রাজ্য সরকার বা শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ মানেই কুকথা শুনতে হবে পুলিশকে – এটাই যেন সাধারণ ব্যাপার হয়ে গেছে। সদ্য আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে যে নবান্ন অভিযান হল সেখানেও দেখা গেছে একই চিত্র। মার খেতে হয়েছে পুলিশকে, অশ্লীল ভাষা প্রয়োগ করা হয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে। তারই প্রতিবাদে মঙ্গলবার পথে নেমেছিলেন পুলিশ পরিবারের সদস্যদের একাংশ। সাংবাদিক বৈঠকও করেন তাঁরা।
পুলিশ পরিবারের সদস্যদের মূল অভিযোগ, যারা সমাজের রক্ষক তাদেরকেই সবসময় আক্রমণ করা হচ্ছে। উচিত-অনুচিত কিছু না ভেবেই কুরুচিকর কথা বলা হচ্ছে তাদের উদ্দেশে। আর এতে শুধু পুলিশকর্মীরাই নন, ভুক্তভোগী হতে হচ্ছে পরিবারের সদস্যদেরও। বাড়ির মহিলা, বয়স্ক, এমনকী শিশুরাও মানসিকভাবে আক্রান্ত হচ্ছেন বলে দাবি তাদের। আর এই ইস্যুতে মূলত বিরোধী রাজনৈতিক দল এবং রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে ‘দায়ী’ করেছেন তাঁরা।
আরও পড়ুনঃ প্রয়াত বাসন্তী চট্টোপাধ্যায়! দীর্ঘ অসুস্থতার পর উত্তর কলকাতায় নিজের বাড়িতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ
সাংবাদিক বৈঠক থেকে প্রতিবাদী পুলিশকর্মীর পরিবারের সদস্যরা বলেন, বারবার তাদের অশালীনভাবে আক্রমণ করা হচ্ছে। গালিগালাজ থেকে শুরু করে নোংরা কথা বলা হচ্ছে। পুলিশদের তো বটেই, তাঁদের মতো পরিবারের সদস্যদেরও ছাড়া হচ্ছে না। তাঁদের সাফ কথা, পুলিশেরও বাড়িতে মা, বোন, স্ত্রী, সন্তানরা আছে। এইসব ঘটনা তাদের ওপর বড় প্রভাব ফেলছে।
এক্ষেত্রে তাঁদের নিশানায় রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বক্তব্য, তাঁর উপস্থিতিতে একাধিকবার এমন ঘটনা ঘটেছে। তিনিই কার্যত উস্কানি দিয়ে এসব করাচ্ছেন। এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে পুলিশের উদ্দেশে কী কী বলা হয় সেই সংক্রান্ত পোস্টারও দেখান প্রতিবাদীরা। তবে অনুব্রত মণ্ডলের বিষয় উঠে আসলেই মেজাজ হারান তাঁরা।
আরও পড়ুনঃ দেশজুড়ে প্রস্তুতি, নাইট কার্ফু; ফের কি বড়ো কোনও অ্যাকশনে সেনা!
রাজনৈতিক দল এবং বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে পুলিশকে উদ্দেশ করে কু-কথার প্রতিবাদ জানাতে এসে অনুব্রত মণ্ডল-প্রশ্নে মেজাজ হারান পুলিশকর্মীর পরিবারের সদস্যেরা। কার্যত সাংবাদিক সম্মেলন শেষ না করে বাইরে বেরিয়ে যান তাঁরা। অকথ্য ও অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ এবং ব্যক্তিগত আক্রমণ করার জন্য বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে কেন আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তাঁরা। যদিও এরপর অনুব্রতের কুকথা নিয়ে প্রশ্ন করতেই মেজাজ হারান।
কয়েক সপ্তাহ আগেই পুলিশ অফিসারকে কুকথা বলে সংবাদ শিরোনামে এসেছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। বীরভূমের আইসি-কে মা-বোন তুলে গালিগালাজ করেছিলেন তিনি। সেই অডিও ভাইরাল হওয়ার পর তীব্র বিতর্ক হয়। সেই সময় কেন পুলিশ-পরিবার সরব হয়নি সেই প্রশ্ন ওঠে এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে। সেই প্রেক্ষিতেই কার্যত মেজাজ হারিয়ে সদস্যরা বলেন, তাঁরা তখনও প্রতিবাদ করেছিলেন। তবে অনুব্রত মণ্ডল সঙ্গে সঙ্গেই ক্ষমা চেয়ে নেন এবং তাঁর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছে।