Tuesday, 14 October, 2025
14 October
HomeদেশAmit Shah: অনুপ্রবেশের ফলে মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে, বললেন শাহ

Amit Shah: অনুপ্রবেশের ফলে মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে, বললেন শাহ

১৯৫১ সালে যখন এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, তখন তাঁর দল বিজেপি ছিল না। তাঁর কথায়, যদি দেশভাগ না হতো, তাহলে হয়তো ধর্মের ভিত্তিতে জনগণনার দরকার হতো না।

অনেক কম খরচে ভিডিও এডিটিং, ফটো এডিটিং, ব্যানার ডিজাইনিং, ওয়েবসাইট ডিজাইনিং এবং মার্কেটিং এর সমস্ত রকম সার্ভিস পান আমাদের থেকে। আমাদের (বঙ্গবার্তার) উদ্যোগ - BB Tech Support. যোগাযোগ - +91 9836137343.

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন ভারতে হিন্দুর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। অন্যদিকে, লক্ষণীয় বৃদ্ধি ঘটেছে মুসলিমদের। পাকিস্তান ও বাংলাদেশ চিত্রটা সম্পূর্ণ ভিন্ন। সেখানে হিন্দুরা সংখ্যায় অতি নগণ্য। ‌স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য, মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণ জন্মহার নয়। পাকিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশের ফলে মুসলিমদের জনসংখ্যা ভারতে উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে গিয়েছে।

দিল্লিতে জনসংখ্যা ও জনবিন্যাস সংক্রান্ত এক আলোচনা সভায় কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেছেন অনুপ্রবেশ, জনসংখ্যাগত পরিবর্তন এবং গণতন্ত্র অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তিনি জোর দিয়ে বলেন, যতদিন না দেশের প্রতিটি নাগরিক, বিশেষ করে যুব সমাজ এই বিষয়গুলোর গুরুত্ব অনুধাবন করবে এবং এ থেকে উদ্ভূত সমস্যাগুলি সম্পর্কে সচেতন হয়, ততদিন পর্যন্ত আমরা আমাদের দেশ, সংস্কৃতি, ভাষা এবং স্বাধীনতার সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারব না। তিনি আরও বলেন, এই তিনটি বিষয় একে অপরের সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত।

আরও পড়ুনঃ অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হলে ১ বছরের জেলও হতে পারে, মুখ্যসচিবের ভূমিকায় বিরক্ত কমিশন

তিনি উল্লেখ করেন, ১৯৫১, ১৯৭১, ১৯৯১ ও ২০১১ সালে ভারতে জন গণনায় ধর্ম ভিত্তিক তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। ১৯৫১ সালে যখন এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, তখন তাঁর দল বিজেপি ছিল না। তাঁর কথায়, যদি দেশভাগ না হতো, তাহলে হয়তো ধর্মের ভিত্তিতে জনগণনার দরকার হতো না। কিন্তু যেহেতু দেশভাগ ধর্মের ভিত্তিতে হয়েছিল, সে কারণে তৎকালীন শাসকদলের নেতারা ১৯৫১ সালের জনগণনায় ধর্মের উল্লেখকে যথোপযুক্ত মনে করেছিলেন।

তিনি জানান, ১৯৫১ সালে হিন্দুদের সংখ্যা ছিল ৮৪ শতাংশ, মুসলিমদের ৯.৮ শতাংশ। ২০১১ সালে হিন্দুদের সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ৭৯ শতাংশে, আর মুসলিমদের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১৪.২ শতাংশে। এই পরিসংখ্যানকে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন বলে চিহ্নিত করে শাহ বলেন, এটা অনুপ্রবেশের কারণে হয়েছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারতে মুসলিম জনসংখ্যা ২৪.৬ শতাংশ হারে বেড়েছে, আর হিন্দু জনসংখ্যা ৪.৫ শতাংশ হারে কমেছে। এটি শুধুমাত্র প্রজনন হারের কারণে নয়, বরং অবৈধ অনুপ্রবেশের ফলে হয়েছে। তিনি বলেন, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে বড় আকারে অনুপ্রবেশ হয়েছে, যার ফলে এই পরিবর্তন দেখা গেছে।

আরও পড়ুনঃ আবার ‘যুদ্ধ মুডে’ ট্রাম্প; আচমকা বড় ঘোষণা ১০০ শতাংশ শুল্ক

তিনি আরও বলেন, পাকিস্তানে ১৯৫১ সালে হিন্দু জনসংখ্যা ছিল ১৩ শতাংশ, যা এখন কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ১.৭৩ শতাংশে। বাংলাদেশে হিন্দু জনসংখ্যা ছিল ২২ শতাংশ, যা এখন ৭.৯ শতাংশে নেমে এসেছে। আফগানিস্তানে হিন্দু ও শিখ মিলিয়ে ছিল ২.২ লক্ষ, যা এখন মাত্র ১৫০ জনে নেমে এসেছে। তিনি জানান, এই হ্রাস ধর্মান্তরের কারণে নয়, বরং তারা ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন।

তিনি বলেন, যারা ভারতের ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষা করতে চায়, তাদের জন্য সংবিধানিক অধিকার অনুযায়ী ভারতে আসার অধিকার রয়েছে। কিন্তু যারা শুধুমাত্র আর্থিক বা অন্য কোনও কারণে অবৈধভাবে প্রবেশ করে, তারা অনুপ্রবেশকারী।

নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন সম্পর্কেও আলোচনায় মুখ খোলেন কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, এই আইন কারও নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার জন্য নয়, বরং নির্যাতিতদের নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য‌ করা হয়েছে। তাঁর কথায়, ১৯৫১ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত যেসব ঐতিহাসিক ভুল হয়েছে, সেগুলির সংশোধন করা হয়েছে মোদী সরকারের মাধ্যমে। তিনি বলেন, যারা ভারতীয় ভূখণ্ডে আশ্রয় নিয়েছেন কিন্তু নাগরিকত্ব পাননি, তাদের নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্যই এই আইন প্রণীত হয়েছে।

তিনি বলেন, যারা ভারতে আশ্রয় নিয়েছে, তারা উদ্বাস্তু। আর যারা অবৈধভাবে প্রবেশ করেছে, তারা অনুপ্রবেশকারী। উদ্বাস্তুরা তাদের ধর্ম রক্ষার জন্য এসেছে, আর অনুপ্রবেশকারীরা এসেছে অবৈধ উদ্দেশ্যে। সিএএ-তে হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, খ্রিস্টান–সবাইকে নাগরিকত্ব দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।

তিনি বলেন, বিশ্বের প্রতিটি মানুষকে ভারতে ঢুকতে দিলে দেশটি একটি ধর্মশালায় পরিণত হবে। তাই অনুপ্রবেশকারীদের ঢুকতে দেওয়া সম্ভব নয়।

তিনি জানান, ভারতের সংবিধান খুব পরিষ্কার যে, প্রত্যেক নাগরিক তাঁর নিজের ধর্ম অনুযায়ী উপাসনা করতে পারে। কিন্তু যদি কেউ অবৈধভাবে প্রবেশ করে, তবে তাকে অনুপ্রবেশকারী হিসেবেই গণ্য করা হবে।

তিনি বলেন, অসমে ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ছিল ২৯.৬ শতাংশ, যা অনুপ্রবেশ ছাড়া সম্ভব নয়। পশ্চিমবঙ্গের সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে এই হার ৪০ শতাংশেরও বেশি এবং কোথাও কোথাও ৭০ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছেছে। ঝাড়খণ্ডে আদিবাসী জনসংখ্যা হ্রাসের জন্যও তিনি অনুপ্রবেশকে দায়ী করেন।

তিনি বলেন, এই সমস্যার সমাধান শুধু কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়, রাজ্য সরকার গুলিকেও দায়িত্ব নিতে হবে। কিছু রাজ্য সরকার অনুপ্রবেশে সহায়তা করছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।

ভোটার তালিকা বিশেষ নিবিড় সংশোধন (SIR) প্রসঙ্গে বলেন, এটি একটি জাতীয় ইস্যু, রাজনৈতিক নয়। তিনি বলেন, যদি অনুপ্রবেশকারীকে প্রশাসন চিনতেই না পারে, তবে অনুপ্রবেশ বন্ধ হবে কীভাবে?

তিনি বলেন, কিছু রাজনৈতিক দল অনুপ্রবেশকারীদের ভোটব্যাংক হিসেবে দেখে। তিনি জানান, ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন নতুন কিছু নয়, ১৯৫১ সাল থেকেই চলে আসছে। নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব হল একটি নিরপেক্ষ ও সঠিক ভোটার তালিকা প্রস্তুত করা।

শাহের বক্তব্য, যদি অনুপ্রবেশকারীরা ভোটার তালিকায় ঢুকে যায়, তাহলে দেশের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রক্রিয়াতেও তারা অংশ নেয়, যা গণতন্ত্রের জন্য হানিকর।

তিনি বলেন, ভারত একটি ভূ-সাংস্কৃতিক জাতি। ধর্মের ভিত্তিতে দেশভাগ ছিল এক ঐতিহাসিক ভুল।  তিনি বলেন, সরকার অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করবে, ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেবে এবং তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর জন্য কাজ করবে। কারণ অনুপ্রবেশকারীরা সীমান্ত অঞ্চলগুলোতে আইনশৃঙ্খলা এবং শহরে দরিদ্র শ্রমিকদের অধিকার হরণ করছে।

এই মুহূর্তে

আরও পড়ুন