কলকাতার ঐতিহ্য ও নস্ট্যালজিয়া উপভোগ করতে গড়ের মাঠ চত্বরে ঘোড়ার গাড়ি করে ঘোরেননি, এমন শহরপ্রেমী কমই আছেন। তবে ঘোড়াগুলির যে তেমন যত্ন হয় না, এই নিয়ে অভিযোগ বহুদিনেরই। ঘোড়ামালিকদের পাল্টা দাবি, রোজগারই নেই, ঘোড়ার প্রতিপালন হবে কী করে।
এবার সেই কলকাতার রাস্তাতেই রোদে হাঁসফাঁস করতে করতে লুটিয়ে পড়ে গেল এক শীর্ণ, ক্লান্ত ঘোড়া! এর পরেই ভাইরাল হয়ে যায় এই ঘটনার ভিডিও। তার ভিত্তিতে ঘোড়ার মালিকের বিরুদ্ধে রুজু হয়েছে মামলাও। গলা তুলেছে বিভিন্ন পশুপ্রেমী সংগঠন।
ওই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, হিটস্ট্রোকে অচেতন হয়ে পড়ে থাকা ঘোড়াটিকে বারবার মারছেন এবং জোর করে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন তার চালক। এই মর্মান্তিক দৃশ্য ছড়িয়ে পড়তেই ক্ষোভে ফেটে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। ভিডিওটি শেয়ার করেছে প্রাণী অধিকার সংস্থা পেটা ইন্ডিয়া। যদিও ভিডিওর উৎস ও সত্যতা খতিয়ে দেখেনি ‘বঙ্গবার্তা’।
পেটা জানিয়েছে, ‘যে ঘোড়াগুলি অতিরিক্ত দুর্বল, জল ও খাবারের অভাবে কষ্ট পাচ্ছে, তারা কোনও বিনোদনের আকর্ষণ হতে পারে না।’ তারা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, পশুসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী স্বপন দেবনাথ ও কলকাতা পুলিশের উদ্দেশে অনুরোধ জানিয়েছে, নির্যাতিত ঘোড়াটিকে উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয়ে পাঠানোর এবং ঘোড়ার গাড়ির বদলে ইলেকট্রিক যান চালুর ব্যবস্থা করার জন্য।
আরও পড়ুন: বৈশাখ শুক্লা পঞ্চমীতে সর্বার্থ সিদ্ধি যোগ, সফলতার শিখরে এই চার রাশি
ঘটনাটির প্রতিক্রিয়ায় অভিনেত্রী পূজা ভাটও এক টুইটে লিখেছেন, ‘হৃদয়বিদারক! ঘোড়াটিকে রাস্তায় টেনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে কড়া রোদ ও প্রবল ক্লান্তির মধ্যে। অবিলম্বে এই নির্মম ঘোড়ার গাড়ির ব্যবহার নিষিদ্ধ করুন।’
ঘটনার ভিডিও ঘিরে সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়াও তীব্র। কেউ লিখেছেন, ‘এরা কি আদৌ খাওয়াচ্ছে ঘোড়াগুলোকে?’ আবার কেউ লিখেছেন, ‘নির্মমতা সহ্য করা যায় না! এমন চালকদের শাস্তি হওয়া উচিত।’
অভিযোগের ভিত্তিতে কলকাতা পুলিশ জানিয়েছে, ভবানীপুর থানায় ভারতীয় পশু নিষ্ঠুরতা প্রতিরোধ আইন অনুযায়ী একটি মামলা হয়েছে। অভিযুক্ত চালকের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, বর্তমানে ঘোড়াটি চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে এবং নিয়মিত পশু চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে রয়েছে। এর পরেই পেটা পুলিশ প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়ে একটি পোস্ট লেখে।