কুশল দাশগুপ্ত, শিলিগুড়ি:
ভিনরাজ্যে (মূলত বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে) বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের লাগাতার হেনস্থা ও নির্যাতনের খবর জনসম্মুখে আসতেই, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে, বাঙালি অস্মিতাকে হাতিয়ার করে জোরকদমে ময়দানে নেমেছে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। এখনও এই ইস্যু নিয়ে আওয়াজ তোলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে দলের সেনাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, সকলেই।
আরও পড়ুনঃ উত্তরবঙ্গে সেতু তৈরি করতে গিয়ে বিপত্তি! প্রাণে বাঁচালেন শ্রমিকরা
এমন পরিস্থিতিতে মাস তিনেক আগে শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেবের তরফ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল যে হোর্ডিং লিখতে হবে বাংলায়। শুধু তাই নয়, এর সঙ্গে এটাও পরিষ্কার করে দেওয়া হয়েছিল যে নির্দেশ মানা না হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ডেডলাইন দেওয়া হয়েছিল মহালয়া পর্যন্ত। কিন্তু কড়া নির্দেশ সত্ত্বেও তা মনে হচ্ছে না। বলা ভালো, পুরসভার নির্দেশকে রীতিমতো বুড়ো আঙ্গুল দেখানো হচ্ছে।
শিলিগুড়ি বিধান মার্কেটের অধিকাংশ দোকান বাংলায় হোর্ডিং লিখলেও এখনও বহু দোকান রয়েছে যাদের হোর্ডিং রয়েছে ইংরেজিতে। এমনকি এই সংক্রান্ত একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে পুরসভা সহ ‘টক টু মেয়র’এও। কিন্তু তাতেও যেন কোন লাভ হয়নি। বলতে গেলে, অজস্র অভিযোগ জমা পড়া সত্ত্বেও নড়েচড়ে বসেনি স্থানীয় প্রশাসন।
আরও পড়ুনঃ কোচবিহারের রাসমেলা জ়ুবিনময়, বিতর্ক শাসকের অন্দরে
যেই দোকানগুলি এখনও পর্যন্ত বাংলায় হোর্ডিংয়ের নির্দেশ মানেনি, তাদের জিজ্ঞেস করা হলে জবাবে মিলছে ‘এইতো করব’। অনেকেই জানিয়েছেন যে এখনও সমস্ত দোকানে বাংলায় বোর্ড লাগানো হয়নি, অথচ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে অনেকদিন আগে। সেই নববর্ষের সময় থেকে। এমনটা ঘটার জেরে বিরোধীদের তরফ থেকে শুরু হয়েছে কটাক্ষ করা। তাদের বক্তব্য, কেউ মানেনা মেয়রের নির্দেশ। এখানেই শেষ নয়, আরও বলা হচ্ছে যে মানুষের ভরসা নেই এই নির্দেশের উপর।
এই নির্দেশ অমান্যের বিষয়টি যে একেবারেই ভালো সংকেত নয় ঘাসফুল শিবিরের জন্য, তা বলাই বাহুল্য। বলতে গেলে, এটা একপ্রকার ধাক্কা শাসক শিবিরের জন্য। শিলিগুড়ি বর্তমানে শাসকদলের শক্তঘাঁটিগুলির মধ্যে অন্যতম এবং সেখানেই মেয়রের নির্দেশকে অনেকে মানছেন না, বিষয়টি একেবারেই ভালো দেখাচ্ছে না রাজনৈতিক মহল। সেক্ষেত্রে মেয়র সহ স্থানীয় প্রশাসনের কাছে এই মুহূর্তে একটাই রাস্তা এবং সেটা হল যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ১০০ শতাংশ দোকান যাতে বাংলায় হোর্ডিং ব্যবহার করে, তা নিশ্চিত করা। এক্ষেত্রে এটাও দেখার যে এই বিষয়ে কি ব্যবস্থা নেওয়া হয় এবার স্থানীয় প্রশাসনের তরফ থেকে।