কথায় বলে বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো। বারো মাসে তেরো পার্বণের মধ্যে একটি। কিন্তু দুর্গাপুজো মানে কি শুধুই আনন্দ? মা দুর্গার কাছে শুধুই দুষ্টের দমন আর শিষ্টের পালনের আবেদন? আসলে দুর্গাপুজোর মতো UNESCO Intangible Cultural Heritage of Humanity তালিকাভুক্ত উৎসববের সঙ্গে জড়িয়ে থাকে আর্থ-সামাজিক অনেক কিছুই। যেমন দুর্গাপুজো এই বঙ্গের অর্থনীতিকে দারুণভাবে প্রভাবিত করে। ব্রিটিশ কাউন্সিলের গবেষণা বলছে, দুর্গাপুজোকে কেন্দ্র করে পশ্চিমবঙ্গের ক্রিয়েটিভ অর্থনীতি রাজ্যের মোট জিডিপির ২.৫ শতাংশের বেশি অবদান রাখে। অঙ্কটা অবশ্যই চমকে দেওয়ার মতো।
আরও পড়ুনঃ তারকেশ্বরের চাঁপাডাঙা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পর পর ৩টি গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ, পুড়ে ছাই ৬টি দোকান!
পুজোর কয়েক মাস আগে থেকেই বাড়তে থাকে সাধারণ মানুষের খরচের। বাড়তে থাকে লেনদেন। রিটেল সেক্টরে এই সময় প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা হয়। জামাকাপড় থেকে শুরু করে ইলেকট্রনিক্স পণ্য, সবকিছুর চাহিদাই থাকে তুঙ্গে। তথ্য বলছে, ২০২৩ সালে কলকাতার রেস্তোরাঁ ও বারগুলোর আয় পুজোর কয়েকদিনেই ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছিল
পুজোর সব কাজ সামাল দিতে প্রয়োজন হয় প্রচুর মানুষের। প্যান্ডেল শিল্পী থেকে কুমোরটুলির মৃৎশিল্পী, ইলেকট্রিশিয়ান থেকে ঢাকি; প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে পুজোর সময় প্রায় ৩ লক্ষ অস্থায়ী কর্মসংস্থান তৈরি হয়। পুজোর অর্থনীতি গ্রামীণ এলাকার অনেক পরিবারকে সারা বছর বেঁচে থাকার রসদ জোগায়।
আরও পড়ুনঃ নিউ ইয়র্কে পা রাখলেই গ্রেপ্তার নেতানিয়াহুকে! হুঁশিয়ারি জোহরানের
২০২১ সালে ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পাওয়ার পর থেকে কলকাতার দুর্গাপুজো এখন এক আন্তর্জাতিক পর্যটন কেন্দ্র। দেশ-বিদেশ থেকে পর্যটকরা ভিড় জমান। এর ফলে হোটেল, বিমান সংস্থা এবং স্থানীয় পরিবহণের ব্যবসাও বিপুল লাভবান হয়।
সব মিলিয়ে, দুর্গাপুজো এখন আর উৎসব নয়। এটি পশ্চিমবঙ্গের অর্থনীতির এক চালক। যা প্রতি বছর রাজ্যের লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলে।