হাওড়া থেকে শেওড়াফুলি। রিষড়া থেকে আসানসোল। স্টেশনে স্টেশনে বাজছে ছটের ভোজপুরি গান। বড় স্টেশনে লাগানো টিভিতেও সেই নাচ-গানই দেখানো হচ্ছে। গানের চোটে রেলের ঘোষণাও শুনতে পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ যাত্রীদের। ফলে বাড়ছে ক্ষোভ।
আরও পড়ুনঃ অবহেলায় “বাংলা”! দুর্গা, কালী, জগদ্ধাত্রী পুজোতে বাজলো না; ছট উপলক্ষে স্টেশনে স্টেশনে বাজছে গান
যাত্রীদের প্রশ্ন, অতীতে তো কখনও দেখিনি এভাবে স্টেশনের মধ্যে মাইকে ভোজপুরি গান বাজাতে! ধীরে ধীরে রেলে বাংলার সংস্কৃতি তুলে দিয়ে বিহারের সংস্কৃতি ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে! কালীপুজোতে তো শ্যামাসঙ্গীত বাজলো না! এমনকি দুর্গাপুজোর সময়ও তো মহিষাসুরমর্দিনী বাজতে শোনা গেল না! তাহলে ছট আসতেই এমন তারস্বরে ভোজপুরি ভাষার গান বাজানো শুরু হল কেন!
রেলেরই একাংশের দীর্ঘদিনের অভিযোগ, রেলে বাঙালি অফিসার দিন দিন কমছে। অবাঙালিদের দাপট বাড়ছে। তারই প্রতিফলন ঘটছে রেলের সংস্কৃতিতে। বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ বাংলা পক্ষ। বাংলা পক্ষর সাধারণ সম্পাদক গর্গ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ছট উপলক্ষে বিভিন্ন স্টেশনে মাইকে ভোজপুরি গান চলছে। এটা বাংলায় বিহারের সংস্কৃতির আমদানি করা হচ্ছে। কালীপুজোয় তো শ্যামাসঙ্গীত বা দুর্গাপুজোয় মহিষাসুরমর্দিনী বাজাতে শোনা যায় না। এমনিতেই রেলে বাঙালি অফিসার নিয়োগ হয় না। আর এবারের পরিস্থিতি যেন সব সীমা অতিক্রম করল।’’ রেলের এই কাজের সমালোচনা শোনা গিয়েছে, জাতীয় বাংলা পরিষদের সভাপতি চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাসের গলাতেও। তিনিও বলেন, ‘‘এটায় লজ্জ্বায় মাথা হেঁট হয়ে যাওয়ার কথা। বাংলার সংস্কৃতিকে শেষ করে দেওয়া হচ্ছে। অথচ কাউকে প্রতিবাদ করতে দেখা যাচ্ছে না। হিন্দু আগ্রাসন, উর্দু আগ্রাসন হচ্ছে। এটার প্রতিহত হওয়া দরকার।’’
এই ঘটনায় বিতর্ক চরম আকার নিলে পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক দীপ্তিময় দত্ত বলেন, ‘‘ট্রেন ধরার জন্য স্টেশনচত্বরে সারারাত প্রচুর মানুষ এই সময় থাকেন। স্বভাবতই ক্লান্তি তাঁদের গ্রাস করে। তা কাটাতেই গান বাজিয়ে কিছুটা উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা তাঁদের। উৎসবের মরসুমে এগুলো রেল করেই থাকে।’’
স্টেশনে এই গান বাজানোর ভিডিও ঘণ্টায় ঘণ্টায় আপলোড হচ্ছে পূর্ব, দক্ষিণ-পূর্ব রেল-সহ সমস্ত ডিভিশনের সামাজিক মাধ্যমের পেজেও। যা দেখে রেলের সমালোচনা করতেও পিছুপা হচ্ছে না নেটিজেনরা। অনেকেই বলছেন, বাংলার সংস্কৃতিকে শেষ করে দিচ্ছে রেল।





