নিজস্ব প্রতিনি, যশপাল সিং, ত্রিপুরা:
চৈত্র মাসের রিডাকশন সেলের ব্যস্ত বাজার এবং মায়ের অসাবধানতায় হারিয়ে গিয়েছিল এক ফুটফুটে শিশু। ঘটনাটি ঘটে আগরতলার শকুন্তলা রোডের মেট্রো বাজারের সামনে ২৮ মার্চ ২০২৫ তারিখে। শিশুটি হারিয়ে যাওয়ার পর, তার কান্নাভরা মুখের ছবি ও বিবরণ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়। হাজার হাজার সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী শিশুটির অভিভাবকদের কাছে খবরটি পৌঁছে দেওয়ার জন্য পোস্ট শেয়ার করতে থাকেন।
আরও পড়ুন: ব্যাপক চাঞ্চল্য বাঁকুড়ায়, নর্দমা থেকে উদ্ধার সদ্যোজাতর দেহ
সোশ্যাল মিডিয়ার শুভবুদ্ধিসম্পন্ন ব্যবহারকারীরা শিশুটির ছবিসহ আবেদনের পোস্ট শেয়ার করে মুহূর্তেই ভাইরাল করে তোলেন। এরই মাধ্যমে শিশুটির মাতা-পিতার কাছে খবরটি পৌঁছায় এবং দ্রুত তাঁরা পশ্চিম থানায় এসে নিজেদের সন্তানের সন্ধান পান। শিশুটির নিরাপদ প্রত্যাবর্তনে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন সবাই।
যদিও শিশুটিকে উদ্ধার করে পশ্চিম থানার ওসি নিজেদের হেফাজতে নেন এবং পরে অভিভাবকদের হাতে তুলে দেন, কিন্তু পরবর্তীতে তিনি সংবাদমাধ্যম ডেকে সমগ্র কৃতিত্বটি নিজের ও পুলিশের ঘাড়ে চাপিয়ে দেন। সোশ্যাল মিডিয়ার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা এবং ব্যবহারকারীদের আন্তরিক প্রচেষ্টা সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষা করেন তিনি। বরং তিনি সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের সতর্ক করে বলেন, ‘এধরনের খবর সোশ্যাল মিডিয়া থেকে ডিলিট করুন’।
আরও পড়ুন: গোষ্ঠী হিংসায় থমথমে মোথাবাড়ি, বন্ধ ইন্টারনেট, গুজব না ছড়াতে আবেদন পুলিশের
এ ধরনের আচরণে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীরা হতাশ এবং ক্ষুব্ধ। কারণ তাঁদের প্রচেষ্টার ফলেই শিশুটি হারিয়ে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মায়ের কোল ফিরে পেয়েছে। ত্রিপুরায় এ ধরনের বহু ঘটনা অতীতে ঘটেছে, যেখানে হারানো মানুষ কিংবা জিনিস সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ফিরে এসেছে। কিন্তু এবার পুলিশের এই ‘কান্ডজ্ঞানহীন’ আচরণ এবং সমস্ত ক্রেডিট আত্মসাৎ করার প্রচেষ্টা মানুষের মনে হতাশা এবং ক্ষোভের সঞ্চার করেছে। তবে এই ঘটনা আবারও প্রমাণ করলো, ডিজিটাল যুগে সোশ্যাল মিডিয়া শুধুমাত্র বিনোদনের মাধ্যম নয়, বরং জরুরি পরিস্থিতিতে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হতে পারে।
সে যাইহোক অবশেষে, শিশুটির মায়ের কোলে ফিরে আসায় সবাই স্বস্তি পেলেও, সোশ্যাল মিডিয়ার ভূমিকাকে অস্বীকার করা নিয়ে মানুষের মধ্যে প্রশ্ন থেকেই গেল। মানুষ বলছেন, “সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের সম্মান দেওয়া উচিত ছিল,” কারণ তাঁদের উদ্যোগেই শিশুটি নিরাপদে পরিবারের কাছে ফিরেছে।
হ্যাঁ, অবশ্যই একটা স্যালুট পাবার যোগ্য ঐ টিএসআর জওয়ান, যিনি শিশুটিকে বুক আগলে রেখেছিলেন শেষ অবধি। যতক্ষণ না বাচ্চাটি তার মায়ের কোলে ফিরে যাচ্ছে। তাই উনার এই অবদান নিশ্চয়ই ঐ মাও কোনোদিন ভুলবেন না।