কসবা কাণ্ডে রাজ্য রাজনীতিতে যখন চাঞ্চল্য তুঙ্গে, ঠিক তখনই ফের শাসকদলের ছাত্র সংগঠনের আর এক নেতার বিরুদ্ধে উঠল যৌন হেনস্থার গুরুতর অভিযোগ। অভিযুক্ত সৌভিক রায়, টিএমসিপি-র রাজ্য সহসভাপতি। অভিযোগ, কলেজের পড়ুয়াদের জোর করে প্যান্ট খুলে যৌনাঙ্গ দেখতে বাধ্য করতেন তিনি। এমনকি র্যাগিংয়ের সেই দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করে রাখার অভিযোগও উঠেছে।
আরও পড়ুন: বর্ষার শুরুতেই কলকাতায় কলেরার হানা! আক্রান্ত পিকনিক গার্ডেনের যুবক
অভিযোগ এনেছে বামপন্থী ছাত্র সংগঠন এসএফআই। তাদের দাবি, হাওড়ার নরসিংহ কলেজে পড়ুয়াদের উপর দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাতেন সৌভিক রায়। র্যাগিংয়ের নামে যৌন নিপীড়নের প্রতিবাদে ২০২৩ সালেই হাওড়া জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতির কাছে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছিল।
একই চিঠির কপি পাঠানো হয় টিএমসিপি রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য, ব্যাঁটরা থানা ও অ্যান্টি র্যাগিং কমিশনের কাছেও। তবুও এখনও পর্যন্ত সৌভিকের বিরুদ্ধে কোনও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলেই অভিযোগ।
কসবা কাণ্ডের আবহে সম্প্রতি এক প্রাক্তন ছাত্র একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিস্ফোরক অভিযোগে বলেন, “রাত আটটার পর ইউনিয়ন রুমে থাকতে বলা হত। তখন সৌভিকদা প্যান্ট খুলতে বলত, আমাদের যৌনাঙ্গ দেখত। কখনও ভিডিও করত, কখনও ছ্যাঁকা দিত বা প্যান্টে জল ঢেলে দিত। প্রতিবছর নতুন ছাত্রদের সঙ্গে এমন করত। আমরা একাধিকবার তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্যকে জানিয়েছিলাম, কিন্তু কিছুই হয়নি।” তবে এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ছাত্র নেতার কোনও প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি।
আরও পড়ুন: জলের দরে ব্রডব্যান্ড! ভারতের ইন্টারনেটে নিঃশব্দ বিপ্লব
প্রসঙ্গত, কসবা কাণ্ডে অভিযুক্ত মনোজিতের বিরুদ্ধে একাধিক যৌন হেনস্থার অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও দলে তার অবস্থান অটুট ছিল, এমন অভিযোগ উঠেছিল। সম্প্রতি যা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্বয়ং তৃণমূল সাংসদ ও প্রবীণ আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কড়া প্রশ্ন, “নেতারা যদি এভাবে ব্যবহার করেন, তবে মহিলা কর্মীরা রাজনীতিতে কীভাবে আসবেন?”
যদিও হাওড়ার প্রসঙ্গে টিএমসিপির রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, “এ ধরনের কোনও অভিযোগ আমার কাছে লিখিতভাবে আসেনি।” তবে ছাত্র মহলের প্রশ্ন—একাধিক জায়গায় অভিযোগ জমা পড়ার পরেও কেন কোনও তদন্ত হয়নি? যৌন নির্যাতনের গুরুতর অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও সৌভিক এখনও কীভাবে পদে বহাল রয়েছে, তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।