Wednesday, 30 April, 2025
30 April, 2025
HomeদেশPahalgam Terror Attack: বুক বাজিয়ে মাওবাদী নিকেশের দাবি করলেও কাশ্মীরে জঙ্গি দমনে...

Pahalgam Terror Attack: বুক বাজিয়ে মাওবাদী নিকেশের দাবি করলেও কাশ্মীরে জঙ্গি দমনে ছাতি চুপসে যাচ্ছে; তাহলে কি কাশ্মীরে শান্তি ফেরাতে কেন্দ্র পুরোপুরি ব্যর্থ? 

নতুন করে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তাহলে কি কাশ্মীরে শান্তি ফেরাতে কেন্দ্র পুরোপুরি ব্যর্থ?

ছত্তীসগড়ে মাওবাদী বিরোধী অভিযান নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বুক বাজিয়ে বলে বেড়াচ্ছেন, এদেশ থেকে নকশালপন্থীদের নির্মূল করে ছাড়বেন। সেই মতো একের পর এক অভিযানে বহু মাওবাদীর সংঘর্ষে মৃত্যু হয়েছে। আরও বহু নকশালপন্থী অস্ত্র সমর্পণ করতে বাধ্য হচ্ছে। জঙ্গল সংঘর্ষে বিশেষ প্রশিক্ষিত কোবরা বাহিনীর একের পর এক অভিযানে মাওবাদীরা ছন্নছাড়া হয়ে পড়েছে। কিন্তু, সেই একই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাশ্মীরে জঙ্গি উপদ্রব কমানোর কাজে ছাতি চুপসে যাচ্ছে কেন?

আরও পড়ুন: কে এই সইফুল্লা! পহেলগাঁও হামলার মূল চক্রী

কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বিলোপের মতো ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত এবং তার পরবর্তীতে শান্তিপূর্ণভাবে বিধানসভা নির্বাচন পর্যন্ত দীর্ঘদিন ধরে কাশ্মীর মোটের উপর শান্তই ছিল বলা যায়। যদিও এর মধ্যেও বেশ কয়েকবার জঙ্গিরা ছোটবড় হামলা চালানোয় বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু, মঙ্গলবারের জঙ্গি হামলার পর ফের নতুন করে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তাহলে কি কাশ্মীরে শান্তি ফেরাতে কেন্দ্র পুরোপুরি ব্যর্থ?

অন্ধ্রপ্রদেশ, ছত্তীসগড় ও মহারাষ্ট্র-কর্নাটকের সীমান্তবর্তী এলাকায় এবং পশ্চিমবঙ্গের জঙ্গল মহলেও একসময় মাওবাদীরা দাপিয়ে বেড়াত। পৃথক ধাঁচের রাষ্ট্রব্যবস্থা গঠনের লক্ষ্য নিয়ে হাজার হাজার দেহাতি মানুষ হাতে অস্ত্র তুলে নিয়েছিল। মাওবাদীরা অস্ত্র সংগ্রহ করত বিভিন্ন পদ্ধতিতে। কিন্তু তাতে সরাসরি পাকিস্তানের চর সংস্থা আইএসআই প্রত্যক্ষভাবে নাক গলাতে পারেনি। অনুন্নয়ন, আদিবাসীদের প্রতি উচ্চবর্ণীয় রাজনীতিকদের বঞ্চনা, শোষণের বিরুদ্ধে লড়াই তীব্র হয়ে উঠলেও রাজ্য ও কেন্দ্র সরকার উভয়ে মিলে জঙ্গল মহলের গ্রামবাসীদের ভরসা-আশ্বাস জুগিয়েছিল। উন্নয়ন যেমন, রাস্তাঘাট তৈরি, বিদ্যালয় গঠন, রুজি-রোজগারের ব্যবস্থা, পথঘাট ও গ্রামাঞ্চলে আলোর সংস্থান প্রভৃতি দিয়ে মাওবাদীদের সঙ্গে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিচ্ছিন্নতা গড়ে তুলে সাফল্য অর্জন করেছে সরকার।

কিন্তু কাশ্মীরের পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন। কাশ্মীরের জঙ্গিপনা ও সন্ত্রাসবাদের জড় লুকিয়ে আছে সেই স্বাধীনতার সময় ভারতভাগ থেকে। কয়েকদিন আগেই পাকিস্তানের সেনাপ্রধানও এক অনুষ্ঠানে দাবি করেছিলেন যে, কাশ্মীর তাদের অংশ। ভারত প্রথম থেকে কাশ্মীরকে দেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে এলেও যুগ যুগ ধরে তা কাশ্মীরবাসীকে বিশ্বাস করাতে ব্যর্থ হয়েছে।

আরও পড়ুন: হঠাৎ মহানন্দায় ভেসে উঠল অজস্র মরা মাছ, কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা

মাওবাদীদের মতো কাশ্মীরি জঙ্গিরা পৃথক সমাজ ব্যবস্থার দাবিতে লড়াই করছে না। তাদের লড়াই কাশ্মীর দখলের। আর এর প্রত্যক্ষ মদতদাতা পড়শি দেশের গোটা সেনাবাহিনী ও তাদের প্রশিক্ষিত চর বাহিনী। পাক অধিকৃত কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর একের পর এক জঙ্গি তালিম শিবিরে নিয়মিত প্রশিক্ষণ চলছে। সেই সব জঙ্গি গড়ার কারখানায় ভুয়ো জেহাদের নামে ভারত বিরোধী একটি ঘৃণা ছড়িয়ে দেওয়ার কাজ চলছে।

জম্মু-কাশ্মীরের সাধারণ মানুষ একদিন যাঁরা ভারত বিরোধী স্লোগান তুলেছিলেন, আজ আর তাঁরাও এই জঙ্গিদের পাশে নেই। সে কারণে বেশ কয়েক বছরের মধ্যে ধীরে ধীরে শান্ত হয়ে আসছিল ভূস্বর্গ। সারা দেশের তো বটেই, বিদেশের মানুষও কাশ্মীর ভ্রমণে আসতে শুরু করেছিলেন। তাই স্থানীয় মানুষের মনে তৈরি হচ্ছিল ফের নতুন করে ব্যবসাপাতির স্বপ্ন। আর সে কারণেই বাইরে থেকে জঙ্গি ঢুকিয়ে হামলা চালানোর কৌশল নেয় জঙ্গিরা।

আন্তর্জাতিক চাপে পাক জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তোইবা এবং জয়েশ-ই-মহম্মদের প্রত্যক্ষ কাজকারবারে বাঁধ দিয়ে রেখেছে পাক সরকার। তা না হলে চিন এবং আন্তর্জাতিক অনুদান থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই এই সংগঠনগুলি এখন দ্য রেজিস্ট্যান্স বাহিনীর মতো ছোট ছোট ছায়া সংগঠন খুলে কাজ চালাচ্ছে।

মঙ্গলবারের হামলার কয়েকদিন আগে থেকেই নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর গোলা বর্ষণ চালাচ্ছে পাক বাহিনী। যা যুদ্ধবিরতি চুক্তিকে ভঙ্গ করে। কিন্তু, পাকিস্তানের গোলা বর্ষণের অর্থই অনুপ্রবেশ। গোলা বর্ষণের আড়ালেই সীমান্ত পেরিয়ে জঙ্গি ঢোকায় পাক বাহিনী। এবারেও সম্ভবত তাই ঘটেছে। কয়েকটি অনুপ্রবেশের ছক ফাঁস হওয়ায় হামবড়াই করে ফলাও প্রচার করা হলেও ফাঁক গলে যে জঙ্গিরা বাসা বেঁধেছিল তা পুরোপুরি নিশ্চিত। যা দেশের গোয়েন্দা বাহিনীর পুরোপুরি ব্যর্থতা বলেই অনেকে মনে করছেন। সুতরাং, মাওবাদী নিকেশের কাজ সহজ, কিংবা মায়ানমারের মতো আপেক্ষিকভাবে দুর্বল দেশের প্ররোচনায় মণিপুর হিংসা থামাতে কেন্দ্র সফল হলেও পাকিস্তানের চক্রান্তের সামনে এখনও সমাধানের পথ হাতড়ে বেড়াচ্ছে।

এই মুহূর্তে

আরও পড়ুন