গাজার মাটির নিচে সারি, সারি টানেল। টানেলে অস্ত্রভান্ডার। সেখান থেকেই দীর্ঘমেয়াদি লড়াই চালানোর ব্যবস্থা। গাজায় ঢোকার পর টানেলের জঙ্গল দেখে কিছুটা থমকে গিয়েছিল ইজরায়েলি সেনাও। এবার কি পাক-অধিকৃত কাশ্মীরেও গাজার ঢংয়েই টানেল তৈরি হবে?
আরও পড়ুন: Kolkata: ডিজিট্যাল নজরদারি? সরকারি বাস বেলাগাম? নজরদারিতে নয়া অ্যাপ
প্রশ্ন উঠছে কারণ, এই প্রথমবার পাক অধিকৃত কাশ্মীরে পা দিয়েছে হামাস। কাশ্মীর সংহতি দিবস উপলক্ষে সেখানে চলছে টেররিস্ট কনফারেন্স। হাজির পাকপন্থী ২৯টা জঙ্গি সংগঠন। সম্মেলনে যোগ দেন খালেদ কোয়াদামি। ইনি হামাসের আন্তর্জাতিক শাখার বড় নেতা। গাজাতেই জন্ম। এখন কাতারে থাকেন। গাজায় শান্তি আলোচনার শরিক ছিলেন। হামাসের পত্রিকা ফতে-আরা-র এডিটর হিসাবেও কাজ করেন। সেই খালেদকে পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে দেখে অনেকেই চমকে গিয়েছেন।
এক পাকিস্তানি ইউটিউবার প্রথম তাঁর POK সফরের খবর দিয়েছিলেন। পরে পাকিস্তানের নানা সংবাদমাধ্যমেও এ খবর বেরিয়েছে। পাক জঙ্গি সংগঠন হিজবুল বা লস্করের সঙ্গে হামাসের যোগাযোগের কথা এতদিন প্রকাশ্যে আসেনি। হামাস কোনওদিন গাজার বাইরে অন্য কোনও ইস্যুতে উত্সাহ দেখায়নি। কাশ্মীর নিয়ে তো নয়ই। বর্তমান পরিস্থিতিতে কি তাদের অবস্থান পাল্টাচ্ছে? প্রশ্নটা উঠছে।
আরও পড়ুন: Barasat CPI(M): জেলা কমিটি ছাড়াই সিপিএমের সম্মেলন; এড়ানো গেল না ভোটাভুটি
গোয়েন্দাদের কাছে খবর উপত্যকায় নতুন করে জঙ্গি নেটওয়ার্ক চাঙ্গা করার চেষ্টা করছে পাকিস্তান। ওদিক থেকে অনুপ্রবেশের চেষ্টাও বেড়ে গিয়েছে। গত বৃহস্পতিবার ভারতে ঢুকতে গিয়ে ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে ২ জঙ্গির মৃত্যু হয়। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন হামাসকে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে টেনে আনার দুটো কারণ হতে পারে। এক হামাসের মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্য থেকে অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আসা। প্রথমদিন থেকে গাজা যুদ্ধ কভার করছেন টাইমস অফ ইজরায়েলের সাংবাদিক ইয়াহুদ লাবিভ। একটা রিপোর্টে তিনি লেখেন, আইডিএফ গাজা থেকে যে বিপুল অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করেছে, তার চারগুণ অস্ত্র আছে হামাসের ভাঁড়ারে। হয়ত এসব অস্ত্রের একটা অংশ পেতে চাইছে হিজবুল, লস্করের মতো সংগঠন। দুই, সন্ত্রাসের পরিকাঠামো পোক্ত করতে টানেল কিংবা আন্ডার গ্রাউন্ড বাঙ্কার তৈরি করা।
গত কয়েকমাসে দিল্লি পাক অকুপায়েড কাশ্মীর নিয়ে একাধিকবার হুঁশিয়ারি দিয়েছে। ১৪ জানুয়ারি প্রতিরক্ষামন্ত্রীও কাশ্মীরে দাঁড়িয়েই বলেছেন, পাক অধিকৃত কাশ্মীর ভারতেরই অংশ। আমরা সঠিক সময়ে আমাদের এলাকা ফেরত নেব। হতে পারে, এইসব নিয়ে কাশ্মীরি জঙ্গি নেতাদের মধ্যে একটা উদ্বেগ রয়েছে। তাই তড়িঘড়ি হামাসকে কাশ্মীরে ডেকে আনা হয়েছে। এর মধ্যে কোনটা ঠিক বলা মুশকিল। তবে, কাশ্মীর নিয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে ভারত বিরোধী ষড়যন্ত্র আগেও ছিল। এখনও আছে। ভবিষ্যতেও থাকবে।