারণ আবহাওয়া অফিসের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এবারের পুজো দেখা। দক্ষিণের বেহালা-ঠাকুরপুকুর থেকে সুরুচি, চেতলা অগ্রণীর মতো নাম করা প্যান্ডেলে ছিল অতিরিক্ত সমাগম।
ঠাকুর দেখার পাশাপাশি এদিন ছিল অফিসের কাজের দিন। শ্যামবাজার-হাতিবাগান থেকে ধর্মতলা, নিউমার্কেট, লিন্ডসে স্ট্রিট সব জায়গাতেই ছিল কেনাকেটার শেষ মুহূর্তের ভিড়। কচিকাঁচা থেকে তরুণ-যুবক-যুবতীদের হামলে পড়া সামলাতে হয়েছে দিনভর। আর এ কারণে গড়িয়াহাট থেকে রাসবিহারী মোড় পর্যন্ত গাড়ির সার দাঁড়িয়ে থেকেছে প্রায় ঘণ্টাখানেক। তার উপর ভোগান্তি বাড়িয়েছে বাসের সংখ্যা। তীব্র যানজটের ভয়ে অধিকাংশ বাস পথ থেকে উধাও হয়ে গিয়েছে। বহু বাসের স্ট্যান্ড বদলে দিয়েছে পুলিশ।
আরও পড়ুনঃ আভিজাত্য ও সাবেকিয়ানার ছোঁয়া শিলিগুড়ির বাড়ির পুজোতে
এছাড়াও অনেকে রাস্তা, যেখানে অটো একটি বিরাট সম্বল, সেখানেও দুপুরের পর থেকে অটো দাঁড়ানোয় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে পুলিশ। এর ফলে সব রুটে স্বাভাবিক অটো চলাচল না করায় যাত্রীরা তুমুল দুর্ভোগে পড়েন। সেই সঙ্গে মেঘলা আকাশ ও ভ্যাপসা গরম। কম বাস থাকায় অনেকে ঘুরপথ হলেও মেট্রোয় যাতায়াতের চেষ্টা করেন।
কিন্তু, অতিরিক্ত যাত্রীর ভিড়ে মেট্রোতেও শুক্রবার সারাদিন ছিল চিঁড়েচ্যাপ্টা দশা। সে কারণে হাজার হাজার অফিসযাত্রী যাঁরা বাসে করে হাওড়া বা শিয়ালদহ স্টেশনে এসে ট্রেন ধরেন, তাঁদের একের পর এক শিডিউল ট্রেন মিস করতে হয়েছে। সব মিলিয়ে ভোগান্তির একশেষ হলেও শেষ পর্যন্ত প্রতিবারের মতো এবারেও দুর্গাপুজোর সার্জিক্যাল স্ট্রাইকে বিধ্বস্ত হয়েছে মেঘবাহিনী।