বনগাঁ লোকাল! নামটাই নিত্যযাত্রীদের কাছে যথেষ্ট! শুনলেই মনে আতঙ্ক। সক্কলের মুখে এক কথা যা ভিড়! কিন্তু শুক্রবার সকালটা বনগাঁ লোকালের যাত্রীদের জন্য ছিল অন্যরকম। চালু হয় শিয়ালদহ-বনগাঁ এসি লোকাল। যা একেবারে হাতে চাঁদ পাওয়ার মতো। সেই চাঁদেই যেন লাগল গ্রহণ! দুদিন যেতে না যেতেই বনগাঁ এসি লোকালের যাত্রীরা বলতে শুরু করলেন, এর থেকে তো জেনারেল ট্রেনই ভাল! কিন্তু কেন এই অবস্থা?
আরও পড়ুনঃ সমুদ্রের তলায় ভয়ঙ্কর ‘বিপর্যয়’, বিশ্বজুড়ে ব্যাহত ইন্টারনেট পরিষেবা
হাবড়ার বাসিন্দা সৌভিক মজুমদার। হাবড়া টু বিধাননগর তাঁর রোজ যাতায়াত। আট ঘণ্টার শিফট, তারপর অটো-বাসে বিধাননগর, সেখান থেকে ট্রেনে হাবড়া! বনগাঁ লোকালই বেশি ধরতেন। এসি বনগাঁ লোকাল চালু হওয়ার পর ভেবেছিলেন যাক, এবার ট্রেনের যাতায়াত খানিকটা স্বস্তির হবে। সোমবার সকালে হাবড়া থেকেই বনগাঁ এসি লোকালে ওঠেন। কিন্তু উঠেই প্রায় ভিড়মি খাওয়ার জোগাড়। এসি লোকাল নাকি জেনারেল ট্রেন! তিল ধারনের জায়গা নেই। সিট তো ছাড়ুন, ঠাসাঠাসি ভিড়ে দমবন্ধ অবস্থা। এমনিতেই এই ভয় ছিল, যদি এসি লোকালে ভিড় হয় তাহলে একটা সাফোকেটেড অবস্থা তৈরি হবে! আর সেটাই হল। হাবড়া থেকে সৌভিক উঠে গেটের কাছেই ভিড়ে আটকে যান।
সকাল ৭টা ৪২ মিনিটে শিয়ালদহের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে এসি লোকাল। বনগাঁ এসি লোকাল দাঁড়াচ্ছে গোবরডাঙা, ঠাকুরনগর, হাবড়া, দত্তপুকুর, মধ্য়মগ্রাম, ক্যান্টনমেন্ট, আর তারপর থেকে সব স্টেশন। সৌভিক হাবড়া থেকে ওঠেন। তার মানে আগে বনগাঁ, গোবরডাঙা, ঠাকুরনগর তিনটে স্টেশন থেকেই যে পরিমাণ লোক উঠেছে, তাতে পরিস্থিতি মারাত্মক। শিয়ালদহ থেকে হাবড়া পর্যন্ত এসি লোকালের ভাড়া ৯০ টাকা। বনগাঁ পর্যন্ত ১২৪ টাকার আশপাশে। যাত্রীরা প্রথমে বলছিলেন, ভাড়া একটু কম হলে, সব ধরনের যাত্রীরাই যাতায়াত করতে পারতেন। কিন্তু এই ভাড়াতেই যা ভিড়, তাতে অবশ্য এখন যাত্রীরা আর বিশেষ কিছু বলছেন না।
আরও পড়ুনঃ সাতসকালে ফের বিভ্রাট; ব্যস্ত সময়ে আবার ভোগান্তির মুখে মেট্রোযাত্রীরা
সৌভিক ছাড়াও আরেক যাত্রী বললেন, “এসি- ঠিকঠাকই কাজ করছে। কিন্তু ভিড় তো মারাত্মক, স্বাভাবিকভাবেই একটু দমবন্ধ তো লাগেই। তার থেকে ট্রেন ভিড় হলে জেনারেল ট্রেনেই যাওয়া ভাল। এতটাকা দিয়েই যখন যাব, তখন তো একটু আরামেই যাব।” আরেক যাত্রী বললেন, “আসলে কলকাতার দিয়ে আসার অনেক জায়গা থেকেই শাটল চলে, আমাদের এদিন থেকে সেভাবে শাটল চলে না। ফলে ট্রেনেই ভিড়। এবার ট্রেন যদি এসি হল, ৯০-১০০ টাকা খরচ করে লোকে চলেই যাচ্ছে আরামে। কিন্তু এরকম ভিড় হলে তো ট্রেন বাড়াতে হবে।” তবে এটাও ঠিক, ডাউন এসি লোকালেই বেশি ভিড় হচ্ছে, বিকালের আপ এসি লোকালে সেরকম একটা ভিড় হচ্ছে না, বলছেন যাত্রীরাই।