নিজস্ব প্রতিনিধি, যশপাল সিং, ত্রিপুরা:
ত্রিপুরা বিধানসভার বিরোধী দলনেতা জিতেন্দ্র চৌধুরী মঙ্গলবার স্পিকারের কাছে একটি প্রিভিলেজ মোশন দায়েরের আবেদন করেছেন। তার অভিযোগ, সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রী রতন লাল নাথ বাজেট আলোচনার সময় অত্যন্ত অবমাননাকর এবং বর্ণবিদ্বেষমূলক মন্তব্য করেছেন, যা বিধানসভার শালীনতা লঙ্ঘন করেছে এবং একটি নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীর প্রতি অসম্মানজনক। চৌধুরী অভিযোগ করেন যে মন্ত্রীর মন্তব্য সাংবিধানিক সমতার নীতির ওপর আঘাত হেনেছে এবং গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের শালীন আলোচনার পরিবেশকে নষ্ট করেছে। তার দাবি, মন্ত্রীর বক্তব্য বিধানসভার মর্যাদাকে ক্ষুণ্ন করেছে এবং তা সংসদীয় শিষ্টাচারবিরোধী। বিরোধী সদস্যরা তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে দাবি করেন, রতন লাল নাথকে তার মন্তব্য প্রত্যাহার করতে হবে এবং প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। চৌধুরী তার পিটিশনে স্পিকারের কাছে অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান। স্পিকার বিষয়টি পর্যালোচনা করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। বিধানসভার বাইরে রাজনৈতিক উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পায়। বিরোধী নেতারা অভিযোগ করেন, মন্ত্রীর মন্তব্য ত্রিপুরার মানুষের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করতে পারে। নাগরিক অধিকার সংগঠন এবং ছাত্র সংগঠনগুলোও এই মন্তব্যের নিন্দা জানিয়ে মন্ত্রীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপের দাবি জানায়।
আরও পড়ুন: ছাগলকে মুখ বেঁধে ‘যৌন নির্যাতন’, পলাতক অভিযুক্ত
অন্যদিকে, মন্ত্রী রতন লাল নাথ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তার বক্তব্যকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। তিনি দাবি করেন, তার মন্তব্যে বর্ণবিদ্বেষের কোনো উদ্দেশ্য ছিল না এবং বিরোধীরা রাজনৈতিক স্বার্থে বিষয়টি ইচ্ছাকৃতভাবে বাড়িয়ে তুলছে।
আইন বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, প্রিভিলেজ মোশন একটি গুরুতর বিষয়। এটি গ্রহণ করা হলে মন্ত্রীর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হবে এবং প্রমাণিত হলে তার বরখাস্তের মতো শাস্তিও হতে পারে।
বিরোধীরা জানিয়েছেন, মন্ত্রীর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ না নেওয়া পর্যন্ত তারা তাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। পাশাপাশি এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিধানসভায় শালীন এবং দায়িত্বশীল ভাষার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: দার্জিলিং সদর হাসপাতালের সহকারি সুপারের ওপর প্রাণঘাতী হামলা , গ্রেপ্তার
সবশেষে জিতেন্দ্র চৌধুরী বলেন, “এটি কেবল একটি মন্তব্যের বিষয় নয়, বিধানসভার মর্যাদা রক্ষা এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত করার লড়াই। স্পিকারের উচিত কঠোর পদক্ষেপ নিয়ে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের মূল্যবোধ অক্ষুণ্ণ রাখা।” এখন সমস্ত নজর স্পিকারের সিদ্ধান্তের দিকে, যা ত্রিপুরার রাজনৈতিক এবং আইনসভা সংস্কৃতিতে দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলতে পারে।