Tuesday, 4 November, 2025
4 November
HomeদেশTribute: আজীবন আপোষহীন যোদ্ধা, ১১২ তম জন্মদিনে বীরাঙ্গনা লক্ষী সায়গল

Tribute: আজীবন আপোষহীন যোদ্ধা, ১১২ তম জন্মদিনে বীরাঙ্গনা লক্ষী সায়গল

২০০২ সালে বামপন্থী প্রার্থী হিসাবে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হন। তাঁর  জ্যেষ্ঠা কন্যা সুভাষিণী আলী প্রাক্তন সংসদ ও সিপিআইএম এর কেন্দ্রীয় নেত্রী।

অনেক কম খরচে ভিডিও এডিটিং, ফটো এডিটিং, ব্যানার ডিজাইনিং, ওয়েবসাইট ডিজাইনিং এবং মার্কেটিং এর সমস্ত রকম সার্ভিস পান আমাদের থেকে। আমাদের (বঙ্গবার্তার) উদ্যোগ - BB Tech Support. যোগাযোগ - +91 9836137343.

ভারতের স্বাধীনতা  আন্দোলনের অন্যতম সেনানী ,নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর সহযোগী ,আজীবন আপোষহীন যোদ্ধা  ক্যাপ্টেন লক্ষী সায়গল  ১৯১৪ সালের ২৪ শে অক্টোবর মাদ্রাজে জন্মগ্রহণ করেন।

তাঁর পিতা এস.স্বামীনাথন মাদ্রাজ হাইকোর্ট এর আইনজীবী ও মা অম্মু স্বামীনাথন একজন সমাজকর্মী ছিলেন। লক্ষী সায়গল মাদ্রাজের চার্চ পার্ক কনভেন্ট স্কুলে ভর্তি হন ছোটবেলায় । ছোট থেকেই তিনি খুব মেধাবী ছিলেন। প্রাথমিক পাঠ সম্পূর্ণ করে তিনি মাদ্রাজের সরকারী স্কুলে পড়া আরম্ভ করে ১৯৩০ সালে সিনিয়র স্কুল লিভিং সার্টিফিকেট পরীক্ষায় খুব ভাল ফল করে উত্তীর্ণ হন ।বিদ্যালয়ে পড়তে পড়তেই তিনি জাতীয় আন্দোলনে উদ্বুদ্ধ হন ও মায়ের অনুপ্রেরনায় মায়ের সাথে সর্বভারতীয় মহিলা সম্মেলন গুলিতে যাওয়ার সুবাদে তৎকালীন সমাজ সংস্কারে উৎসাহী হন। এর পর তিনি ভর্তি হন মাদ্রাজ সেন্ট মেরিজ কলেজে । এই কলেজে পড়ার সময়েই তিনি ও তাঁর অনেক সহপাঠী স্বাধীনতা আন্দোলনে যুক্ত হয়ে পড়েন । মেধাবী ছাত্রী লক্ষী ১৯৩২ সালে মাদ্রাজ মেডিক্যাল কলেজ এ ভর্তি হন। ১৯৩১-১৯৩২ সালে ভগৎ সিং বিচার ও ফাঁসি ছাত্র ও যুবদের ব্যাপক খোভের সঞ্চার করে । লক্ষী কলেজে হরতাল সংগঠিত করেন অ বিচারের জন্য অর্থ সংগ্রহ করেন। ১৯৩৮  সালেএম.বি.বি.এস পাস করেন ও  মাদ্রাজ কস্তুরবা গান্ধী হাসপাতালে চিকিৎসক হিসাবে যোগ দেন।

আরও পড়ুনঃ পাহাড়ের আদিবাসী কন্যার জয়যাত্রা; ইয়েলাগিরির মেয়ে শ্রীপতির অনন্য সাফল্য

তাঁর বিবাহ হয় পি এন রাও নামে এক পাইলট এর সাথে কিন্তু সেই বিবাহ স্থায়ী হয়না ,১৯৪০ সালে বিবাহ বিচ্ছেদের পর তিনি তিনি সিঙ্গাপুর এ  পাড়ি দেন।

সিঙ্গাপুর এ অবস্থানের সময় তিনি আজাদ হিন্দ বাহিনীর সদস্য দের সাথে পরিচিত হন এবং এই সময় ভারত থেকে আগত শ্রমিকদের সেবায় ক্লিনিক তৈরি করেন এবং এই সময় ভারত স্বাধীনতা সংঘে যোগ দেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ তখন চলছে ,সিঙ্গাপুর এর পতন হয়। জাপানী সেনাবাহিনী সিঙ্গাপুর দখল করে,তিনি আহত যুদ্ধবন্দিদের সেবায় যুক্ত হন।

কিন্তু এটা ঘটনা যে সেই সময় আজাদ হিন্দ বাহিনী সিঙ্গাপুরের জাপানি বাহিনীর কাছে কোন সহযোগিতা পায়নি বা অনুমোদন ও পায়নি। ১৯৪৩ সালে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু সিঙ্গাপুর এ আসেন ও বিভিন্ন সভায় আজাদ হিন্দ ফৌজ এর নারী বাহিনীর প্রয়োজনীয়তার কথা ঘোষণা করেন , লক্ষী সায়গল আজাদ হিন্দ বাহিনীর নারী রেজিমেন্ট গঠনের নীতির খসড়া দেখে আকৃষ্ট হন , ও যোগদান করেন। এই বাহিনীই পরে বিখ্যাত ঝাঁসি রানী বাহিনী নামে পরিচিতি পায়। নেতাজির উদাত্ত আহ্বানে অনেক নারী বিভিন্ন ব্রিগেড এ যুক্ত হন। ডাক্তার লক্ষী স্বামীনাথন ক্যাপ্টেন লক্ষী হন এবং পরবর্তী সারাজীবন এই নামে পরিচিত হন। আজাদ হিন্দ ফৌজ জাপানি সেনাবাহিনীর সাথে ১৯৪৪ সালের ডিসেম্বর এ বর্মা অভিমুখে রওনা দেয় ও ব্রিটিশ বাহিনীর সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হন। ১৯৪৫ এর প্রথম দিক থেকেই ইউরোপে হিটলার মুসোলিনি ও এশিয়ায় জাপান পিছু হটতে শুরু করে , আজাদ হিন্দ বাহিনীও প্রবল যুদ্ধের পর পিছু হটতে থাকে ,তখন নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নেন বাহিনী ইমফলে প্রবেশ করবে এবং প্রবেশও করে। প্রবল প্রাকৃতিক সমস্যা ও খাদ্যাভাবে লড়াই বেশিদিন স্থায়ী হয় না ,পিছিয়ে আসতে হয়। ১৯৪৫ সালে লক্ষী গ্রেপ্তার হন ও ১৯৪৬ পর্যন্ত বর্মা জেলে ছিলেন। ওই বছরেই  আই এন এ সদস্যদের বিচার চলাকালীন তিনি দিল্লি আসেন , মুক্তির পর ১৯৪৭ এর মার্চ মাসে লাহোরের প্রেম সায়গল এর সাথে তাঁর বিবাহ হয়।

বিবাহ পরবর্তী সময়ে তাঁরা কানপুর এ থাকতে থাকেন।

আরও পড়ুনঃ কোলাঘাটে শোরগোল! পাঁচ বছরের শিশুকন্যাকে ধর্ষণ, অভিযুক্ত ১৪ বছরের কিশোর

সেখানে চিকিৎসক হিসাবে ভারত ভাগের ফলে আগত ছিন্নমূল মানুষের সেবা করেন। ১৯৭১ সালে সায়গল সিপিআইএম এ যোগদান করেন ও রাজ্য সভায় দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে তাঁর ভূমিকা উল্লেখযোগ্য ,তিনি উদ্বাস্তু শিবির পরিচালনা করেন ও কলকাতায় সব হারিয়ে আসা মানুষের সেবায় নিয়োজিত হন। তিনি সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে অন্যতম। ১৯৮৪ সালে শিখ বিরোধী দাঙ্গার সময় কানপুর উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেন ও ভূপাল গ্যাস দুর্ঘটনার সময় চিকিৎসক দলের নেতৃত্ব দেন।

২০০৬ সাল পর্যন্ত ৯২ বছর বয়েস হওয়া সত্ত্বেও কানপুর এ নিজের ক্লিনিকে মানুষের সেবায় নিয়োজিত থাকেন।.

২০০২ সালে বামপন্থী প্রার্থী হিসাবে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হন। তাঁর  জ্যেষ্ঠা কন্যা সুভাষিণী আলী প্রাক্তন সংসদ ও সিপিআইএম এর কেন্দ্রীয় নেত্রী। ২০১২ সালের ১৯ শে জুলাই তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন ও ২৩ শে  জুলাই কানপুর এ প্রয়াত হন ও তার দেহ কানপুর মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসা বিজ্ঞানের স্বার্থে দান করা হয়।

এই মুহূর্তে

আরও পড়ুন