বাংলায় এবার বৃষ্টির মরশুম শেষই হচ্ছে না। সেপ্টেম্বরেও বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। আর বৃষ্টির সঙ্গে ইলিশ যেন বাঙালির কাছে সমার্থক। সামনেই আছে রান্না-পুজো। আর এই উৎসবে বাঙালীর পাতে ইলিশ বাধ্যতামূলক। এবার ভরা বর্ষাতেও এবারে এ রাজ্যে ইলিশের উৎপাদন কম হয়েছে, বাংলাদেশ সরকারও এখনও পর্যন্ত এ দেশে পাঠায়নি পদ্মার ইলিশ। তাই ঘাটতি পূরণে এবারে বাংলার ভরসা গুজরাট।
মোদীর রাজ্য থেকে ইলিশ আসছে রাজ্যে। এবার গুজরাট থেকে রেকর্ড পরিমাণ ইলিশ আমদানি করেছেন হাওড়ার পাইকারি মাছ বাজারের ব্যবসায়ীরা। এই পাইকারি বাজার থেকেই বিভিন্ন খুচরো বাজারে সরবরাহ হয় ‘রূপালী শস্য’। এ বছর কাকদ্বীপ, ডায়মন্ড হারবার, দিঘা, শঙ্করপুর সহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ইলিশের যোগান কম।
আরও পড়ুনঃ বড় ‘নির্দেশ’ দিল্লির! আপাতত স্থগিত মোদির সব বঙ্গ সফর
তবে এবারের ছবিটা একেবারে আলাদা। ওইসব জায়গা গুলোয় মাছের উৎপাদন কম হওয়ায় সেভাবে আর ইলিশের ট্রাক আসছে না। তার বদলে ইলিশ মাছ সরাসরি আসছে গুজরাটের ভারুচ থেকে। প্রতিদিন গড়ে ১৫০ থেকে ২০০ মেট্রিক টন ইলিশ ভর্তি বিশেষ ট্রাক ঢুকছে হাওড়ার পাইকারি মাছ বাজারে।
ফিস ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি সৈয়দ আনোয়ার মাকসুদ বলেন, “এ বছরে রেকর্ড পরিমাণ গুজরাটের ইলিশ আমদানি করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ৪৫০০ মেট্রিক টন ইলিশ আমদানি করা হয়েছে, যা হাওড়া ছাড়াও কলকাতার সবকটি বড় বড় বাজারে সরবরাহ করা হচ্ছে। যেহেতু এই ইলিশের স্বাদ খুব ভাল, দামও কম, সেই কারণে সাধারণ ক্রেতার কাছে এর চাহিদা বেশি।”
আরও পড়ুনঃ চিত্তরঞ্জনে তুলকালাম, ১৭ ঘণ্টা অবরোধ! লাঠিচার্জ পুলিশের
জানা গিয়েছে, ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছ পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকা প্রতি কেজি দরে। ৯০০ থেকে ১১০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১০০০ থেকে ১১০০ টাকা কেজি দরে। সেই মাছ খুচরো বাজারে কেজি প্রতি ১৩০০ থেকে ১৫০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এই বাজার থেকেই কলকাতার শিয়ালদা, মানিকতলা, লেক মার্কেট, দমদম, গড়িয়াহাট, সল্টলেক, বেহালা সহ সবকটি বড় বড় বাজারে মাছ যাচ্ছে।
আনোয়ার মাকসুদ আরও জানান গুজরাটের ইলিশের যোগান কয়েকদিনের মধ্যেই কমে যাবে। তাই আশঙ্কা রয়েছে, রান্না পুজোর জন্য ইলিশ পাওয়া দুষ্কর হয়ে উঠবে। আর দামও হবে অনেক বেশি। এখন একমাত্র ভরসা যদি তাড়াতাড়ি পদ্মার ইলিশ আসে এ রাজ্যে। এই বিষয়ে বাংলাদেশ হাই কমিশনের সঙ্গে কথা চলছে প্রতিনিয়ত। ব্যবসায়ীরা আশায় আছেন, খুব শীঘ্রই বাংলাদেশ মাছ পাঠানোর অনুমতি দেবে।