কলকাতার পাশাপাশি জেলায় জেলায় দুর্গাপুজো কার্নিভাল করার উদ্যোগ নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এতে দুর্গোৎসবের ব্যাপকতা দেশ ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক গন্ডিতে পৌঁছেছে। শনিবার উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বারাসত-সহ বারাকপুর, বসিরহাট ও বনগাঁয় অনুষ্ঠিত হবে কার্নিভাল। আর এই আবহে বারাসাত-মধ্যমগ্রামের ঐতিহ্যবাহী কালীপুজোতেও কার্নিভালের দাবি উঠেছে। দিন কুড়ি-পঁচিশ আগে বারাসতের পুজো কমিতিগুলিকে নিয়ে আয়োজিত পুলিশ প্রশাসনের বৈঠকে দুর্গাপুজোর মতো কালীপুজো কার্নিভালের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু সিদ্ধান্ত হয়নি এখনও।
আরও পড়ুনঃ ওঁরা দিনমজুর, ‘রাবণকাটা’ উৎসবে ধরে রেখেছেন মল্লরাজাদের ঐতিহ্য
উল্লেখ্য, এপার বাংলায় এসে বসবাস করতে শুরু করা ওপার বাংলার মানুষদের হাত ধরেই অবিভক্ত ২৪ পরগনা জেলার বারাসতে শুরু হয়েছিল কালীপুজো বা শ্যামাপুজো। জেলা সদরের আদি বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, সত্তর দশকের মাঝ থেকে আশির দশকের শেষ পর্যন্ত বারাসতে বিসর্জনের সময় কালীপুজোর কার্নিভাল হত। পরবর্তীতে তা বন্ধ হয়ে যায়।
সম্প্রতি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী দুর্গাপুজোয় আর্থিক সহায়তা, বিদ্যুৎ বিলে পুজো কমিটিগুলিকে ছাড়, ফায়ার লাইসেন্স ফি মকুব ঘোষণার পাশাপাশি কলকাতা সহ জেলায় জেলায় শুরু করেছেন কার্নিভাল। যা দুর্গোৎসবকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছে। এছাড়াও জগদ্ধাত্রী পুজোর জন্য বিখ্যাত চন্দননগরেও বছর বছর ধরে হয়ে আসছে কার্নিভাল।
আরও পড়ুনঃ শ্রীরামপুরের বটতলায় এ কি কাণ্ড! ট্রাফিক ইন্সপেক্টর নেশায় চুর, লুটিয়ে পড়ছেন রাস্তায়!
এই পরিস্থিতিতে বারাসত ও মধ্যমগ্রামে বিখ্যাত কালীপুজোগুলিকে নিয়ে ঐতিহ্যের কার্নিভাল ফিরে আসুক, এমনটাই চাইছেন নাগরিকরা। বারাসতে অন্যতম ঐতিহ্যবাহী পুজো কেএনসি রেজিমেন্টের। সময়ের সঙ্গে পুজোর জৌলুস আগের তুলনায় আরও বেড়েছে। পুজোর ৫০বছর পূর্তিতে উদ্যোক্তারা বিশেষ অনুমতি নিয়ে কার্নিভাল করেছিলেন। তাঁরাও চাইছেন, কালীপুজোয় চালু হোক কার্নিভাল। এই পুজোর অন্যতম প্রধান উদ্যোক্তা তথা বারাসত পুরসভার চেয়ারম্যান মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, “কালীপুজো নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠকে আমি কার্নিভালের প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কিন্তু সদুত্তর মেলেনি। বারাসতবাসী হিসাবে আমিও কার্নিভাল নিয়ে আশাবাদী।”
বারাসতের আরেকটি জাঁকজমকপূর্ণ কালীপুজো নবপল্লির ‘আমরা সবাই ক্লাবে’র। এই পুজোর প্রধান উদ্যোক্তা অরুণ ভৌমিক বারাসত পুরসভার চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল (পূর্ত)। তিনিও কার্নিভালের পক্ষে। তাঁর বক্তব্য, “আমরা, উদ্যোক্তারা প্রশাসনের নিয়ম মেনে কালীপুজো করি। চেয়ারম্যানের নির্দেশে পুরসভাও সবরকম সহযোগিতা করে। বারাসতবাসী হিসাবে আমিও চাইব, কার্নিভাল হোক। তাতে পুজো কমিটি, পুরসভা সকলেই সহযোগিতা করবে।” মধ্যমগ্রাম পুরসভার চেয়ারম্যান নিমাই ঘোষও কার্নিভালের প্রসঙ্গে একমত। তিনি জানিয়েছেন, “মধ্যমগ্রামে ছোটবড় মিলিয়ে ৬০-৭০টি কালীপুজো। তাদের নিয়ে কার্নিভাল করলে তো ভালোই হয়। তাতে পুরসভার যা যা সহযোগিতা দরকার, করা হবে।”