নিজস্ব প্রতিনিধি, যশপাল সিং, ত্রিপুরা:
ত্রিপুরা রাজনীতিতে নতুন করে উত্তাপ ছড়াল মন্ত্রী রতন লাল নাথের ‘জাত’ মন্তব্যকে কেন্দ্র করে। এই বিতর্কিত মন্তব্যের প্রতিবাদে মন্ত্রী পদ থেকে রতন লাল নাথকে বরখাস্ত করার দাবি জানাল গণমুক্তি পরিষদ (GMP)। সোমবার এই দাবিতে রাজ্যপালকে একটি চিঠিও পাঠানো হয় সংগঠনের পক্ষ থেকে। মন্ত্রীর মন্তব্যের প্রতিবাদে ইতিমধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়েছে। করবুক মহকুমার ঘোড়াকাপ্পা, শিলাছড়ি, করবুক এবং চেলাগাং-সহ একাধিক এলাকায় CPIM-এর নেতৃত্বে বিক্ষোভ চলছে। এই মিছিল থেকে বিরোধী দলের নেতারা রতন লাল নাথের পদত্যাগ দাবি করেন এবং তীব্র নিন্দা জানান বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে।
আরও পড়ুন: সাঁওতাল আদিবাসী সম্প্রদায়ের সৃজন মেলার আয়োজন
এরই মধ্যে রাজ্য বিধানসভায় চলতি বাজেট অধিবেশন ঘিরে আরও একটি বিতর্ক মাথাচাড়া দিয়েছে। বিরোধী দলনেতা জীতেন চৌধুরীর বিরুদ্ধে পরিষদীয় মন্ত্রী রতন লাল নাথ যে বিশেষাধিকার ভঙ্গের নোটিশ জারি করেছেন, তা নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন জীতেন। তিনি এক সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেছেন যে, এই নোটিশের মাধ্যমে বিরোধী দলের কণ্ঠরোধের চেষ্টা করছে সরকার এবং এটি একটি ইচ্ছাকৃত রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র।
জীতেন চৌধুরী বলেন, “নোটিশটি আইনগত ভিত্তিহীন এবং বিধানসভার নিয়ম মেনে জারি হয়নি। এটি শুধু বিরোধীদের ভয় দেখানোর উদ্দেশ্যে আনা হয়েছে এবং গণতান্ত্রিক রীতিনীতিকে ক্ষুণ্ণ করছে।” তিনি আরও জানান, প্রয়োজনে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে নিয়ে যাওয়া হবে।
অন্যদিকে, রাজ্য বিধানসভায় বাজেট ভাষণে বিরোধীদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী কড়া কটাক্ষ করেন। তিনি বলেন, “কমিউনিস্টরা এখন নোটার (NOTA) সঙ্গে প্রতিযোগিতা করছে। তারা শূন্যের কোঠায় পৌঁছে গেছে।” মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্য ঘিরে বিধানসভায় ফের উত্তেজনা ছড়ায়।
বিজেপি এবং তাদের মিত্র তিপ্রা মথাকেও আক্রমণ করেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও সিপিআই(এম) পলিটব্যুরোর সদস্য মানিক সরকার। তিনি বলেন, “তিপ্রা মথা বিজেপিকে চিরদিন বাঁচাতে পারবে না। তাদের নিজের অস্তিত্বেই টান পড়তে শুরু করেছে।”
আরও পড়ুন: শিলিগুড়িতে লায়ন্স ক্লাবের ‘ফুড ফর অল’ উদ্যোগ, পথচলতি মানুষের মুখে হাসি
বিরোধী দলনেতা জীতেন চৌধুরী পরিষদীয় মন্ত্রী রতন লাল নাথের স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিশকে ‘বিধানসভার রুলস অনুযায়ী বৈধ পদ্ধতি মেনে হয়নি’ বলে অভিযোগ করেন। পাশাপাশি, ঘটনার জন্য বিধানসভার অধ্যক্ষকেই দায়ী করেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার। সব মিলিয়ে বর্তমান পরিস্থিতিতে রাজ্য রাজনীতি আরও জটিল এবং উত্তপ্ত হয়ে উঠছে।