শিবনাথ প্রধান, সাঁতরাগাছি, হাওড়াঃ
ভূবিজ্ঞানীরা যে সতর্কতার কথা বলছেন, তাতে আশঙ্কার মেঘ ঘনীভূত হয়েছে হিমালয় সংলগ্ন অংশ, উত্তরপূর্ব ভারত ও পশ্চিমের রাজ্য গুলোতে। ভূতত্ত্ববিদ এবং আবহাওয়া বিজ্ঞানীরা হিমালয়ে বড় ধরনের ভূমিকম্পের আশঙ্কা করছেন। এই সংক্রান্ত বিস্তারিত আপডেট পূর্বেই উল্লেখ করেছি।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ভারতীয় টেকটনিক প্লেট প্রতিবছর ৫ সেমি করে সরে যাচ্ছে। এর ফলেই উত্তরাখণ্ড এবং হিমাচল প্রদেশ বড় ভূমিকম্পের মধ্যে পড়তে পারে। বর্তমানে পৃথিবী পৃষ্ঠের বিভিন্ন প্লেট গতিশীল। বাদ নেই ভারতীয় প্লেটও। এর ফলে হিমালয়ের ওপরে চাপ তৈরি হচ্ছে। যে কারণে বড় ভূমিকম্পের সম্ভাবনা বাড়ছে।
ভারতের কিছু অংশে ৭.৫ এর বেশি মাত্রার ভূমিকম্প হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিজ্ঞানীরা। আগামী এক-দুই বছর থেকে এক-দুই দশকের মধ্যে এই ভূমিকম্প হতে পারে । ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল হিসেবে আন্দামানের পাশাপাশি হিমালয় থাকার সম্ভাবনা।
কলকাতার নীচেই পাতা রয়েছে মারণ ফাঁদ। যার পোশাকি নাম ইয়োসিন হিঞ্জ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন শহরের নীচে সাড়ে চার কিলোমিটারের মধ্যেই রয়েছে এই ‘গ্র্যাভিটি ফল্ট’৷ ছোটখাটো কম্পনই এই ইওসিন রেঞ্জে বড় ধাক্কা দিতে পারে। যার ফলে বড় ভূমিকম্পের সম্ভাবনা সবসময় রয়েছে তিলোত্তমার বুকে।
আরও পড়ুনঃ রহস্যে ঘেরা আমাদের এই পৃথিবী; আঞ্জিকুনি রহস্য, কানাডা
বালি, কাদামাটি, পলি এবং পচা গাছপালার এই স্তরটি ভূপৃষ্ঠ থেকে সাড়ে সাত কিলোমিটার গভীর পর্যন্ত বিস্তৃত। এর মাঝখানে রয়েছে জলরাশি রয়েছে। যার মধ্যে অনেকগুলি খুব অগভীর এবং পৃষ্ঠ থেকে এক থেকে সাত মিটারের মধ্যে অবস্থিত। মাটির নীচেটা যে কত গোলমেলে তার সাক্ষী বৌবাজারই। পাশাপাশি গোদের ওপর বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে অপরিকল্পিত নগরায়ন। কারণ হিসেবে উঠে আসছে হু হু করে জলস্তর নেমে যাওয়া, জলা বুজিয়ে বহুতল, ভূমিকম্পের কথা মাথায় না রেখে একের পর এক বহুতল তৈরির মতো সমস্যা। সমীক্ষা বলছে, মাত্র ৭% বাড়ি তৈরি হয়েছে নিয়ম মেনে। পুরোনো বাড়িতে রেট্রোফিটিংয়ের কোনও বন্দোবস্তই নেই। ভূমিকম্প হলে দৌড়ে নিরাপদে পৌঁছনোর জায়গাও প্রায় নেই।
গত দশ বছরে একাধিকবার কেঁপে উঠেছে বাংলার নীচের মাটি। ভূমিকম্পের রিস্ক জোনের তৃতীয় ক্যাটাগরির মধ্যে পরে কলকাতা। অবশ্য পরিস্থিতি অনুসারে সামান্য ৫ বা তার অধিক মাত্রায় কম্পন কলকাতা সহ গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের বড় ক্ষতিসাধন করতে পারে বা ভয়াবহ বিপর্যয় ঘটাতে পারে অপরিকল্পিত নগরায়নের ফলে ।
সামনে বিপদ তো রয়েছেই । কি হবে তা প্রকৃতিই একমাত্র জানেন। শুধু আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।





