গাজায় ইজরায়েলি গণহত্যার অভিযোগে মুম্বইয়ের আজাদ ময়দানে বিক্ষোভ করতে চেয়েছিল সিপিএম। কিন্তু অনুমতি দেয়নি পুলিশ। তার বিরুদ্ধে বম্বে হাই কোর্টে মামলা দায়ের করে তারা। শুক্রবার সেই আর্জি খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, হাই কোর্টের বিচারপতি রবীন্দ্র ঘুগে এবং বিচারপতি গৌতম অখণ্ডের ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, ‘অদূরদর্শী ভাবনা, আগে দেশপ্রেমিক হয়ে উঠুন। হাজার-হাজার মাইল দূরের বিষয় নিয়ে মাথা ঘামানোর পরিবর্তে ভারতের নাগরিকদের সঙ্গে সম্পর্কিত ইস্যুগুলির দিকে নজর দেওয়া উচিত সিপিএমের।’ হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণকে ‘সংবিধান-বিরোধী’ বলে বিবৃতি দিয়ে পাল্টা আক্রমণ করেছে সিপিএম পলিটব্যুরো।
আরও পড়ুনঃ কিছু অজানা তথ্য; আজ কার্গিল বিজয় দিবস
শুক্রবার বিচারপতি ঘুগে সিপিএমকে তীব্র ভর্ৎসনা করে বলেন, “আমাদের দেশেও বেশ কিছু সমস্যা মোকাবিলা করতে হয়… আমরা এরকম কিছু চাই না। আমি দুঃখের সঙ্গে বলতে বাধ্য হচ্ছি, আপনারা মোটেও দূরদর্শী নন… আপনারা গাজা এবং প্যালেস্তাইনের বিষয় নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন… আপনারা কেন নিজের দেশের জন্য কিছু করছেন না… দেশপ্রেমিক হয়ে উঠুন… গাজা এবং প্যালেস্তাইনের পক্ষে কথা বলা দেশপ্রেম নয়… আমাদের নিজের দেশের স্বার্থে কথা বলুন… আপনারা যা প্রচার করেন, সেটা কাজেও করে দেখান।’ হাই কোর্ট পরামর্শ দিয়েছে, আবর্জনা পরিষ্কার, নিকাশি ব্যবস্থা, বন্যার মতো বিভিন্ন বিষয়ের দিকে নজর দেওয়া উচিত সিপিএমের। বলেছে, ‘আপনারা ভারতে নথিভুক্ত একটি সংস্থা। আবর্জনা ফেলা, দূষণ, নর্দমা, বন্যার মতো ইস্যু তুলে ধরতে পারেন আপনারা। আমরা স্রেফ উদাহরণ দিচ্ছি।’ গাজা নিয়ে সিপিএম যে অবস্থান নিয়েছে, তা ভারতের বৈদেশিক নীতির থেকে পৃথক। এরকম বিক্ষোভের মারাত্মক কূটনৈতিক প্রভাব হতে পারে বলে হাই কোর্ট সতর্ক করেছে।
আরও পড়ুনঃ মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন আগেই! ফালাকাটার অঞ্জলি শীলের বাড়িতে এনআরসির নোটিশ
বিষয়টি মোটেও ভালভাবে নেয়নি সিপিএম। সরাসরি বিবৃতি দিয়ে হাই কোর্টের নিন্দা করেছে তারা। বলেছে, ‘পলিটব্যুরো কড়া ভাষায় বম্বে হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণের নিন্দা করছে। আদালত দলের দেশভক্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। হয় আদালত একটি রাজনৈতিক দলের সংবিধান প্রদত্ত অধিকার সম্পর্কে সচেতন নয়, অথবা দেশের ইতিহাস এবং স্বাধীন রাষ্ট্রের দাবিতে আন্দোলনে প্যালেস্তাইনের পাশে দাঁড়িয়ে ভারতীয়দের সহমর্মিতার কথা জানে না। কেন্দ্রীয় সরকারের রাজনৈতিক মতের প্রতি পক্ষপাতিত্ব করে এই পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। আদালত প্যালেস্তাইনের স্বাধীনতাকে সমর্থন করে চল্লিশের দশকে গান্ধীর নীতি, জাতীয়তাবাদী আন্দোলন ও স্বাধীন ভারতের বৈদেশিক নীতিকে গুরুত্ব দেয়নি। ইজরায়েলের আক্রমণের প্রতিবাদে গোটা বিশ্বে, রাষ্ট্রসংঘে ও আন্তর্জাতিক আদালতে যে নিন্দার ঝড় উঠেছে, তাও হাই কোর্টে গুরুত্ব পায়নি। এই মনোভাবের বিরুদ্ধে আমাদের পাশে থাকতে দেশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রপ্রেমী মানুষের কাছে আবেদন জানাচ্ছি