সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এসএসসি মামলায় ২৬ হাজার জনের চাকরি চলে গেছে। এই রায়ের পর সোমবারই নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে চাকরিহারারা সভা করেছিলেন। তাতে যোগ দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সকলের পাশে থাকার বার্তা দেন। এও বলেন, তিনি বেঁচে থাকলে কারও চাকরি যেতে দেবেন না। সোমবারের ওই সভাকে ভাঁওতা বলে কটাক্ষ করলেন বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় । তাঁর পাল্টা বার্তা, এখন থেকেই বড় আন্দোলন শুরু করতে হবে নাহলে সকলকে ডুবে মরতে হবে।
আরও পড়ুন: চাকরির পর সন্দেশে কেলেঙ্কারি! কীর্তির মাখা সন্দেশ ঘেঁটে দিলেন কল্যাণ
মঙ্গলবার সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের প্রতিনিধিরা সাক্ষাৎ করেছিলেন বিজেপি সাংসদের সঙ্গে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিজেপি নেতা তথা আইনজীবী কৌস্তুভ বাগচীও। চাকরিহারাদের সঙ্গে কথা বলে তাঁরা স্পষ্ট বার্তা দেন, তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা ছাড়া আর পথ নেই। সবাই মিলে একজোট হয়ে না লড়লে সকলে ডুবে মরবে। সেই প্রেক্ষিতেই রাস্তায় অবস্থান এবং অনশনের আহ্বান জানান তাঁরা।
অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় আগেই দাবি করেছেন, যাঁরা জালিয়াতি করে চাকরি পেয়েছেন, তাদের আলাদা করে বাছাই করা সম্ভব। এজন্য যারা সৎ ভাবে চাকরি পেয়েছেন, তাদের সুপ্রিম কোর্টে রিভিউ পিটিশন জমা দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন প্রাক্তন বিচারপতি। এদিনও চাকরিহারাদের উদ্দেশে তাঁর বক্তব্য, ”আমি বলেছিলাম একটা কমিটি তৈরি করতে। যোগ্য অযোগ্য বের করা সম্ভব। সিবিআই যে মাদার ডিস্ক বের করেছিল সেটা এসএসসি সঠিক বলে ধরুক এবং ওটাই ওয়েব পেজে আপলোড করুক। তারপর সেটা সুপ্রিম কোর্টে পেশ করুন।”
আরও পড়ুন: ‘সৌগত রায় নারদার চোর’, মন্তব্য কল্যাণের
বিজেপি সাংসদ আরও বলেন, রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এবং এসএসসি চেয়ারম্যানের উচিত বিদ্রোহ ঘোষণা করা। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় আদতে পুরোটা নিয়ন্ত্রণ করছেন। সকলের হাত-পা বেঁধে রেখেছেন তিনি। অভিজিতের কথায়, ”আগেই বলেছিলাম রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে কমিটি গঠন করুন। কিন্তু একা মুখ্যমন্ত্রী যে কমিটি বানাবেন তা মানলে চলবে না। কারণ উনি নিজের লোক ঢোকাবেন সেখানে। যেমন টাকা নিয়ে চাকরি পাইয়ে দিয়েছিলেন।”
মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়ের সরকারকে আক্রমণ করে অভিজিতের কটাক্ষ, যে সকল শিক্ষকের চাকরি গেল তাঁদের সংসার চলবে কী করে, তা সরকার ভাবে না। কোথা থেকে আসবে বাচ্চার খাওয়ার টাকা, তৃণমূল দফতর থেকে, নাকি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শাড়ির আঁচল থেকে, প্রশ্ন তোলেন তিনি। সোমবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে সভা করেছিলেন সেখান থেকে অযোগ্য শিক্ষকদের উদ্দেশে বা চাকরিচুরির ব্যবসায় জড়িতদের উদ্দেশে কোনও পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেননি, এই অভিযোগ তুলে অভিজিৎ স্পষ্ট বলেন, এটা প্রমাণিত তাঁর দলের লোকেরাই এই দুর্নীতিতে আছে। তাঁর কটাক্ষ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অঙ্গুলিহেলন ছাড়া বাংলায় একটা টাকাও চুরি হয় না।