নব্বইয়ের দশকে জন্মানো কমবেশি অনেকের শৈশবের সঙ্গে জড়িয়ে পার্লে-জি বিস্কুট। ৫ টাকার বিস্কুটের প্যাকেট কত শিশুর যে বায়না মিটিয়েছে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। আজও একইভাবে কদর রয়েছে এই বিস্কুটের। কিন্তু রাতারাতি যদি শোনেন এই বিস্কুটের দাম ৫০০ গুণ বেড়ে গিয়েছে! যদিও বাস্তবে এমনটাই হয়েছে। ভারত থেকে প্রায় ৪৭৫২ কিলোমিটার দূরে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় এই বিস্কুট বিকোচ্ছে প্রায় ২৪ ইউরোয়। ভারতীয় মূল্যে যা ২৪০০ টাকার কাছাকাছি।
আরও পড়ুন: বরিয়ান যোগের পর পরিঘ যোগ, শুক্লা দ্বাদশীতে উন্নতি এই চার রাশির
সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে গাজার এক বাসিন্দা এমন তথ্য সামনে এনেছেন। ওই ব্যক্তি তাঁর ছোট্ট মেয়ের জন্য কিছু খাবার সংগ্রহ করতে গিয়েছিলেন। অবশেষে ২৪ ইউরো খরচ করে মেয়ের জন্য এক প্যাকেট বিস্কুট সংগ্রহ করতে সক্ষম হন তিনি। ওই ভাইরাল ভিডিওতে তিনি বলছেন, “দীর্ঘ অপেক্ষার পর অবশেষে রফিকের প্রিয় বিস্কুটের প্যাকেট সংগ্রহ করতে পেরেছি। যদিও ১.৫ ইউরোর এই বিস্কুট কেনার জন্য ২৪ ইউরো খরচ করতে হয়েছে।”
শুধু বিস্কুট নয়, যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় নিত্য প্রয়োজনীয় বেশকিছু জিনিসের দাম আকাশ ছুঁয়েছে। ভারতীয় মূল্যে ১ কেজি চিনি প্রায় ৪ হাজার ৯১৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে গাজায়। ১ লিটার রান্নার তেলের দাম প্রায় ৪ হাজার ১৭৭ টাকা, ১ কেজি আলু বিকোচ্ছে প্রায় ১ হাজার ৯৬৫ টাকায়, পিঁয়াজ প্রতি কেজি প্রায় ৪ হাজার ৪২৩ টাকা, ১ কাফ কফির মূল্য প্রায় ১ হাজার ৮০০ টাকা।
মূলত বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে গাজায় ত্রাণ সামগ্রী পাঠানো হচ্ছে। সেই ত্রাণের অংশ হিসাবেই ভারত-সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী পৌঁছচ্ছে গাজায়। কিন্তু সেই ত্রাণ সামগ্রী সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছনোর আগেই লুট হয়ে যাচ্ছে। হামাস জঙ্গিরা এসব খাদ্য সামগ্রী লুট করে কালোবাজারে বিক্রি করে দিচ্ছে বলে অভিযোগ। যার ফলে ফ্রিতে যে সকল খাদ্য সামগ্রী সাধারণ মানুষের হাতে যাওয়ার কথা, সেসব নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস বিশাল অঙ্কের টাকা দিয়ে কিনতে হচ্ছে।
আরও পড়ুন: আসছে নতুন ইন্টারনেট পরিষেবা! ভারতের টেলিকম ফুলদানির নতুন ফুল
উল্লেখ্য, এক রিপোর্টে গাজার সাম্প্রতিক করুণ ছবি তুলে ধরা হয়েছে। দাবি করা হয়েছে, গাজার ২০ লক্ষ বাসিন্দার মধ্যে বেশিরভাগই ভয়ংকর অপুষ্টির শিকার। ত্রাণ না পৌঁছলে মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সেখানে ১৪ হাজার শিশুর মৃত্যুর আশঙ্কা প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রসংঘ। যদিও এর পরই গাজার ত্রাণ পাঠানোর অনুমতি দেয় ইজরায়েল। তবে উত্তর গাজায় ত্রাণ পাঠানোর অনুমতি দেওয়া হয়নি ইজরায়েলের তরফে। কারণ ওই অঞ্চলে গাজার বাসিন্দাদের উচ্ছেদের কাজ শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে গাজায় নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির বিষয়টি সামনে এল।