প্রবল ঘূর্ণিঝড় হয়ে অন্ধ্র উপকূলে আছড়ে পড়ার প্রক্রিয়া (ল্যান্ডফল) শুরু হয়েছে মোন্থার। সে রাজ্যে ইতিমধ্যে উচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে ঝড় হবে না। তবে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়বে। কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে ঝড়বৃষ্টির জন্য সতর্কতা জারি করা হয়েছে। কোনও কোনও জেলায় রয়েছে ভারী বৃষ্টির পূর্বভাস। বুধবার থেকে উত্তরবঙ্গেও ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
আরও পড়ুনঃ চন্দননগর ইতিহাসে বড় বিপর্যয়! হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল ৭৫ ফুটের বড় জগদ্ধাত্রী; জখম ২
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের প্রকাশিত বুলেটিন বলছে, শেষ ছ’ঘণ্টায় বঙ্গোপসাগরের উপর দিয়ে ১৫ কিলোমিটার গতিতে উত্তর এবং উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়েছে মোন্থা। এ বার অন্ধ্র উপকূলে প্রবল ঘূর্ণিঝড় হয়ে তার আছড়ে পড়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। মছলিপত্তনম এবং কলিঙ্গপত্তনমের মাঝে কাকিনাড়ার কাছে তার ল্যান্ডফল প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আগামী তিন থেকে চার ঘণ্টা চলবে এই প্রক্রিয়া। তার পরে ক্রমশ উত্তর এবং উত্তর-পশ্চিম দিকে এগিয়ে যাবে। ভারতীয় মৌসম ভবন (আইএমডি) জানিয়েছে, ল্যান্ডফলের সময়ে ঝড়ের গতি থাকবে প্রায় ৯০-১০০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা। দমকা ঝড়ের গতি হতে পারে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১১০ কিলোমিটার।
এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে এ রাজ্যেও ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। কয়েকটি জেলায় হতে পারে ভারী বৃষ্টি। বুধবার দক্ষিণবঙ্গের সব জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি এবং দমকা ঝোড়ো হাওয়ার জন্য হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এর মধ্যে দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রামে হতে পারে ভারী (৭ থেকে ১১ সেন্টিমিটার) বৃষ্টি। বৃহস্পতিবার পুরুলিয়া, পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ জেলাতে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। সব জেলাতেই বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির সঙ্গে ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার গতিবেগে দমকা বাতাস বইবে। ৩১ অক্টোবর, শুক্রবার পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে ভারী বৃষ্টি বিক্ষিপ্ত ভাবে হবে।
উত্তরবঙ্গেও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা রয়েছে। বুধবার জলপাইগুড়ি, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদহে বজ্রপাত এবং ঝড়বৃষ্টির জন্য হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকে উত্তরবঙ্গে বৃষ্টি বাড়বে। ওই দিন দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদহে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বাকি জেলাতেও রয়েছে ঝড়বৃষ্টির সতর্কতা। শুক্রবার দার্জিলিং, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, জলপাইগুড়িতে অতি ভারী বৃষ্টির (৭ থেকে ২০ সেন্টিমিটার) আশঙ্কা রয়েছে। ওই দিন ভারী বৃষ্টি হবে মালদহ এবং উত্তর দিনাজপুরেও।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উত্তাল থাকবে সমুদ্র। ইতিমধ্যেই দক্ষিণ ও মধ্য বঙ্গোপসাগর এবং উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে যেতে নিষেধ করা হয়েছে মৎস্যজীবীদের। মঙ্গলবারের মধ্যে বাংলার উপকূলে মৎস্যজীবীদের ফিরে আসতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বাংলার উপকূলে সমুদ্রে যেতে মৎস্যজীবীদের বারণ করা হয়েছে।
