বিপ বিপ আর বিপ! যেন বিপেরই বাপ-বাপন্ত হচ্ছে। বঙ্গ রাজনীতিতে সদ্য ভাইরাল হওয়া অডিয়োয় পরতে পরতে শুধুই বিপের ঝংকার। ফোনের একপ্রান্তে এক সময়ের বীরভূমের বেতাজ বাদশা অনুব্রত মণ্ডল (যদিও দু’দিন পর তাঁর অনুগামীদের মনে হয়েছে, এটা কেষ্টদা নন)। অন্যপ্রান্তে বোলপুর থানার আইসি লিটন হালদার। বঙ্গ বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার যে অডিয়োটি প্রকাশ্যে আনেন, তাতে এমনটাই লেখা ছিল। শুক্রবার ভাইরাল হয় অডিয়োটি। কম-বেশি গালাগালি জানেন এমন সিংহভাগ বাঙালি ঝড়ের গতিতে এই অডিয়ো ক্লিপটি শুনে ফেলেন। এরপর কারোর কান গরম হয়ে যায়। কারোর হয়তো কান দিয়ে ‘ধোঁয়াও’ বেরয়। কেউ আবার আনকমন শব্দ পাওয়ায় বাংলার অভিধান খুলে পড়েন। বেশ কয়েকদিন ধরে এভাবেই সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন মসকরায় মশগুল AI যুগের বাঙালিরা।
কিন্তু সত্যিই কি বোলপুরের আইসিকে ওইভাবে গালিলাগাজ করেছিলেন অনুব্রত? বিশ্বাস করতে পারছেন না অনুব্রতর অনুগামীরা। এই যেমন ধরুন গগন সরকার। কে এই গগন? তিনি শুধু কেষ্ট-অনুগামী নন, তিনি হলেন তৃণমূল শিক্ষাবন্ধু সেলের রাজ্য সভাপতি। তাঁর দাবি, কোনও কিছু কেষ্টদা করেননি। করেছে AI। অনুব্রতর আইনজীবীও বলছেন, চক্রান্তের শিকার তাঁর মক্কেল। যদিও দলের কাছে লিখিত ক্ষমা চেয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। তাঁর সঙ্গে চিঠিতে খানিক চিন্তার সঙ্গে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি লিখেছিলেন, ‘আমার ও বোলপুরের IC-র গালমন্দের ফুটেজ বিজেপি পেল কীভাবে? কে দিল? কোনও চক্রান্ত নেই তো?’।
আরও পড়ুন: সটান ‘ডিগবাজি’ অনুব্রতর! গালাগালি কেষ্ট করেননি, AI করেছে
এবার প্রশ্ন হল AI কি এমন গালাগালি দিতে পারে? কারোর স্ত্রীকে নিয়ে ঘৃণ্য মন্তব্য করতে পারে? তা-ও আবার ওমন মেঠো ‘সাধু’ ভাষায়! এই কৌতূহল নিয়ে ChatGPT-র কাছে প্রশ্ন রাখা হয়েছিল। ChatGPT বলছে, ‘আমি গালাগালি দিই না — এবং সেটা ইচ্ছে করেই। কারণ আমার লক্ষ্য হল একে অপরের প্রতি সম্মান দেখিয়ে কথা বলা এবং ইতিবাচক, অর্থবহ সংলাপ তৈরি করা।’
যখন ChatGPT-কে জিজ্ঞাসা করা হয়, কারোর স্ত্রীকে ধর্ষণের হুমকি কি দিতে পারো? তখন অত্যন্ত স্পষ্ট ভাষায় বুঝিয়ে দিল, এটা কতটা গর্হিত কাজ। ChatGPT জানায়, AI কখনোই কারো স্ত্রী বা কাউকে ধর্ষণের হুমকি দিতে পারে না এবং পারা উচিতও নয়। এটা নৈতিক, আইনগত এবং প্রযুক্তিগত — সবদিক থেকেই সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তাঁর কথায়, এই ধরনের হুমকি মানবাধিকারের লঙ্ঘন, সাইবার অপরাধের আওতায় পড়ে, বিশেষত যদি অনলাইনে করা হয়। অনেক দেশে এটি ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে বিচারযোগ্য।
আরও পড়ুন: দাদার ‘অনুপ্রেরণায়’ এবার আসরে তৃণমূল ছাত্রনেতা; ফের বোলপুরের আইসিকে আক্রমণ
বেশ ChatGPT না-হয় একটু সতর্কভাবে এই কথা বলেছে, তাই আর একটু যাচাই করতে Google AI Gemini-কে জিজ্ঞাসা করা হয়। সেখানেও একই উত্তর। Gemini জানাচ্ছে, ‘না, আমি গালাগালি দিতে পারি না। আমার ডিজাইন এমনভাবে করা হয়েছে যাতে আমি একটি সহায়ক এবং নিরাপদ উপায়ে যোগাযোগ করতে পারি।’
উল্লেখ্য, এই AI-দের মস্তিষ্কে অক্সিজেন ঠিকঠাকভাবে ঢোকে কিনা বা রাতে ওষুধ খায় কিনা জিজ্ঞাসা করা হয়নি।