মহালয়ার ভোর মানেই বেতারে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠে ‘মহিষাসুরমর্দিনী’। শরতের এই অনন্য অনুভূতির জন্য বছরভর অপেক্ষা করেন মানুষ। তাই পুজোর আগে পুরনো রেডিও সারাতে কলকাতা থেকে জেলা—ভিড় জমছে ইলেকট্রিক যন্ত্রাংশ মেরামতের দোকানে।
আরও পড়ুনঃ বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে, সঙ্গে বজ্রপাত
তবে কারিগরদের আক্ষেপ, ভিড় আগের মতো নেই। মুর্শিদাবাদের এক বৈদ্যুতিক মিস্ত্রি বললেন, “১০ দিন আগে থেকেই অনেকে রেডিও নিয়ে আসছেন। আগে যেখানে ৪০-৫০টা রেডিও সারাতাম, এ বছর মাত্র ১০টা করেছি। মোবাইলের যুগে রেডিওর শ্রোতা অনেক কমে গিয়েছে।”
কলকাতার এক প্রবীণ রেডিও ব্যবসায়ীদের কথায়, একসময় মহালয়ার আগে নতুন রেডিও কিনতে দোকানে হুড়োহুড়ি পড়ত। পুরনো রেডিও সারাতে আসত অজস্র মানুষ। এখন হাতে গোনা কয়েকজন ক্রেতা।
প্রবীণরা বলছেন, ১৯৩১ সাল থেকে রেডিওতে বাজছে ‘মহিষাসুরমর্দিনী’। এক গ্রামে হয়তো একটি রেডিও থাকত, আর ভোরবেলা সেই রেডিও ঘিরে বসে পড়তেন সকলে। আজ টিভি, মোবাইলের দুনিয়া হলেও শরতের ভোরে রেডিওয়েই মহালয়া শুনতে চান বহু মানুষ।
আরও পড়ুনঃ পুজোর দিনগুলোতে প্রেম থেকে পার্টনারশিপ, সম্পর্ক গাঢ় করার রসায়ন
এক তরুণীর কথায়, “আমাদের অনেকেরই ছোটবেলার অভ্যেস রেডিওতে মহালয়া শোনা। ইউটিউবেও শোনা যায় ঠিকই, কিন্তু রেডিওর মতো অনুভূতি নেই।”
এক গৃহবধূ হাসতে হাসতে বললেন, “বর্ষার রাতে বা শীতের দুপুরে ইউটিউব চালিয়ে মহালয়া শোনা যায়। কিন্তু শরতের ভোরে রেডিওতে দেবীবন্দনা শোনার আনন্দ অন্য রকম। তাই পুরনো রেডিওটা আবার সারাতে দিলাম।”
সময় বদলেছে, প্রযুক্তি পাল্টেছে। তবু মহালয়ার ভোরে রেডিও চালিয়ে ‘আশ্বিনের শারদ প্রাতে…’ শোনার আনন্দ আজও বাঙালির কাছে অমলিন।